পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে পর্যটকের ঢল নেমেছে গোয়াইনঘাটের পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে। শনিবার ঈদের প্রথম দিন থেকেই মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) ঈদের চতুর্থ দিন সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে জাফলংয়ের সৌন্দর্য দেখতে আসেন পর্যটকরা।
সবুজ পাহাড়, পাথর আর স্বচ্ছ জলের সমাহার দেখতে দেশের নানা প্রান্ত থেকে ছুটে আসেন ভ্রমণপিয়সীরা। পরিবার-পরিজন আর বন্ধুবান্ধব নিয়ে তাঁরা স্পটগুলো ঘুরে ঘুরে দেখছেন। দীর্ঘদিন পর প্রকৃতির এমন কাছাকাছি আসতে পেরে খুশি তাঁরা। সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় চারটি পর্যটন স্পট রয়েছে। প্রকৃতিকন্যা জাফলং, জল-পাথরের বিছনাকান্দি, সোয়াম ফরেস্ট রাতারগুল ও পানতুমাইয়ের ঝর্না।
এই চারটি স্পটেই ঈদ উপলক্ষে কয়েক লাখ পর্যটকের সমাগম হয়। তবে সব চাইতে বেশি পর্যটকের ভিড় ছিল জাফলংয়ে। তাদের বেশিরভাগ দর্শনার্থীই ছিলেন তরুণ-তরুণীরা।
নদী, স্বচ্ছ জল, আর ভারতের মেঘালয়ের পাহাড়ের পাশাপাশি এখানে খাসিয়া পল্লী, মায়াবী ঝরণাও মন কাঁড়ে ভ্রমণপিয়সীদের।
সোমবার জাফলংয়ে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই এখানে নানা বয়সের পর্যটকরা ছুটে এসেছেন। দুপুর গড়ার সাথে সাথে জিরোপয়েন্টে গিয়ে পর্যটকরা ভিড় করছেন। স্বচ্ছ জল, পাথর আর পাহাড়ের সৌন্দর্য দেখে তারা মুগ্ধ।
ঈদের দিন থেকেই উপজেলার সবক’টি স্পটে লাখো পর্যটকের মতো সমাগম হয়। পর্যটকদের নিরাপত্তায় এখানে টুরিস্ট পুলিশ, থানা পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন।
দেশের নানা প্রান্ত থেকে বন্ধু-বান্ধব ও পরিবার পরিজন নিয়ে ভ্রমণে এসে সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। ভারতের ডাউকী পাহাড়, পাথর আর স্বচ্ছ জলের সমাহার দেখে যেন মুগ্ধ সবাই।
নিজেদের হাতে থাকা স্মার্ট ফোন কিংবা ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলে আনন্দঘন মুহুর্তকে স্বরণীয় করে রাখছেন। কেউ কেউ নৌকা নিয়ে নদী পাড় হয়ে খাসিয়া পল্লী আর চা-বাগানের উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন।
ময়মনসিংগ থেকে ভ্রমণে রবিন মিয়া বলেন, ঈদের ছুটিতে পরিবারের সদস্যরা মিলে ঘুরতে এসেছি। জাফলং আসলেই খুব সুন্দর। পাহাড়, পাথরের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছি।
এদিকে, ঠাঁই ছিলো না এখানকার হোটেল-মোটেলগুলোতে। রেস্টুরেন্টগুলোতেও তাদের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। পর্যটকের সমাগমে খুশি এখানকার পর্যটন ব্যবসায়ীরাও। তাঁদের বেচাকেনাও ভালো।
ব্যবসায়ী শুভ বলেন, ঈদ উপলক্ষে সকাল থেকেই এখানে প্রচুর পর্যটক এসেছেন। বেচাকেনা ভালো হয়েছে।
জাফলং গ্রীণ রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাবলু বখত জানান, ঈদের ছুটিতে এখানে প্রচুর পরিমাণে পর্যটক বেড়াতে এসেছেন। তাতে আমাদের ব্যস্ততা বেড়ে গেছে। আমাদের আবাসিক হোটেলের অধিকাংশ রুমগুলো আগে থেকেই বুকিং হয়ে গেছে। আশা করছি তা আরও বাড়বে।
জাফলং টুরিস্ট পুলিশের ইনচার্জ (ওসি) মো. রতন শেখ জানান, ঈদের ছুটিতে সকাল থেকেই পর্যটকে মুখরিত ছিল জাফলং। আগত পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা কাজ করছে। এছাড়াও পর্যটকরা বেড়াতে এসে যাতে কোনভাবেই ভোগান্তিতে না পড়েন সেদিকে আমাদের নজর রয়েছে।
গোয়ানঘাটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে আগত পর্যটকদের নিরাপত্তায় গোয়াইনঘাট থানার ওসি কেএম নজরুলের নেতৃত্বও জেলা পুলিশের নিযুক্ত পুলিশ বিভাগের টহল জোরদার ও অভিযান ছিল চোখে পড়ার মতো।