সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভায় বক্তারা বলেছেন, ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ রাতে পাকিন্তান সামরিক বাহিনী তাদের এদেশের দোসর রাজাকার, আল-বদরদের সহযোগিতায় নিরস্ত্র, নিরপরাধ, ঘুমন্ত সাধারণ বাঙ্গালীর উপর যে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল তা পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ গণহত্যার নজির।
তাঁরা বলেন, ২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশে ২৫ মার্চের গণহত্যা দিবস হিসেবে স্মরণ করা হয়েছে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাত থেকে পরবর্তী ৯ মাস ধরে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় পাকিস্তান সামরিক বাহিনী যে গণহত্যা চালিয়েছে জাতিসঙ্গের গণহত্যার সজ্ঞায় এটি অবশ্যই গণহত্যা। বিশ্ব মানবতার ইতিহাসে ১৯৭১এর পাকিস্তানী বর্বরদের কলঙ্কিত গণহত্যার দেশে-বিদেশে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত স্বাক্ষ্য-প্রমানসহ অনেক দলিল রয়েছে।
সভায় আন্তর্জাতিক পরিসরে ৭১ এর গণহত্যার স্বীকৃতি যেই কারণে জরুরী মনে করা হয় ভবিষ্যৎ জাতি রাষ্ট্র গঠনে ১৯৭১এর গণহত্যা পৃথিবীর ইতিহাসের স্বাক্ষ্য হিসেবে চিহ্নিত হবে বলে বক্তাগণ মন্তব্য করেন। সভায় ১৯৭১ এর গণহত্যার আন্তর্জাতি স্বীকৃতির জন্য সরকারের কার্যকর তৎপরতার দাবি জানানো হয়।
সভায় আরো বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস এখনো যেমনটি করে জাতির সামনে উত্থাপিত হয়নি, যে কারণে স্বাধীনতা পরবর্তী সময় থেকে যে দলই ক্ষমতায় গিয়েছে তারা নিজেদের মতো করে মুক্তিযুদ্ধকে ব্যবহার করে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী শক্তিকে আশ্রয় প্রশ্রয় দিয়ে দেশকে সাম্প্রদায়িকতা ও লুটেরাদের রাষ্ট্রে পরিনত করেছে। অথচ শোষণ ও বৈষম্য এবং সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করে জাতি সে দিন বিজয় ছিনিয়ে এনেছে। আমরা মনেকরি মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনায় একটি জাতীয় জাগরণ গড়ে স্বাধীনতার সুফল- দেশবাসীর কাছে পোঁছিয়ে দিতে হবে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
২৬ মার্চ সকাল ৯টায় সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন কেন্দ্রীয় কার্যালয় জাতীয় টেনিস কমপ্লেক্স, পশ্চিম গ্যালারীর নিচে, রুম-১ শাহবাগ, ঢাকা-১০০০ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে শিখা চিরন্তনে পুষ্পস্তবক অর্পন করা হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ। সভায় বক্তব্য রাখেন, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ কে আজাদ, এ্যাডভোকেট পারভেজ হাসেম, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সবুস, অর্থ বিষয়ক সম্পাদক অলক দাশ গুপ্ত, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সামসুল আলম জুলফিকার, কেন্দ্রীয় নেতা শাহীন আকতার, রনোদা প্রসাদ সরকার, আমানউল্লাহ আমান, আজিজুর রহমান, প্রনব কুমার বিশ^াস প্রমুখ।
সভার শুরুতে মহান স্বাধীনতার বীর শহীদদের স্মরণে ১ মিনিট দাঁড়িয়ে নিরবতা পালন করা হয়।