1. sparkleit.bd@gmail.com : K. A. Rahim Sablu : K. A. Rahim Sablu
  2. diponnews76@gmail.com : Debabrata Dipon : Debabrata Dipon
  3. admin@banglanews24ny.com : Mahmudur : Mahmudur Rahman
  4. mahmudbx@gmail.com : Monwar Chaudhury : Monwar Chaudhury
অযত্নে বৃটিশ আমলে নির্মিত শান্তিগঞ্জের ঐতিহাসিক ডাকবাংলো
বুধবার, ৩১ মে ২০২৩, ০৯:৫৯ পূর্বাহ্ন




অযত্নে বৃটিশ আমলে নির্মিত শান্তিগঞ্জের ঐতিহাসিক ডাকবাংলো

শান্তিগঞ্জ(সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
    আপডেট : ২৭ মার্চ ২০২৩, ৭:৫০:৫০ অপরাহ্ন

পরাধীন বৃটিশ আমল, বৈষম্যের পাকিস্তান আমল, সর্বশেষ স্বাধীন সার্বোভৌম বাংলাদেশ তিন আমলের জলজ্যান্ত সাক্ষ্য বহন করছে সুনামগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলাবাজার ডাকবাংলো। এই ডাকবাংলো বসে আঁকা হয়েছে রাজনীতির উত্তানপতনের দৃশ্যপট। বাংলোর আঙ্গিনা, বারান্দা, মেঝে আর বিশ্রামাগারে পদচারণ হয়েছিল কত গুণীজনের। বিবর্তনের পরিক্রমায় এখন সেগুলো শুধু গল্প। পৃষ্ঠপোষকতা আর উন্নয়নের অভাবে জৌলুশ হারিয়ে নিশ্চিহ্নের পথে কালজয়ী স্থাপনাটি। বৃটিশ শাসন আমলে আনুমানিক ১ একর জায়গার উপর প্রতিষ্ঠিত এ বাংলোরটি রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ডাস্টবিন আর ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। অঘোষিত একটা পাবলিক টয়লেট বললেও ভুল হবে না। এদিকে সড়ক ও জনপথ বিভাগেরও চোখ নেই বাংলোর দিকে, তাই আঁধারে থেকেই যাচ্ছে কালের সাক্ষী এই সরকারি ডাকবাংলোটি।

শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাগলা বাজারে মূল কেন্দ্রে অবস্থিত সরকারি ডাকবাংলো শত বছরের ঐতিহ্যকে জলাঞ্জলি দিয়ে আজ হারিয়ে যেতে বসেছে কালের বিবর্তনে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আপন ঐতিহ্যের গড়িমায় উদ্ভাসিত এ বাংলোটি কিছুক্ষণের জন্য হলেও তার বুক পেতে নিয়েছিল বরেণ্য কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক এমনকি রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গকে। দেশের বর্তমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া,সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদ,পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ এই ডাকবাংলো বিশ্রাম নিয়েছেন। করেছেন সভা সমবেশ। এছাড়াও বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিম, প্রয়াত রাজনীতিক, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদ, সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, কৃষক-শ্রমিক-জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, সহ অনেক জ্ঞাণী-গুণী ব্যক্তিবর্গের সেকেন্ড-মিনিট-ঘন্টার আশ্রয়স্থল এ বাংলো। তবে সরকারী এ স¤পদ আজ পরিচর্চার অভাবে সৌন্দর্যহীন হয়ে পড়েছে। মেহগনি, সেগুণ, জাম আর অর্ধশত বছরের পুরনো বিশালাকার দুটি রেইন্ট্রি গাছ শুধু ডাক বাংলোকেই নয় সারা বাজারকেই বৃষ্টি, ঝড়, জলোচ্ছাস থেকে ছাতার মত আগলে রেখেছে। সারাদিনের কর্মব্যস্ততা শেষে যখন সন্ধ্যা নামে সারা বাজার বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হলেও বিদ্যুতের আলো জ্বলে না ডাক বাংলো প্রাঙ্গনে। ফলে সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে পাল্টে যায় তার দৃশ্যপট। অন্ধকারে ডুবে যায় ডাকবাংলো প্রাঙ্গণ। প্রাচীন এ স্থাপনাটি সুনামগঞ্জ জেলা সড়ক ও জনপথের দায়িত্বে থাকলেও এদিকে যেন ভ্রুক্ষেপ করার সময় নেই তাঁদের। সময়ের পালাবদলের সাথে সাথে নেতৃত্বও পাল্টে। নির্বাচনী ইশতেহারও আসে শত শত। তবে কারো মুখে কোন দিন-ই ডাক বাংলো উন্নয়নের কথা শুনিনি। কোন কোন সময় স্থানীয় যুবকদের বিনোদের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠে এ ডাক বাংলো। তাদের হাত ধরে সামনের দিকটা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হলেও আঁধার ও নোংরামি ঢেকে রাখে পেচনের দিকটা। কোনো কোনো শীতে যদিও রাতের আঁধারে আলো জ্বলে ব্যাডমিন্টন কিংবা ফুটবল খেলার সময় তবে তা ক্ষণিকের জন্যই। ডাকবাংলোর বর্তমান অবস্থা দেখে এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। অনেকে ক্ষোভের সাথে সংশয় প্রকাশ করে বলেন, এখনি যদি এটি রক্ষার কোন কার্যকরী প্রদক্ষেপ না নেওয়া হয় অদূর ভবিষ্যতে ভূমি খেকোদের পেটস্ত হতে পারে সরকারী এ স¤পদ। বাংলোটিকে যেনো সরকারীভাবে একটু সৌন্দর্য বর্ধন করা হয়।এ ব্যাপারে সমাজকর্মী আজাদ হোসেন বলেন, পাগলা বাজারের এ ঐতিহ্যবাহী স্থাপনার সঠিক রক্ষনাবেক্ষণের ব্যবস্থা করা উচিত। সবার আগে যেটার প্রয়োজন তা হচ্ছে, চারপাশে নোংরা আবর্জনায় ভরা। এগুলো পরিষ্কার করে দৃষ্টি নন্দন করা। কেউ যেনো প্রস্রাব-পায়খানা না করে তার জন্য একটি ভাল গেইট করে রাখা।

পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও সমাজকর্মী রেজাউল আলম নিক্কু বলেন, পাগলাবাজার ডাক বাংলো একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা। এখানে অনেক বড় বড় জনসভা ও সমাবেশ হয়েছিল। বর্তমানে এর অবস্থা বেহাল। এটার সংস্কার জরুরি। সুনামগঞ্জ জেলা সড়ক ও জনপথের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলাম প্রামানিক বলেন, স্বল্প পরিমাণে আমাদেরকে মেরামতের বরাদ্দ দেয়া হয়।

এ বরাদ্দ থেকে অন্যান্য উপজেলায় কাজ করি। তারপরও অর্থের স্বল্পতা দেখা দেয়। পাগলা বাজারের সরকারি ডাকবাংলো দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার করা হয়নি। তবে পর্যাপ্ত পরিমাণে বরাদ্দ পেলে বাংলোর সংস্কার ও সৌন্দর্য রক্ষায় কাজ করতে পারব। শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. ফারুক আহমেদ বলেন, এ ডাকবাংলো একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা। বৃটিশ আমল থেকে শুরু করে বিভিন্ন সময়ে অনেক রথীমহারথীরা এখানে এসেছেন। এর সৌন্দর্য রক্ষা করা অত্যন্ত জরুরি। এ বিষয়ে আমরা বারবার সড়ক ও জনপথ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আশাকরি তাদের যথাযথ পদক্ষেপে এই সরকারি বাংলো আবারও প্রাণ ফিরে পাবে।




খবরটি এখনই ছড়িয়ে দিন

এই বিভাগের আরো সংবাদ







Copyright © Bangla News 24 NY. 2020