রাজশাহীর বাঘায় একটি খামারে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় অর্ধশতাধিক মুরগি মারা গেছে। বিদ্যুতের বিল পরিশোধ না করায় সোমবার (১৩ জুন) বেলা ১১টায় মুরগির খামারে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এরপর বিকাল ৫টায় সংযোগ দিলেও এর মধ্যে কয়েক ঘণ্টায় অর্ধশতাধিক মুরগি মারা যায়। জানা যায়, নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর বাঘা জোনাল অফিসের একটি দল উপজেলার ছাতারি গ্রামের আরাফাত পোল্ট্রি ফার্মে অভিযান পরিচালনা করেন। দুই মাসের বিদ্যুৎ বিল বকেয়ার কারণে খামারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। এ সময় পল্লী বিদ্যুতের অভিযান দলকে অনেক অনুরোধ করে ১ ঘণ্টা সময় চেয়েছিলেন খামার মালিক। প্রয়োজনে তাৎক্ষণিক টাকাও পরিশোধ করতে চেয়েছিলেন। জরিমানাসহ বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের শেষ সময় ছিল ১৩ জুন। এরপরও তার কথায় কর্ণপাত করা হয়নি। বিচ্ছিন্ন করা হয় সংযোগ।
জ্যৈষ্ঠের তীব্র গরমে সংযোগ বিচ্ছিন্নের কয়েক ঘণ্টা পর স্ট্রোক করে মারা যায় খামারের অর্ধশতাধিক ডিম উৎপাদনকারী মুরগি। এছাড়া আরও শতাধিক মুরগি অসুস্থ হয়ে পড়েছে। ফলে দিশেহারা হয়ে পড়েন খামার মালিক জাহাঙ্গীর হোসেন। সূত্র জানায়, জাহাঙ্গীর আলম ধারদেনা করে ৭ মাস আগে লেয়ার মুরগির খামার দেন। এ খামারে ১ হাজার ২০০ মুরগির বাচ্চা নিয়ে পরিচর্যা শুরু করেন। মুরগিগুলো কিছুদিন থেকে ডিম দেওয়া শুরু করেছে। এ বিষয়ে খামার মালিক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বর্তমানে যা আয় হয়, মুরগির খাবার ও ওষুধে সব ফুরিয়ে যায়। এর মধ্যে অনেক কষ্ট করে বিদ্যুতের বিল পরিশোধের জন্য টাকা জোগাড় করেছিলাম। বিদ্যুৎ বিল দিতে অফিসে যাওয়ার আগে তারা খামারে এসে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
তিনি বলেন, জরিমানাসহ বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ এবং নতুন সংযোগ দেওয়া হয় বিকাল ৫টার দিকে। এর মধ্যেই খামারের অর্ধশতাধিক মুরগি মারা যায়। প্রতিনিয়ত নানা রকম ঝুঁকি মোকাবেলা করে খামার পরিচালনা করছি। রাত-দিন কষ্ট ও পরিশ্রম করে খামার পরিচালনা করি। মানুষের জন্য আমিষের চাহিদা পূরণ করি। আমরা কি এতটুকু মানবিক অধিকার পেতে পারি না। এ বিষয়ে নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর বাঘা জোনাল অফিসের ডিজিএম সুবীর কুমার দত্ত বলেন, তার ৩ মাসের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া ছিল। সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার ৩ ঘণ্টার মধ্যে পুনরায় সংযোগ স্থাপন করা হয়েছে। তিনি যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ৫-৭ ঘণ্টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ থাকে না। অথচ ৩ ঘণ্টার ব্যবধানে এতো মুরগি মারা গেল, এটা বিশ্বাস করা কঠিন বলে মনে করেন তিনি। অন্য কোনো সমস্যার কারণে মুরগি মারা যেতে পারে।