পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় ট্রিপল হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার ঘটনায় পুলিশ হত্যাকাণ্ডের মুল পরিকল্পনাকারী মো. অলী বিশ্বাস (৩৮) ও হত্যাকারী মো. রাকিব বেপারী (২০) নামের দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
জেলা পুলিশ সুপার মো. হায়াতুল ইসলাম খান শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ওই দুইজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ সময় তিনি জানান, গত শুক্রবার রাত ১টার দিকে পুলিশ অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড উপজেলার ধানীসাফা গ্রামের মৃত্যু তোজাম্বর আলী বিশ্বাসের ছেলে মো. অলী বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করে। পরে তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত অপর কিলার একই গ্রামের কাওসার বেপারীর ছেলে মো. রাকিব বেপারীকে গ্রেপ্তার করেন। পুলিশ সুপার আরো জানান, অলী বিশ্বাসের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ওই হত্যাকাণ্ডের কাজে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র, নিহতের বাড়ি থেকে লুণ্ঠিত কিছু টাকা ও অন্যান্য মালামাল উদ্ধার করা হয়।
এছাড়া শিশুকন্যা আশফিয়ার টাকা জমানো প্লাস্টিকের ব্যাংক উদ্ধার করা হয়। হত্যাকাণ্ডে সরাসরি মোট ৪ জন অংশ নেয়। গ্রেপ্তারকৃত প্রধান আসামী অলী বিশ্বাস এবং নিহত অটোচালক আয়নাল হক একই সঙ্গে অটো চালাতেন।হত্যাকাণ্ডের আগের দিন বৃহস্পতিবার বিকেলে অলী আয়নালকে অনেক টাকা গণনা করতে দেখেন। ওই টাকা চুরি করতে রাতে সিঁদ কেটে ঘরে ঢোকে অলী বিশ্বাস। এ সময় অলী ও অন্যদের চিনে ফেলেন এবং অলীর নাম ধরে ডাকেন আয়নাল। এতে তারা ঘটনা প্রকাশ হওয়ার ভয়ে প্রথমে আয়নাল, পরে তার স্ত্রী খুকুমনি ও শেষে শিশুকন্যা আশফিয়াকে হত্যা করেন।
উল্লেখ্য, পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় উপজেলার ধানীসাফা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডে সাফা গ্রামের অটোচালক মো. আয়নাল হক (৩৫), তার স্ত্রী খুকু মনি (২৫) ও তার তিন বছরের শিশু কন্যা আশফিয়াকে গত ৩০ জুলাই রাতে দুর্বৃত্তরা রড দিয়ে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে হাত কাপড় দিয়ে বেঁধে আড়ার সাথে লাশ ঝুলিয়ে রাখে। নিহত অটোচালক আয়নাল হক ওই গ্রামের মৃত্যু রত্তন হাওলাদারের পুত্র। তিনি কয়েক বছর আগে ব্রুনাই থেকে দেশে ফিরে অটো রিক্সা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
মঠবাড়িয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আ. জ. ম মাসুদুজ্জামান জানান, গত ৩১শে জুলাই সকাল সাড়ে ৭টার দিকে প্রতিবেশীরা ঘরের মধ্যে আয়নাল হকের কোন সাড়া না পেয়ে ঘরের জানালা দিয়ে তাকিয়ে ওই পরিবারের ৩ জনের লাশ ঝুলতে দেখে থানা পুলিশকে খবর দেয়।