মঙ্গলবার জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রোগীকে শারীরিক নির্যাতন ও টেনেহিঁচড়ে বের করে গ্রেপ্তারের অভিযোগে পুলিশের ৪ এসআইকে সাময়িক বরখাস্তের পাশাপাশি ২ কনস্টেবলকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন জেলা পুলিশ সুপার মো. নাছির উদ্দীন আহমেদ।
তিনি গণমাধ্যমে বলেন, ‘এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। তদন্তে প্রমাণিত হলে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বরখাস্ত এসআই হলেন আলতাব হোসেন, সাইফুল ইসলাম, ওয়াজেদ আলী ও মুন্তাজ আহমেদ। সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে- কনস্টেবল মোজাম্মেল হক ও সাথী আক্তারকে।
ভুক্তভোগীর মেয়ে জুলেখা বেগমের অভিযোগ, সরিষাবাড়ী পৌরসভার বাউসি বাজার এলাকায় বসবাসকারী তার বাবা ৬৫ বছর বয়সী জলিল ভিক্ষাবৃত্তি করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ২০ শতক জায়গায় ঘর তৈরি করে বসবাস করছেন। এই জমি নিয়ে মুজিবুর রহমানের সঙ্গে তার বাবার দ্বন্দ্ব চলছিল। এ নিয়ে মামলা হওয়ার পর আদালত তার বাবার পক্ষে ডিক্রি দেয়।
তিনি আরও জানায়, আদালতের আদেশ অমান্য করে সোমবার সকালে মুজিবুর রহমান দলবল নিয়ে তার বাবার ওপর হামলা চালায়। এতে তার বাবা আব্দুল জলিল, মা লাইলী বেগম, বড় ভাই আবু বক্কর সিদ্দিক, মেজো ভাই ওয়ায়েজ করোনি, ছোট ভাই হামদাদুল হক ও জসিম মিয়া আহত হয়। পরে তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক চারজনকে ভর্তি করে।
পরে প্রতিপক্ষ মুজিবুর রহমান বাদী হয়ে চিকিৎসাধীন আব্দুল জলিলের পরিবারের সদস্যসহ ১৫ জনকে আসামি করে সরিষাবাড়ী থানায় একটি মামলা করেন।
আব্দুল জলিলের ভাতিজা রানা মিয়া বলেন, ‘মামলার পর মঙ্গলবার দুপুরে চিকিৎসাধীন আব্দুল জলিলসহ চারজনকে হাসপাতালের শয্যায় শারীরিক নির্যাতন করা হয় এবং চ্যাংদোলা করে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরে তাদের সবাইকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।’
জলিলের জামাতার অভিযোগ, ‘তারা মামলা করতে গেলেও পুলিশ মামলা নেয়নি। নির্যাতন করে গ্রেপ্তারের পর হাসপাতাল থেকে চারজনের নামে ছাড়পত্র নিয়েছে পুলিশ।”’
সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা দেবাশীষ রাজবংশী গনমাধ্যমকে বলেন, ‘আহতদের চিকিৎসা চলার মধ্যেই পুলিশ হাসপাতাল থেকে রোগীদের ছাড়পত্র নিয়েছে। চিকিৎসাধীন আসামিদের যেভাবে আটক করা হয়েছে, তা অমানবিক।’