ছিল ছনখোলা ও পাহাড়ি টিলা। উদ্দেশ্য ছিল রাবার ও ফল বাগান করার। পিতার স্বপ্ন পূরণে সমাজসেবক কামাল হোসেন পর্যায়ক্রমে প্রায় ১২২ একর এসব পাহাড়ি জমি কেনেন। সে সময়ে লোকজন কামাল হোসেনের বাগান বলে জানতেন। পরবর্তী সময়ে কামাল হোসেন ৭৬ একর জমি দিয়ে প্রতিষ্ঠা করেন ‘দ্য প্যালেস লাক্সারি রিসোর্ট’।
তার সাথে ছিলেন আরিফুর রহমানসহ অনেকেই। বাকি জমিতে রয়েছে প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানের বাংলোসহ ফল ও ফুলের বাগান। আন্তর্জাতিক মানের রিসোর্টটির অবস্থান হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশেই। উপজেলার পুটিজুরী বাজার থেকে দুই কিলোমিটার অতিক্রম করে বৃন্দাবন চা-বাগানের পাশের রাস্তা দিয়ে প্রবেশ করা যাবে এই রিসোর্টে।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার সুবিধা রেখে রিসোর্টটিকে সাজানো হয়েছে নতুন সাজে। সবুজে ঘেরা পাহাড়, গিরিখাদ, সরোবর, ঝরনা আর ৩০ হাজার গাছে পাহাড়ি জমিতে সাজানো রিসোর্টের চারদিকে রয়েছে চা, আনারস, রাবার আর লেবু বাগান। দেখে মনে হবে যেন পুরো সিলেট দেখা হয়ে গেলো একটি স্থান থেকেই। বিদেশি পাইন আর সারি সারি দেবদারু সমৃদ্ধ এ রিসোর্টটি এখন পর্যটকের সব নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ভ্রমণকে আনন্দময় করে তুলতে প্রস্তুত। নিরাপত্তাকেই এখানে সবার আগে প্রাধান্য দেওয়া হয়।
হেলিকপ্টার এবং সড়কপথে এই রিসোর্টে আসা যায়। অতিথিরা অভ্যার্থনা টেবিলের সামনে গেলে নাম এন্ট্রি করার ব্যবস্থা রাখা হয়। এরপর দেওয়া হয় রুমের চাবি। এর আগে পরিচ্ছন্ন করা হয় রিসোর্টের রুমগুলোতে যত আসবাব ও ব্যবহার করার উপকরণগুলো রয়েছে। অতিথির জন্য রিসোর্টে বাহন রয়েছে। যার মাধ্যমে অতিথি এক স্থান থেকে আরেক স্থানে যেতে পারছেন নিমেষেই। অতিথিরা রাতে পাখি, ঝিঁঝি পোকা, শেয়ালের ডাক উপভোগ করতে পারছেন। দেখতে পারেন খরগোশের দৌড়ঝাঁপ। রিসোর্টের চারটি বড় সভাকক্ষ, ৪০০ জনের ব্যাংকুয়েট হল, ছোটদের খেলার জায়গা তিনটি, বিলিয়ার্ড, ফুটবল, বাস্কেটবল, টেনিস, রিমোট কন্ট্রোল কার রেসিং এবং সিনেপ্লেক্স সব কটি জীবাণুমুক্ত করে প্রস্তুত রাখা হয় অতিথির জন্য। যাতে নিশ্চিত মনে সবকিছু উপভোগ করতে পারছেন আগতরা।
রিসোর্টে প্রস্তুত রাখা হয়েছে হেলথ সেন্টার। অতিথির যেকোনো জরুরি শারীরিক সমস্যায় এই হেলথ সেন্টারটি ২৪ ঘণ্টা প্রস্তুত। রয়েছে নিজস্ব চিকিৎসক। এ ছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেন সিলিন্ডারও মজুত রাখা হয়েছে। মনোরম এই রিসোর্ট শরীর ও মনে প্রশান্তি এনে দেবে। রিসোর্টে একদিক থেকে জলধারা এসে পাহাড়ের গা বেয়ে নিচে নেমে যাচ্ছে ইনফিনিটি পুলে। আবার সিলেটের ঐতিহ্য সবুজ শনগাছে অতিথিকে গ্রামের কথা মনে করিয়ে দেবে। স্থাপত্যশৈলীর দেখা মেলে ঝুলন্ত সেতুতে।
রিসোর্টের পরিচালক লিনা খাতুন জানান, তার স্বামী দ্য প্যালেসের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। প্রবাসে থাকলেও দেশের প্রতি তাদের মায়া রয়েছে। এ মায়া থেকেই রিসোর্ট করা হয়েছে। রিসোর্ট পর্যটকদের মুগ্ধ করার পাশাপাশি পরিবেশ রক্ষায় বিরাট ভূমিকা পালন করছে।
রিসোর্টের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান কামাল হোসেন বলেন, ছনখোলা ও পাহাড়ি টিলা ছিল। জমি ক্রয় করতে করতে প্রায় ১২২ একরের উপর হয়ে গেছে। এরমধ্যে প্যালেসকে ৭৬ একর জমি দিয়েছি। উদ্দেশ্য ছিল রাবার ও ফল বাগান করার। পরে দ্য প্যালেস লাক্সারি রিসোর্ট তৈরি হয়। রিসোর্টে দেশ ছাড়া বিদেশ থেকে পর্যটকরা আসছেন। এখানে ভ্রমণ করে সবাই মুগ্ধ হচ্ছেন।