শীত মৌসুম শুরু হতে না হতে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে দেশি পানের সরবরাহ কমে গেছে। এ অবস্থায় পানের বাজারে যেন আগুন লেগেছে। পানের বিড়া বিক্রি হচ্ছে তিন গুণের অধিক দামে। পানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সুপারির দাম। ফলে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে পানের খিলি।
রবিবার (১১ ডিসেম্বর) উপজেলার শমশেরনগর, ভানুগাছ, আদমপুর, রানিবাজার, পতনঊষারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, শীত শুরু হতেই পানের সরবরাহ কমে গেছে। ফলে এখন তিনগুণের অধিক দামে দেশি পান বিক্রি হচ্ছে।
বাজারের খুচরা ও পাইকারি পান বিক্রেতা তুহিন মিয়া জানান, আগে প্রতিদিন বরিশাল, কুষ্টিয়া ও যশোরসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দেশি পানের যে সরবরাহ ছিল এখন তার অর্ধেকেরও কম হচ্ছে। ২ সপ্তাহ আগে দেশি পান প্রতি বিড়া (৮০টি পান) বিক্রি হয়েছে ৪০-৫০ টাকা দরে। এখন সে পানের বিড়া বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা দরে। একটু ছোট আকারের পানের বিড়া বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা থেকে ১৫০ টাকায়। আর আকারে বড় পান বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়।
পান-সিগারেট বিক্রেতা আনিছ, সাজু, কয়ছর, ফয়সল, নাজিম মিয়া বলেন, পানের অগ্নিমূল্যের মাঝে আরো বড় সমস্যা হচ্ছে প্রতি বিড়া পানে ৪ থেকে ৫টি পান কম থাকে। পানের দাম বৃদ্ধির সঙ্গে সুপারির দাম কেজিপ্রতি ৫০ থেকে ৭০ টাকা করে বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে শুকনো সুপারি প্রতি কেজি ৪০০ টাকা করে কেনা গেলেও এখন সে সুপারি কিনতে হয় ৪৫০ থেকে ৪৭০ টাকায়। তার সঙ্গে কাচা সুপারিপ্রতি গা (১২টি সুপারি) ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হলেও এখন সে সুপারি ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় কিনতে হয়। তাই সব পান সিগারেট বিক্রিতা মিলে বাড়তি দানে পানের খিলি বিক্রি করছেন। তারা সর্বসম্মতি ক্রমে একটি খিলি ৫ টাকার স্থলে ৮ টাকা, ২টি খিলি ১৫ টাকা ও ৩টি খিলি বিক্রি করছেন ২০ টাকা দরে।
পান ব্যবসায়ীরা আরো বলেন, খাসিয়া পানের দাম কম থাকলেও এ পান কিছুটা ঝাঁজালো হওয়ায় ভাটি অঞ্চল ছাড়া সমতলের হাট বাজারে এ পান চলে কম। বাজারে পান কিনতে আশা সাদেক মিয়া বলেন, পানের দাম খুব বেড়েছে। পান খাওয়াও ছাড়তে পারছি না। তাই আগের চেয়ে পরিমাণে পান কম খেতে হচ্ছে।
এদিকে লাউয়াছড়া খাসিয়াপুঞ্জির সাজু মারচিয়াং বলেন, ‘বাজারে বাংলা পানের দাম বাড়লেও প্রাকৃতিক উপায়ে উৎপাদিত খাসিয়া পানের দাম বাড়ছে না।’
উপজেলার বিভিন্ন বাজারের বণিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে কয়েক সপ্তাহ ধরে পানেরও দাম বেড়েছে। এখন পানের দাম তিনগুণের অধিক বেড়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত পানের সরবরাহ বাড়ছে না ততক্ষণ পর্যন্ত পানের দাম কমার সুযোগ নেই।’