সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভায় ব্ক্তারা বলেছেন, আমাদের রয়েছে হাজার বছরের ঐতিহ্য, সম্প্রীতি ও শান্তির সুনিবিড়তা নিয়ে সুখে-দুঃখে একত্রে পথ চলার এক অনন্য ইতিহাস। সময়ের প্রয়োজনে বার বার আমরা জেগে উঠেছি। বিদেশী বেনিয়াদের বিতাড়নে ঐক্যবদ্ধ হওয়া, প্রতিরোধ গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে বিজয় ছিনিয়ে আনার সাহসী ভূমিকার ইতিহার আমাদেরই। এখানে ধর্ম-বর্ণ-গোত্র বলতে সংকীর্ণতা ছিলো না। এটিই হলো বাংলা ও বাঙালীর আসল পরিচয়। যদিও আমাদের সেই স্বপ্নীল সমাজ এখনো সুদুর পরাহত। তবুও বাঙালীরা বার বার বুকভরা আশা নিয়ে জেগে উঠে। পহেলা বৈশাখ দলমত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বর্ষবরণের আয়োজন আমাদের সম্প্রীতি ও সুদৃঢ় ঐক্য গড়ে তোলার পথ দেখায়।
শুক্রবার বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে ১৪ এপ্রিল সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। , সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস। আলোচনা সভায় ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. সেলুবাসিত।
আলোচনায় অংশ নেন প্রেসিডিয়ামের অন্যতম সদস্য জয়ন্তী রায়, সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ কে আজাদ, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য অলক দাশগুপ্ত, রেজাউল কবির, সাজেদুল আলম রিমন, সাবেক এমপি ও বাংলাদেশ জাসদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক প্রধান, কেন্দ্রীয় নেতা হারুনার রশিদ ভুঁইয়া, আব্দুল ওয়াহেদ, জুবায়ের আলম প্রমুখ। সভায় সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিশিষ্ট গীতিকার ও সুরকার অলক দাশগুপ্ত ও সহশিল্পীবৃন্দ।
সভায় রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, রাষ্ট্র চিন্তার সাথে ধর্মের লেবাস যুক্ত করে ধর্মাশ্রয়ীরা যুগে যুগে মানুষকে বিভ্রান্ত করে নিজেদের হীনস্বার্থ হাসিল করার চেষ্টা করে আসছে। আজকে জাতিসত্তার ভীতকে প্রশ্নবৃদ্ধ করার তৎপরতা চলছে তা নি:সন্দেহে বাঙলা ও বাঙালী জাতীর অগ্রযাত্রার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের গভীরতা প্রমান করে। আমরা এই অশুভশক্তির মোকাবেলায় সমাজের বিবেকবান নাগরিকদের সোচ্চার হওয়ার আহবান জানাই।
সাবেক এমপি নাজমুল হক প্রধান বলেন, আমরা শঙ্কিত এই কারণে পহেলা বৈশখের মত সার্বজনিন উৎসবকে ঘিরে এখনো ধর্মাশ্রয়ীদের হুমকীর মুখে কর্মসূচীকে সংকোচিত করার জন্য প্রশাসনের পথ থেকে নানান ধরণের চাপ প্রয়োগ করা হয়। এটি জাতীয় অগ্রযাত্রা ও গণতন্ত্রের পরিপন্থি। এই অবস্থা নেমে নেওয়া যায়না। পহেলা বৈশাখ আমাদের ঐহিত্য, সংস্কৃতি এবং জাগড়নের পথ নির্দেশ করে।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ বলেন, জাতি হিসেবে আমরা হাজার বছরের ঐতিহ্য বহন করে চলছি। আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের বিরুদ্ধে যারা অবস্থান নেওয়ার চেষ্টা করছেন তারা কখনো বিজয়ী হতে পারবেনা। আমাদের ইতিহাস প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের। আমরা আশা করবো সরকার এই অশুভ শক্তিকে চিহ্নিত করে দ্রæত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। যারা এখনো বাঙালী ইতিহাসের বিরুদ্ধে হুমকী দিয়ে বেড়াচ্ছেন তাদের প্রতিরোধ বাঙলার জনগণই করবে। সরকারের কাছে আমাদের আহবান বাঙলা ও বাঙালী সংস্কৃতির ঐতিহ্যের প্রকৃত ইতিহাস ও পহেলা বৈশাখ বর্ষবরণের পাঠ্যপুস্তকে সুনিপূনভাবে অর্ন্তভূক্ত করতে হবে।