1. sparkleit.bd@gmail.com : K. A. Rahim Sablu : K. A. Rahim Sablu
  2. diponnews76@gmail.com : Debabrata Dipon : Debabrata Dipon
  3. admin@banglanews24ny.com : Mahmudur : Mahmudur Rahman
  4. mahmudbx@gmail.com : Monwar Chaudhury : Monwar Chaudhury
রেস্তোরাঁয় বাসন মাজা তরুণ এখন যুক্তরাজ্যের ধনাঢ্য ব্যক্তি
বৃহস্পতিবার, ০৮ জুন ২০২৩, ১১:৪৪ পূর্বাহ্ন




রেস্তোরাঁয় বাসন মাজা তরুণ এখন যুক্তরাজ্যের ধনাঢ্য ব্যক্তি

বাংলানিউজ এনওয়াই ডেস্ক :
    আপডেট : ২২ মার্চ ২০২৩, ৯:২১:৩৯ অপরাহ্ন

স্বপ্ন দেখেছিলেন বিদেশে পাড়ি জমাবেন। মাত্র ২২ বছর বয়সে পাড়ি জমান যুক্তরাজ্যে। কিন্তু যুক্তরাজ্যে যাওয়ার পথটি মোটেও সোজা বা সহজ ছিল না। বহু কাঠখড় পুড়িয়ে অবশেষে যুক্তরাজ্যের পথ ধরেন। সেদিনের সেই ২২ বছরের যুবকের নাম তেজিন্দর সিং শেখন। ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের লুধিয়ানায় বারুনদি এলাকার তার পৈতৃক বাড়ি।

তেজিন্দরসিং যখন খুব ছোট, তখন তার বাবা মারা যান। বাবার রেখে যাওয়া দুই একর জমি চাষাবাদে মন দেন তার মা। তেজিন্দর কৃষিকাজ ও গবাদি পশু পালনে মাকে সাহায্য করতেন। সকালে মায়ের সঙ্গে জমিতে কাজ করার পর স্কুলে যেতেন। স্কুল থেকে ফিরে আবার কাজে লেগে যেতেন। তার জীবনে প্রথম আয় ছিল ১ হাজার ২০০ রুপি। তিনটি বাছুর বিক্রি করে এই অর্থ পেয়েছিলেন। আর তার ছোট দুই বোন সংসারে একটু আয় বাড়াতে কাপড় সেলাইয়ের কাজ করতেন।

তেজিন্দর সিং ১৯৯৭ সালে কলেজের গণ্ডি পার হন। তার ইচ্ছা ছিল সেনাবাহিনীর অফিসার হওয়ার। কিন্তু নিয়োগ পরীক্ষায় পাস করতে পারেননি। এরপর স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন বিদেশে পাড়ি জমাবেন। স্বপ্নের জাল বুনতে বুনতে মায়ের সঙ্গে পরামর্শ করে কিছু জমি বন্ধক রেখে প্রয়োজনীয় অর্থ জোগার করেন। সেই অর্থ খরচ করে দেশ ছাড়েন। চলে যান হংকংয়ে। কিন্তু সেখানে কোনো চাকরি না পাওয়ায় দেশে ফিরে আসেন। সংসারে দুরবস্থা, ছোট দুটি বোনের বিয়ের বয়স হয়ে গেছে, বিয়ে দেওয়া দরকার। বিয়ের খরচ জোগানোর জন্য মায়ের সঙ্গে পরামর্শ করে বাধ্য হয়েই কিছু জমি বিক্রি করেন। জমি বিক্রির অর্থে ২০০০ সালে এক বোনকে বিয়ে দেন। ২০০১ সালে ছোট বোনটিকেও বিয়ে দেন। এরপর কিছুটা দম ফেলার সুযোগ পান তিনি ও তার মা। বিদেশে যাওয়ার স্বপ্ন এতই প্রবল ছিল যে, মাকে তিনি রাজি করাতে সক্ষম হন। আরো খানিক জায়গা বিক্রি করে সেই টাকায় ২০০২ সালে চলে যান যুক্তরাজ্যে। দারিদ্র্যের কশাঘাতের মধ্যেও তিনি পড়ালেখা ছাড়েননি। লুধিয়ানা কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়তেন এবং ২০০২ সালে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। স্নাতক শেষে সে বছরই যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান।

যুক্তরাজ্যে গিয়ে কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে তেজিন্দরকে। শুরুতে তার কাজ ছিল মাটিকাটা, বেতন ৪০ পাউন্ড। কিন্তু একটি অ্যাপার্টমেন্টে সপ্তাহে ছয় হাজার রুপি ভাড়ায় তাকে থাকতে হতো। এ কারণে তিনি বাড়তি আয়ের জন্য বাসন মাজার কাজ খুঁজে নিয়েছিলেন। এর পাশাপাশি তিনি ইংরেজি শেখার কোর্সও করেছিলেন। একপর্যায়ে ভ্যানচালক হিসেবে কাজ শুরু করেন এবং মাথার ঘাম পায়ে ফেলেছেন। একটি ব্যাংক থেকে তিন লাখ রুপি ঋণ নিয়ে ডেলিভারি ভ্যান কিনেছিলেন। সেই ভ্যান নিজেই চালিয়ে পানীয় সরবরাহ শুরু করেন। এভাবেই শুরু হয় তার মদের ব্যবসা। এই ব্যবসায় সফল হয়েছেন কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার, তিনি কখনো মদ্যপান করেননি। পরে মদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বিক্রি করে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা শুরু করেন। উদ্দেশ্য ছিল, ব্যবসা পরিবর্তন করলে স্ত্রী-সন্তানের সঙ্গে একটু বেশি সময় কাটানো যাবে।

তেজিন্দরসিং শেখন রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় সফল হন। তার প্রতিষ্ঠানের নাম রেডস্কাই হোমস গ্রুপ। এই প্রতিষ্ঠান লন্ডনের আশপাশে ৫০টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করে। সেগুলো সব ভাড়া দেওয়া। ২০০৫ সালে আবারও ঋণ নিয়ে একটি বাড়ি কেনেন। পাঁচ হাজার বর্গফুট আয়তনের এই বাড়িতেই পরিবার নিয়ে থাকেন তিনি। আর ফ্ল্যাট ভাড়ার অর্থ দিয়ে ধীরে ধীরে ব্যাংকঋণ পরিশোধ করেছেন।

মাটি কাটার শ্রমিক ও রেস্তোরাঁয় বাসন মাজা সেই টগবগে তরুণ এখন যুক্তরাজ্যে ধনাঢ্য ব্যক্তি। ভারতীয় মুদ্রামানে ৬০০ কোটি রুপির সম্পদের মালিক তিনি। শুধু বাসাভাড়া থেকেই তার প্রতি মাসে আয় ৩১ কোটি রুপি। সম্প্রতি তিনি ২০২ কোটি রুপির একটি নতুন প্রকল্প চালু করেছেন। পাঞ্জাবে তার নিজ গ্রামের নামে ওই ভবনটির নাম দিয়েছেন বারুনদি কোর্ট।

২০০৭ সালে তিনি বিয়ে করেন সুখবীর কউর শেখনকে। তাদের দুই ছেলেসন্তান। তেজিন্দরের ব্যবসার ৫০ শতাংশের অংশীদার তার স্ত্রী সুখবীর কাউর। বারুনদিতে বর্তমানে তার একটি খামারবাড়ি আছে।

একসময় অনেক কষ্টে দিন পার করা তেজিন্দর এখন বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন। মাকে নিয়ে ঘুরেছেন পৃথিবীর ৪৭টি দেশে।




খবরটি এখনই ছড়িয়ে দিন

এই বিভাগের আরো সংবাদ







Copyright © Bangla News 24 NY. 2020