ড. কামাল হোসেনকে প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে অব্যাহতি এবং মো. মিজানুর রহমানকে সাধারণ সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করেছে মোস্তফা মহসিন মন্টুর নেতৃত্বাধীন গণফোরাম।
মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার এ ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জগলুল হায়দার বলেন, ‘আমাদের রাজনৈতিক জীবনে বর্তমানে চরম সংকট চলছে। যে সময়ে জাতীয় ঐক্য অপরিহার্য, সেই মুহূর্তে ড. কামাল হোসেন ও মো. মিজানুর রহমান গত ১৭ সেপ্টেম্বর জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে যে কমিটি ঘোষণা করেছেন, তা সম্পূর্ণ গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী ও অগণতান্ত্রিক।’
তিনি জানান, গত ২০১৯ সালের ২৬ এপ্রিল গণফোরামের বিশেষ কাউন্সিলে ড. কামাল হোসেনকে সভাপতি এবং ড. রেজা কিবরিয়াকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হয়েছিল। মাত্র ১ বছরের জন্য ১০১ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটি গঠিত হয়। কিন্তু, ওই কাউন্সিল অনুষ্ঠানের পর দীর্ঘ আড়াই বছরে দলের কেন্দ্রীয় কমিটি, স্থায়ী কমিটি বা সম্পাদক পরিষদের কোনো সভা ডাকা হয়নি। ফলে, দলের মধ্যে নাজুক অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে গণফোরামের অচলাবস্থা নিরসন এবং দেশব্যাপী দলকে সুসংগঠিত করার লক্ষ্যে গত বছরের ৩ ডিসেম্বর ড. কামাল হোসেনের অনুমতি নিয়ে অত্যন্ত সফলভাবে গণফোরামের ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশন করা হয়েছিল। প্রায় ৩ হাজার কাউন্সিলর ও ডেলিগেটের উপস্থিতিতে এবং বাংলাদেশের স্বীকৃত প্রায় ১০টি রাজনৈতিক দলের নেতাদের অংশগ্রহণে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান অত্যন্ত সফলভাবে সম্পন্ন হয়।
অধিবেশনে ১ হাজার কাউন্সিলরের সক্রিয় অংশগ্রহণে সবার সম্মতিতে গণফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা মোহসীন মন্টুকে সভাপতি ও সাবেক নির্বাহী সভাপতি সিনিয়র অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক করে ১৫৭ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়।
জগলুল হায়দার বলেন, ‘দুঃখের বিষয় হচ্ছে, গণফোরামের নির্বাচিত কমিটি থেকে পদত্যাগ না করে গঠনতন্ত্রের পরিপন্থী ও উপ-দলীয় কমিটি করে ড. কামাল হোসেন সভাপতি ও মো. মিজানুর রহমানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এমনকি ঘোষিত তথাকথিত কমিটি নির্বাচন কমিশনের সঙ্গেও প্রতারণা করেছে। এমন অবস্থায় গতকাল সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত গণফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সভায় সবার সম্মতিতে ড. কামাল হোসেনকে দলের প্রধান উপদেষ্টার পদ থেকে অব্যহতি দেওয়া হলো এবং মো. মিজানুর রহমানকে সভাপতি পরিষদের সদস্য পদসহ দলের সাধারণ সদস্য পদ থেকেও বহিষ্কার করা হলো।’
গণফোরামের সভাপতি মোস্তফা মহসিন মন্টু বলেন, ‘কাউন্সিল অধিবেশনের আগে গণফোরামের জ্যেষ্ঠ নেতারা ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তখন তিনি ওই কাউন্সিল অধিবেশনে উপস্থিত থেকে সভাপতিত্ব করার ইচ্ছা পোষণ করেন। কিন্তু, শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি কাউন্সিল অধিবেশনে উপস্থিত হতে অপরাগতা প্রকাশ করেন এবং সক্রিয় রাজনীতি থেকে অবসর গ্রহণ করতে চান।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক ড. আবু সাইদ, মহিউদ্দিন আব্দুল কাদের, অধ্যাপক হাফিজ চৌধুরী, সিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ।