চলতি রবি মৌসুমে ধান, বাদাম, মরিচ, সূর্যমূখী, আলু, টমেটো অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ভুট্টা চাষে আগ্রহী হয়েছে জামালগঞ্জের কৃষকেরা। জলবায়ু বান্ধব, ঝুঁকিমুক্ত খরচ কম থাকায় ভুট্টা চাষে দিন দিন আগ্রহী হচ্ছে জামালগঞ্জের কৃষকেরা। ধানের চেয়ে দুই গুন লাভবান হয়েছে কৃষকেরা।
উপজেলার, রামপুর, জামলাবাজ, মিনি পাকনা, তায়েবনগর সহ ৬টি ইউনিয়নের পতিত জমিতে ভুট্টার চাষ করছে কৃষকেরা। ভুট্টা থেকে মাছ, গবাদী পশুর খাদ্য তৈরী প্রসাধন সামগ্রী, হরলিক্স, ভোজ্য তৈল, খই, রুটি, বিস্কুটসহ কয়েক প্রকার শিল্পজাত দ্রব্য উৎপাদন করা হয়। এছাড়াও ভুট্টার গাছ ও মোচা, জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করা যায়। উপজেলার ফেনারবাক ইউনিয়নে পাকনা হাওরে রামপুর গ্রামের কৃষক রজব আলী, ফজলুল হক, রাসেল, মামুন উল্লাহ জানান ভুট্টা চাষে খুবই লাভজনক। খরচ কম, ঝুঁকিমুক্ত, ও স্বল্প মেয়াদী হওয়ায় আমরা ভুট্টা চাষ করছি। যে সব জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। এসব জমি আগে ধান চাষ করা হতো। ধান চাষে বছরের পর বছর ঝুঁকি থাকে, খরচের সাথে আয় খুবই কম। তাই এসব জমিতে ধানের চেয়ে ভুট্টা চাষে দ্বিগুন লাভ হয়ে থাকে।
তারা আরো বলেন, পতিত জমি ও হাওরের নদীর চড়ে ভুট্টা ধানের চেয়ে দ্বিগুন ফলন হয়। তাই আমরা ধানের পাশাপাশি ভুট্টা চাষ বেশি করছি। ফেনারবাক ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের আবুল কালাম জানান, গত বছর ১০ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করে বেশী ফলন ও লাভ হওয়ায় এবার ১৩০ বিঘা পতিত জমিতে ট্রাক্টর দিয়ে হাল-চাষ করে ভুট্টা চাষ করেছি। ফলন ভাল হয়েছে। আশা করছি লাভের মূখ দেখতে পাবো। শুধু আমি নয় আমার মতো অনেকেই ভুট্টা চাষে আগ্রহী হয়েছে। তিনি আরো বলেন, শষ্যের ভান্ডার নামে খ্যাত জামালগঞ্জের কৃষকরা অল্প খরছে ভুট্টা চাষে বেশী লাভবান হবে। ভেজালমুক্ত বীজ সার কীটনাশক সহ আধুনিক প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করলে ও উৎপাদিত ভুট্টা ন্যায্য মূল্য পাওয়ার ব্যবস্থা করলে জামালগঞ্জে ভুট্টা চাষে বিপ্লব ঘটবে।
এব্যপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো: আলা উদ্দিন জানান, ভুট্টা একটি লাভ জনক ফসল। গত বছর এই উপজেলায় ৩৯ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে। এবছর কৃষকরা লাভবান হওয়ায় ১৪৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করা হয়েছে। ভুট্টা যেকোন ধরনের জমিতে চাষ করা যায়। ভুট্টায় পোকা মাকড়ের আক্রমণ কম হয়। পানি সেচ ও প্রয়োজন মতো জৈব সার ব্যবহার করলে ফলন ভাল হয়। ভুট্টা একর প্রতি ধানের চেয়ে দ্বিগুন ফলন হয়। উচ্চ ফলনশীল ভুট্টা একর প্রতি ১২০ থেকে ১৪০ মণ উৎপাদন হয়ে থাকে। দামও ধানের প্রায় কাছাকাছি হয়ে থাকে।