মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার একটি বাসায় দেড় বছর ধরে আটকে রেখে এক গৃহকর্মী কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গৃহকর্মী কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে ইতিমধ্যে পুলিশ ধর্ষক চন্দন ধরকে (৪৫) গ্রেফতার করেছে। রবিবার (১৭ এপ্রিল) রাত তিনটায় মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল ও সদর থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে চন্দন ধরকে সদর উপজেলার জগৎসি সূত্রধরের বাড়ী থেকে আটক করে।
এর আগে শনিবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে শহরের স্টেশন রোডের ওই বাসা থেকে ১৭ বছর বয়সী কিশোরীকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এ সময় শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ বাসা থেকে সাধনা ধর (৬০) ও পূর্ণা ধর (৩০) নামে দুই নারীকে আটক করেছে। এ ঘটনার পর থেকে ধর্ষক মূল চন্দন ধর পলাতক ছিল।
ভুক্তভোগীর ঐ গৃহকর্মীর দাবি, গত দেড় বছর আগে শহরের স্টেশন এলাকার একটি তিন তলা ভবনের বাসিন্দা ‘অরেঞ্জ ফ্যাশনের’ মালিক চন্দন ধরের (৪৫) বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ নেয় সে। কাজে যোগ দেওয়ার কয়েকদিনের মাথায় গৃহকর্তা চন্দন ধর তাকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে গত দেড় বছর ধরে ধর্ষণ করে আসছিল। ধর্ষনের বিষয়টি বাসার সবাই জানার পরও কেউ বাঁধা দেয়নি। এ সময় তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, শনিবার সকালে আবারও ধর্ষণের চেষ্টা করলে সে বাঁধা দেয়। এতে চন্দন শারীরিক নির্যাতন করে তার হাত-পা বেঁধে একটি রুমে ফেলে রাখে।
স্থানীয়রা গনমাধ্যম কর্মীদের জানান, শনিবার মেয়েটির চিৎকার শুনে তারা পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে শ্রীমঙ্গল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হুমায়ুন কবির পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল থেকে কিশোরীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান। এ সময় তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের চিহ্ন দেখা গেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শ্রীমঙ্গলের এ আলোচিত ঘটনার পলাতক ধর্ষক চন্দনকে ধরতে শ্রীমঙ্গল ও সদর থানা পুলিশ যৌথ অভিযানে নামে। অবশেষে জেলার সদর উপজেলার জগৎসি সূত্রধর বাড়ী থেকে পুলিশের যৌথ অভিযানে রবিবার রাত ৩ টায় তাকে আটক করা হয়েছে। এ অভিযানে সন্ধ্যার পর থেকে র্যাবও মাঠে কাজ করলেও পুলিশই মূল আসামি কে চন্দন কে আটক করতে সক্ষম হয়।
শ্রীমঙ্গল থানার পুলিশ পরিদর্শক হুমায়ুন কবির জানান, এ ঘটনায় বাসা থেকে দুই নারীকে আটক করা হয়েছে। চন্দন পলাতক ছিল। অভিযান চালিয়ে প্রধান অভিযুক্ত চন্দন ধরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সময় তিনি আরও বলেন, ভুক্তভোগীর শারীরিক পরীক্ষার জন্য মৌলভীবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নিজেই বাদী হয়ে চন্দন ধরসহ তিন জনকে আসামি করে মামলা করার কথা।