সিলেটে সংঘবদ্ধ ধর্ষনের শিকার হয়েছেন এক তরুণী। বুধবার (৩ আগষ্ট) সিলেটের ওসমানীনগরে এই ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় তিন ধর্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার ( ৫ আগস্ট) গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওসমানীনগরের বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করতে সমর্থ হয়। গ্রেপ্তার তিন ধর্ষক হলেন, ওসমানীনগরের সিকন্দরপুর মাইগাঁও গ্রামের মৃত আহাদ মিয়ার ছেলে মো. জাহাঙ্গীর (৩২), পূর্বব্রাম্মনগ্রামের আকলু হোসেন লুদু মিয়ার ছেলে কামাল হোসেন (৩৪) ও সিকন্দরপুর মাইজগাঁও গ্রামের সাইফুর রহমান চৌধূরী রানা (৩৮)।
ওসমানীনগর থানা সূত্রে জানা গেছে, ধর্ষিতা তরুণীর বাড়ি ব্রাম্মনবাড়িয়া জেলার সরাইল থানায়। তাকে একটি বদ্ধঘরে আটকে রেখে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ করেছেন তিনি ( নং ৪/০৫/০৮/২২)। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেছেন, বছরখানেক আগে রুবেল নামক একজনের সাথে তার পরিচয় হয় এবং প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। রুবেল তার সাথে বিবাহ বহির্ভুত শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করলে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন।
গত ৩ আগস্ট রুবেল তার ব্যবহৃত মোবাইল দিয়ে ওই তরুণীর মোবাইলে কল দিয়ে বিয়ের কাজ সম্পন্ন করতে তাকে ওসমানীনগর থানার সিকন্দরপুর গ্রামে যেতে বলে। বাসে গোয়ালাবাজার নেমে সিকন্দরপুর গ্রামে অটোরিকশায় পৌঁছানোর পর তাকে রুবেল তাকে রিসিভ করবে- এমনটাই চূড়ান্ত হয়। তরুণী কাউকে কিছু না জানিয়ে বাড়ি থেকে ৬ হাজার টাকা নিয়ে সেদিন বিকেল ৩টায় গোয়ালাবাজার পৌঁছান। সাড়ে তিনটার দিকে সিকন্দরপুর গ্রামে পৌঁছালে রুবেল তাকে তার এক বন্ধুর বাড়িতে নিয়ে তোলে। সেখানেই বিয়ে হওয়ার কথা।
কিন্তু কিছুক্ষণ পরই রানা ও করিম নামে দু’জনকে নিয়ে রুবেল তরুণীর হাত পা বেঁধে তাকে ধর্ষণ করতে শুরু করে। ওই ঘরে আটকে রেখে পালাক্রমে রাতভর তার উপর পাশবিক নির্যাতন চলে। তাদের বাধা দিতে গেলে তরুণীকে তারা হত্যার হুমকি দিতে থাকে। ফজরের আজানের পর আসামীরা তার বাঁধন খুলে দেয়।
এরপর তারা তিনজন তাদের বন্ধু জাহাঙ্গীর ও কামালকে ডেকে তাকে সেখান থেকে সরিয়ে নিতে বলে। কামাল ও জাহাঙ্গীর তাকে মারধোর করে কানের দোলসহ মোবাইল এবং নগদ পাঁচ হাজার টাকা রাত ৮টার দিকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। আমি একটা টমটমে বেগমপুর নেমে কান্নাকাটি করতে থাকলে আনোয়ার আলী ও আব্দুর রহিম নামক দুই পথচারী তাকে দেখেন এবং বিস্তারিত শুনে থানায় নিয়ে যান।
তরুণীর অভিযোগ, আসামী রুবেল, রানা ও করিম পরস্পর সহযোগীতায় তাকে বসত ঘরে আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। আর জাহাঙ্গীর ও কামাল তাদের সহযোগীতা করে। তারা তার বিশ হাজার টাকা দামের মোবাইল সেট, নগদ ৫ হাজার টাকা এবং বিশ হাজার টাকা দামের স্বর্ণের কানের দোলও কেড়ে নিয়েছে বলে তার অভিযোগ। এরপরই ওসমানীনগর থানা পুলিশ অভিযানে নামে এবং এক ধর্ষক ও দুই সহযোগীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। তরুণী বর্তমানে ওসমানীর ওসিসিতে চিকিৎসাধীন। অপর দুই আসামীকেও গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে ওসমানীনগর থানা পুলিশ।
মামলার প্রধান দুই আসামী রুবেল ও করিমের বিস্তারিত পরিচয় পুলিশ বা ধর্ষিতা কেউই জানাতে পারেন নি।