ফেঞ্চুগঞ্জ ডালুছড়া চা-বাগানে চা-শ্রমিকের ১০ দফা বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (২৫ জানুয়ারি) সংগ্রাম কমিটির কেন্দ্রীয় সদস্য শ্রমিকনেতা বর্মা মৃধার সভাপতিত্বে এবং সংগঠক মনীষা ওয়াহিদের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন চা-শ্রমিকের ১০ দফা বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক এস এম শুভ, কেন্দ্রীয় সদস্য ও মোমিনছড়া চা-বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি লিটন মৃধা, ডালুছড়া চা-বাগানের শ্রমিক রীতা মৃধা, আরতি বাউরি, সুবল বাউরি এবং শ্রীমতী কুর্মি।
সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশের সব চা-বাগানে শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১৭০ টাকা হলেও ডালুছড়া চা-বাগানের শ্রমিকদের মজুরি এখনো মাত্র ৯৯ টাকা। ইতিপূর্বে যখন মজুরি ছিল ১২০ টাকা, ১০২ টাকা তখনও শ্রমিকদের ৯৯ টাকা মজুরি দেয়া হত। বাগান মালিক শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি না দিয়ে বছরের পর বছর ঠকিয়ে যাচ্ছেন। বাগানের শ্রমিকরা আজ দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, অন্যান্য বাগানে সপ্তাহে ৭ দিনের মজুরি দেয়া হলেও ডালুছড়া চা-বাগানের শ্রমিকদের দেয়া হয় ৬ দিনের মজুরি। শ্রমিকদের কোন রেশন দেয়া হয় না। শ্রমিকরা রেশনের দাবি করলে ম্যানেজমেন্ট চাষের অযোগ্য জমিতে চাষ করতে বলেন। শ্রমিকদের চিকিৎসার জন্য ন্যূনতম কোন ব্যবস্থা রাখেন নি বাগান মালিক। চিকিৎসক নেই, ধাত্রী নেই। কেউ অসুস্থ হলে বাইরে চিকিৎসা নিতে হয় শ্রমিকদের, কিন্তু শ্রমিকদের চিকিৎসার খরচ বহন করার মত আর্থিক সামর্থ্যও নেই। ঘরবাড়ি মেরামতের জন্য প্রতি বছর বরাদ্দের নিয়ম থাকলেও শ্রমিকদের কিছুই দেয়া হয় না। শ্রমিকদের আর্থিক সংগতি না থাকায় সন্তানদের পড়াশোনা করাতে পারছেন না। বাগান সম্প্রসারণের উদ্যোগ না থাকায় নতুন শ্রমিক নিয়োগ দেয়া হয় না, বিধায় ঘরে ঘরে বেকারের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
সভাপতির বক্তব্যে শ্রমিকনেতা বর্মা মৃধা বলেন, যদি ডালুছড়া চা-বাগানের শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি অবিলম্বে দেয়া না হয় তাহলে বাগান বন্ধ রেখে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। ডালুছড়া চা-বাগানের শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি প্রদান ও অন্যান্য মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে উপজেলা প্রশাসনকে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানাচ্ছি।
সমাবেশ শেষে ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির লক্ষ্যে ডালুছড়া চা-বাগানের মালিকের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন আছে বলে উপস্থিত শ্রমিকদের অবহিত করেন। পরবর্তীতে সিলেটের জেলা প্রশাসক, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এর নিকট স্মারকলিপির অনুলিপি প্রদান করা হয়।