: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মুন্সীবাজার ইউনিয়নের উত্তর জালালপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছাম্মত রীনা বেগমের বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতি সহ সরকারী অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে বিদ্যালয়ের নামে শ্লিপের সরকারি ৫০ হাজার টাকা তুলে নিয়েছেন। বিদ্যালয়ের নামে যৌথ স্বাক্ষরে পরিচালিত অগ্রণী ব্যাংক কমলগঞ্জ শাখা চলতি হিসাব নং-৫২৭০ থেকে বিদ্যালয়ের সাবেক এসএমসি সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) সুলতান মিয়ার স্বাক্ষর জাল করে তিনি ব্যাংক একাউন্ট থেকে এ টাকা তুলে নেন। এছাড়া বিদ্যালয়ের নামে সংশ্লিষ্ট দপ্তরসহ প্রাক প্রথমিকের বরাদ্ধকৃত বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাৎ আর বিদ্যালয়ের ফান্ড তছরুপের অভিযোগ রয়েছে।
জানা গেছে, গত বছরের ২রা ফেব্রুয়ারী বিদ্যালয়ের এসএমসি সভাপতি নির্বাচিত হন শেখ মো. রফিক মিয়া। সভাপতির দায়িত্ব নেবার পর বিদ্যালয়ের নামে পরিচালিত যৌথ স্বাক্ষরের ব্যাংক একাউন্ড বিষয়ে ব্যাংকে রেজুলেশন দিয়ে বিষয়টি অবগত করে সভাপতির নাম পাল্টে নেওয়া। কিন্তু চতুর প্রধান শিক্ষক রীনা সেটা না করে সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতির স্বাক্ষরে ব্যাংক লেনদেন চালিয়ে যান। বিষয়টি জানার পর বর্তমান সভাপতি রফিক মিয়া গত ২৯ জুন কমলগঞ্জ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্তাকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ পেয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্তাকর্তা বিষয়টি তদন্তের জন্য দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি করে ১০ কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়। কমিটির সদস্য হলেন সিনিয়র সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা উম্মুল বারী ও জয় কুমার হাজরা। গত ১৯ আগস্ট থেকে তদন্ত শুরু করেন তদন্ত দল। তদন্তকালে চেক জালিয়াতি সহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি ধরা পড়ে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। তদন্তকালে গুরুত্বপূর্ণ অনেক কাগজপত্র প্রধান শিক্ষক দেখাতে পারেননি বলেও জানা গেছে। এদিকে চেক জালিয়াতিসহ বিদ্যালয় ফান্ড তছরুপের হাত থেকে প্রধান শিক্ষক রীনা বেগমকে বাঁচাতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির একটি গ্রুপ তৎপরতা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সরেজমিন দেখা যায়, ১৯৯৪-৯৫ কমিউনিটি স্কুল হিসেবে প্রতিষ্টিত প্রাথমিক এ বিদ্যালয়টি ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টি সরকারি করা হয়। প্রতিষ্ঠাকাল থেকে প্রধান শিক্ষক হিসাবে ও সরকারি হওয়ার পর থেকে প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মোছাম্মত রীনা বেগম। বিদ্যালয়ের পাশে বাড়ি হওয়ায় বিগত ২৫ বছর ধরে একই বিদ্যালয়ে কর্মরত থেকে নিজের ইচ্ছেমত বিদ্যালয়ে শিক্ষাদান করায় বিদ্যালয়ে শিক্ষা ভেঙ্গে পড়েছে। বিদ্যালয়ের সার্বিক পরিবেশ খুবই নোংরা। বিদ্যালয়ের ভেতর যেন স্থানীয়দের গোয়াল ঘর আর হাসের খামার।
এ বিষয়ে আলাপকালে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাইফুল ইসলাম বলেন, অভিযোগের তদন্ত চলছে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়া মাত্রই বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে সব ধরনের আবর্জনা অপসারণ করা হবে।