1. sparkleit.bd@gmail.com : K. A. Rahim Sablu : K. A. Rahim Sablu
  2. diponnews76@gmail.com : Debabrata Dipon : Debabrata Dipon
  3. admin@banglanews24ny.com : Mahmudur : Mahmudur Rahman
  4. mahmudbx@gmail.com : Monwar Chaudhury : Monwar Chaudhury
সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ শায়েস্তাগঞ্জ ডাকবাংলো
রবিবার, ২৬ মার্চ ২০২৩, ০৭:৪৭ পূর্বাহ্ন




সংস্কারের অভাবে জরাজীর্ণ শায়েস্তাগঞ্জ ডাকবাংলো

শায়েস্থাগঞ্জ প্রতিনিধি :
    আপডেট : ৩০ জানুয়ারী ২০২৩, ৭:২৭:৪৫ অপরাহ্ন

হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্য শতবর্ষী ডাকবাংলো এখন সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে জরাজীর্ণ অবস্থায় উপনীত হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, কর্তৃপক্ষ নজর দিলে জরাজীর্ণতা কাটিয়ে পুনরায় ব্যবহার উপযোগী করা যাবে এই ঐতিহাসিক ডাকবাংলোটি। একইসাথে টিকে থাকবে শতবর্ষী ঐহিত্য।

জানা গেছে, অরক্ষিত অবস্থার মাঝেও কোনো রকমে টিকে আছে এই ডাকবাংলো। যা মালিকানা সড়ক ও জনপথ বিভাগের। উপজেলার অনেক ঐতিহাসিক স্থাপনার মধ্যে শতবর্ষী প্রাচীন এই স্থাপনাটি অন্যতম। তবে এ নিয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কোনো মাথাব্যাথা নেই।

সরেজমিনে দেখা যায়, ব্রিটিশ সরকারের শাসনামলে নির্মিত এই ডাকবাংলোটি শায়েস্তাগঞ্জ রেলস্টেশন রোড এলাকায় অবস্থিত। এটি একটি টিনের বহুচাল বিশিষ্ট দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা। এই বাংলোটি বর্তমানে অব্যবহৃত, পরিত্যক্ত থাকায় প্রায় নষ্ট হওয়ার পথে। বৃষ্টির দিনে টিনের চাল দিয়ে পানি পড়ে। এছাড়া দরজা জানালা নড়বড়ে অবস্থায় রয়েছে।

স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তিরা জানান, রাষ্ট্রপ্রধান থেকে শুরু করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মন্ত্রী-এমপি, দেশ-বরেণ্য সাহিত্যিক, সাংবাদিকসহ অনেক জ্ঞাণী-গুণী ব্যক্তিবর্গের আগমন ঘটেছে এই ডাকবাংলোতে। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মিজানুর রহমান চৌধুরী, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক আতাউল গণি উসমানী, হোসাইন মুহাম্মদ এরশাদ, তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ আজাদ, সাবেক সংসদ সদস্য সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক উপদেষ্টা জাকারিয়া খান চৌধুরী, বুয়েটে সাবেক ভিসি ড. রশিদ, তৎকালীন মৎস্য ও পশু সম্পদমন্ত্রী সিরাজুল হোসেন খান, প্রয়াত অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়াসহ আরো অনেকেই এই ডাকবাংলোতে রাত্রি যাপন করেছেন।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, ডাকবাংলোর সামনে সড়ক ও জনপথের জায়গায় দোকানপাট, গাড়ির স্ট্যান্ড থাকায় আড়ালে অযত্নে অবহেলায় পড়ে আছে ডাকবাংলোটি। এই ঐতিহ্যবাহী স্থাপনার সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করা দরকার। চারদিকের ময়লা পরিষ্কার করে আলোকিত করতে পারলে বাংলোটি তার পুরনো ঐতিহ্য কিছুটা হলেও ফিরে পাবে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: শফিকুর রহমান বলেন, ডাকবাংলোটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের একটি রেস্ট হাউজ। ৩৪ বছর সড়ক ও জনপথ বিভাগে চাকুরীর সুবাদে তিনি এটিকে কাছ থেকে দেখেছেন। এখানে অনেক বড় বড় জনসভা ও সমাবেশ হয়েছে। এখন শায়েস্তাগঞ্জের পরিধি অনেক বেড়ে যাওয়ায় ডাকবাংলোর কদর কমে গেছে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় এই ডাকবাংলোতে হানাদার বাহিনী ক্যাম্প করেছিল বলেও জানান এই বীর মুক্তিযোদ্ধা।

শায়েস্তাগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ অলিউর রহমান বলেন, ডাকবাংলোটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের। তৎকালীন সময়ে শায়েস্তাগঞ্জের সকল রাজনৈতিক সভা সমাবেশ এখনে হতো। বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের জন্য বিশ্রামাগার ছিল না, তাই এই ডাকবাংলোকে ব্যবহার করা হতো। বাংলোটি আজও শায়েস্তাগঞ্জের ঐতিহ্য বহন করে আসছে।

শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আ স ম আফজল আলী জানান, ১৯৯৮ সালে পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর নির্বাচনে পৌর পরিষদ গঠিত হলে পৌরসভার অস্থায়ী কার্যালয় হিসেবে দীর্ঘদিন এই ডাকবাংলোকে ব্যবহার করা হয়েছে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী গোলাম মর্তুজা বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে ২২এমএফ কোম্পানির একজন সৈনিক হিসেবে বালুমারা, রেমা-কালেঙ্গা এলাকায় যুদ্ধে ছিলাম। সেখান থেকে শুনেছি শায়েস্তাগঞ্জ ডাকবাংলোতে পাকিস্তান বাহিনী ক্যাম্প করেছে’।

হবিগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিল মোহাম্মদ ফয়সাল বলেন, ঐতিহ্যবাহী এই ডাকবাংলোতে ভিআইপি ব্যক্তিদের পদচারণা বাড়াতে মেরামত করার জন্য বরাদ্দ চেয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরে শীঘ্রই আবেদন করা হবে। এরপর বরাদ্দ পেলে মেরামত করে হারানো ঐতিহ্য ফেরানো যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।




খবরটি এখনই ছড়িয়ে দিন

এই বিভাগের আরো সংবাদ







Copyright © Bangla News 24 NY. 2020