সিলেটের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আমিনুল ইসলাম লিটনকে বয়কটের দাবি জানিয়েছে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট ও গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল। মঙ্গলবার ১১ এপ্রিল’ গণমাধ্যমে দুটি সংগঠনের পক্ষে পাঠানো এক যুক্ত বিবৃতিতে এই দাবি জানানো হয়।
গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট সিলেট জেলার সমন্বয়ক ও গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল সিলেট নগর শাখার সভাপতি বিশ্বজিৎ চন্দ্র শীল,সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট সিলেট নগর শাখার সভাপতি সঞ্জয় কান্ত দাস ও বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন সিলেট জেলা সংসদের আহ্বায়ক মনীষা ওয়াহিদ এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সদ্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত সভাপতি আমিনুল ইসলাম লিটনের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নিগ্রহের একাধিক অভিযোগ বিভিন্ন সমাজিক মাধ্যমে এসেছে। ভুক্তভোগীদের এসব অভিযোগ নতুন এবং বহু পুরাতন। তাই অভিযোগগুলিকে যথাযথ বিবেচনায় নিয়ে শুধু অব্যাহতির মধ্য দিয়ে দায়মুক্তি নয়, এধরণের কার্যক্রমের সাথে যুক্ত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আইনী ও বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু করার দাবি জানাই৷ একই সাথে ভুক্তভোগী অভিযোগকারীদের শারিরীক,মানসিক ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিতেরও দাবি জানাই।
আমিনুল ইসলাম লিটন তার ফেইসবুক পোষ্টে অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে কালাকানুন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার হুমকি ও সাম্প্রদায়িক উস্কানি দেয়ার চেষ্টা করেছেন-বলে আমরা মনে করি। এ ব্যাপারে সকলকে সচেতন থাকার আহ্বান জানাই।
বিবৃতিতে বলা হয়, সিলেটসহ গোটা বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক আন্দোলন বিকশিত হয়েছে সামাজিক অন্যায় ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে লড়াই করে। ফলে সামাজিক ও রাজনৈতিক সংকটে কর্পোরেট সহায়তায় নয়, গণমানুষের পক্ষে দাঁড়িয়েই সাংস্কৃতিক আন্দোলনের বিকাশ ঘটতে পারে। কিন্তু বর্তমান আওয়ামী ফ্যাসিবাদী শাসনামলে গণমানুষের সংস্কৃতি চর্চা অনেকখানি লোপ পেয়েছে।
ফ্যাসিস্ট শাসকদের সকল অপকর্মের নিরঙ্কুশ সমর্থক গোষ্ঠীর ভূমিকা পালন করার মধ্য দিয়ে যে নৈতিক অবনমন ঘটেছে এর ফলশ্রুতিতে সকল অপকর্মকে বৈধতা দেয়ার প্রবণতা তৈরি হয়েছে। যেকোন ভিন্নমত কিংবা প্রতিবাদকে সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী বলে চিহ্নিত করার অপপ্রয়াস চালায়। নারী নিপীড়নের ঘটনায় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের বিবৃতিতে আমরা একই সুর প্রত্যক্ষ করেছি৷ তবে পরবর্তীতে প্রতিবাদের মুখে তাঁরা তাদের অবস্থান পরিবর্তন করে আমিনুল ইসলাম লিটনকে সভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি দেন।
কিন্তু আমরা মনে করি, শুধু অব্যাহতি নয়, এধরণের প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিচার নিশ্চিত করতে সকলের সচেষ্ট ভূমিকা প্রয়োজন৷ একইসাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সকল প্রকার নিপীড়নের সমর্থকদের সামাজিকভাবে বয়কটের মাধ্যমে একটি সুস্থ নিরাপদ ও গণমানুষের সংস্কৃতি চর্চার পরিবেশ তৈরি করতে হবে৷