সকাল থেকে বৃষ্টি চলছে থেমে থেমে। এর আগে শুক্রবার (১৩ মে) সকাল থেকেই বৃষ্টি ছিল মুষলধারে। শনিবারও বৃষ্টিপাতের ফলে সিলেট নগরীর বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। নগরের বিভিন্ন পাড়া–মহল্লার বাসাবাড়িতেও পানি প্রবেশের খবরও পাওয়া গেছে। এ ছাড়া খাল ও ছড়াগুলোতে পানি উপচে পড়ার মতো অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। পানি বৃদ্ধি পেয়েছে সিলেট শহরের বুক চিড়ে বয়ে যাওয়া সুরমা নদীর।
শনিবার বেলা সাড়ে ১০ টায় নগরীর সুবিদবাজার ও আলীয়ামাদরাসা সংলগ্ন স্থানে দেখা গেল রাস্তায় হাটুঁজল পর্যন্ত পানি। এর ফলে ভোগান্তির কবলে পড়েছেন পথচারীরা। সুবিদবাজারে হাটুঁজল পানি পরিদর্শনকালে পাশে দাঁড়ানো মধ্যবয়স্ক লোক প্রতিবেদকের সামনে এসে শোনালেন-‘উন্নয়ন দেখবে চল, সুবিদবাজারে হাচুঁজল।
একই অবস্থা নগরের লামাবাজার, শিবগঞ্জ, সেনপাড়া, সোনাপাড়া, শাহজালাল উপশহর, মেন্দিবাগ, তোপখানা, কাজলশাহ, লালাদীঘির পাড়, আম্বরখানা এলাকায় অতিবৃষ্টির ফলে জলাবদ্ধতা দেখা গেছে। ওই সব এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শুক্রবার এবং শনিবার টানা বৃষ্টির ফলে বাসাবাড়ি ও সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়।
সোবহানিঘাটের আবদুল বাছিত বলেন,রাতের বৃষ্টিতে ঘরের ভেতরে পানি প্রবেশ করে। পরে ঘরের আসবাবসহ অন্যান্য সামগ্রী উঁচু জায়গায় তুলে রাখতে হয়েছে। এলাকাটি অপেক্ষাকৃত নিচু হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা তৈরি হয় বলে জানান তিনি। লালাদীঘির পাড় এলাকার বাসিন্দা আসমা আক্তার বলেন, গতকাল রাত দুইটার দিকে হঠাৎ ঘরের সামনে পানি জমতে শুরু করে। আড়াইটার দিকে ঘরের সামনের পানি কিছুটা ঘরের ভেতরে প্রবেশ করে। সেগুলো বালতিতে ফেলতে হয়েছে। তবে সকালে পানি কমে গেছে বলে জানান তিনি।
নগরের সুরমা নদীসংলগ্ন এলাকা মেন্দিবাগ, কুশিঘাট, তোপখানা, কালীঘাট, শেখঘাট এলাকায় দেখা গেছে নদীর পানি ভরাট অবস্থায় রয়েছে। পানি আরও বাড়লে ওই এলাকাসহ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পানি প্রবেশ করবে। সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী এ কে এম নিলয় পাশা বলেন, সুরমা ও কুশিয়ারার পানি এখনো বিপদ সীমা অতিক্রম করেনি, তবে নদীর পানি বাড়ছে।
সিলেট আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে জানা যায়, সিলেটে বৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। তবে গত কয়েক দিনের তুলনায় বৃষ্টির হার কমে আসবে। ঘূর্ণিঝড় অশনির প্রভাবে সিলেটে বৃষ্টি হচ্ছে এবং ঘূর্ণিঝড় শেষ হওয়ার পরও ২১ মে পর্যন্ত বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।
সিলেটের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী বলেন, ২১ মে পর্যন্ত আবহাওয়ার বার্তায় বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বৃষ্টির পরিমাণ কমে আসবে। আজ রাতেও বৃষ্টি হবে এবং সেটি আগেভাগেই শুরু হতে পারে বলে জানান তিনি।