সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের নৌপথে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে। নির্ধারিত চাঁদা আদায় না হলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলে ওই নেতার নের্তৃত্বে। অভিযুক্ত যুবলীগ নেতার নাম হাফিজ উদ্দিন।
নৌ পরিবহন ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা জানান,তাহিরপুর উপজেলা যুবলীগ নেতা হাফিজ উদ্দিনের মারধরের শিকার হচ্ছেন নৌকার শ্রমিকরা। চাঁদাবাজি বন্ধ ও নদীপথ নিরাপদ রাখার জন্য চিহ্নিত চাঁদাবাজ হাফিজ উদ্দিন সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে সিলেটের বিভাগীয় কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ২১টি নৌকার মালিক।
জানা গেছে সুনামগঞ্জের সীমান্তবর্তী উপজেলা তাহিরপুরের বড়ছড়া -টেকেরঘাট, বাগলী ও চারাগাঁও এলাকা থেকে নৌপথে চুনাপাথর ও কয়লা পরিবহনে নদীপথে টোল আদায়ের নামে বেপরোয়া চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলছে। ফলে অতিষ্ট হয়ে পড়েছেন নৌ পরিবহন ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা।
নৌকা মালিকদের পক্ষে লিখিত অভিযোগ করেন জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার কামিনীপুর গ্রামের মো. জাকির হোসেন। অভিযোগের অনুলিপি সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও থানার ওসিকে দেওয়া হয়েছে।
বিভাগীয় কমিশনারের কাছে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, তাহিরপুর সীমান্তের বড়ছড়া -টেকেরঘাট, বাগলী ও চারাগাঁও এলাকা থেকে নৌপথে দেশের বিভিন্ন এলাকায় চুনাপাথর ও কয়লা পরিবহন করে কয়েক হাজার নৌকা।
এই পরিবহন ব্যবসায় হাজারো নৌকা মালিক ও শ্রমিকের সংসার চলে। এসব মালামাল দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিয়ে যাওয়ার পথে তাহিরপুরের পাটলাই নদীর মন্দিয়াতা ও কামালপুর গ্রামের কাছে চাঁদা আদায় করেন উপজেলার চিহ্নিত চাঁদাবাজ উজান তাহিরপুর গ্রামের মৃত মঞ্জুর আলীর ছেলে যুবলীগ নেতা হাফিজ উদ্দিন, বালিজুরি গ্রামের যুবরাজ ও জিল্লুর রহমান। তারা পাটলাই নদীতে প্রতি নৌকা থেকে ২ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করেন।
চাহিদামত টাকা না দিলে নৌকার শ্রমিকদের মারধর করা হয়। টাকা নিয়ে কোন রশিদ দেওয়া হয় না। রশিদ চাইলে শ্রমিকদের প্রাণে মারার হুমকি দেওয়া হয়। অভিযোগকারী মোঃ জাকির হোসেন বলেন, নদীতে চাঁদা দিতে দিতে আমরা অতিষ্ট হয়ে পড়েছি। পাটলাই নদীতে যুবলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে হাফিজ উদ্দিন , যুবরাজ ও জিল্লুর জোর করে চাঁদা আদায় করছে। ২০০ টাকার স্থলে ২ হাজার ও ৫০০ টাকার স্থলে ৫ হাজার টাকা আদায় করছে তারা। চাহিদামত টাকা না দিলে নৌকার শ্রমিক ও সুকানীদের মারধর করে।
চাঁদার অভিযোগ অস্বীকার করে হাফিজ উদ্দিন বলেন, আমরা চাঁদাবাজ নই, বৈধ ইজারাদার। ইউএনও অফিস থেকে এক কোটি ৮ লাখ টাকায় ইজারা নিয়েছি। জিল্লুর রহমান আমার ব্যবসায়িক অংশীদার।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রায়হান কবির বলেন, বেশ কয়েক দিন আগে পাটলাই নদীতে জোর করে অতিরিক্ত টোল আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গিয়েছিল। এরপর ইজারাদারকে ডেকে অতিরিক্ত টোল আদায় না করতে বলা হয়েছিল। আবারও নদীপথে অতিরিক্ত টোল আদায়ের চেষ্টা করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ এহসান শাহ বলেন, সুনামগঞ্জের কোন নদীপথে জোর করে টাকা আদায় বা চাঁদাবাজী চলবে না। অভিযোগের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ড. মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেন বলেন, আমি অফিসের কাজে ঢাকায় আছি। সিলেটে এসে তাহিরপুরের নদীপথের অভিযোগের বিষটি দেখব এবং তদন্তসাপেক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।