গত কয়েকদিন থেকে ঠান্ডার প্রকোপ বেড়েছে। সেই সাথে বেড়েছে নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহজনিত অসুস্থতাসহ শীতকালীন বিভিন্ন রোগবালাইও। এতে সব বয়সীরাই আক্রান্ত হচ্ছেন। বেশি আক্রান্ত শিশু এবং বৃদ্ধরা। তীব্র শীতের কারণে রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। গত কয়েকদিন থেকে এই সংখ্যা বাড়লেও এর শুরুটা হয় সাধারণত শীতের আগমনী বার্তার সাথেই। এতে গত দুইমাসে সিলেট বিভাগে আক্রান্ত হয়েছেন ১২ হাজার ৪৫ জন। এরমধ্যে শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণজনিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৫শ ২৪ জন এবং ডায়রিয়ায় ৮ হাজার ৫শ ২১ জন। তবে এতে কোনো মৃত্যুর খবর মিলেনি। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস বিভাগের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বা আইসিডিডিআর’বি তথ্য বলছে, দেশে প্রতি বছর পাঁচ বছরের নিচে প্রায় ২৪ হাজার ৩শ শিশু নিউমোনিয়ার কারণে মারা যায়। সে হিসাবে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে নিউমোনিয়ায় প্রতিদিন গড়ে মারা যায় ৬৭ জন। এদের ৫২ শতাংশ শিশু কোনো চিকিৎসা না পেয়ে বাড়িতেই মারা যায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১৪ নভেম্বর থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত সিলেটসহ সারা দেশে শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণজনিত রোগে আক্রান্ত হয়েছেন ৫৮ হাজার ৪শ ৭৮ জন। এর মধ্যে মারা গেছেন ৮৫ জন। শীতকালীন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৪৭ হাজার ১শ ৯০ জন। আর এতে মারা গেছেন ৩ জন।
বিভাগভিত্তিক তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে সিলেট বিভাগে ৩ হাজার ৫শ ২৪ জন ছাড়াও ঢাকা বিভাগে (মহানগর ব্যতীত) আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ হাজার ৩শ ৭৫ জন, চট্টগ্রামে ২০ হাজার ১শ ১০ জন, খুলনায় ৭ হাজার ৮শ ৯২ জন, ময়মনসিংহে ৪ হাজার ৩শ ৬৫ জন, রাজশাহীতে ২ হাজার ৪শ ২৬ জন, রংপুরে ২ হাজার ১শ ৬৮ জন এবং বরিশালে ৩ হাজার ৬শ ১৮ জন।
এসব আক্রান্তদের মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে সর্বোচ্চ ৫৬ জন মারা গেছেন। ময়মনসিংহে ২৫ জন, খুলনা ও বরিশালে ২ জন করে মারা গেছেন। বাকি বিভাগগুলোতে শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণে কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি।
এছাড়া সিলেট বিভাগে এ সময়ে ডায়রিয়ার ৮ হাজার ৫শ ২১ জন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়। এরবাইরে ঢাকা বিভাগে আক্রান্ত হয়েছেন সর্বোচ্চ ২ লাখ ৩১ হাজার ৫শ ৪৮ জন, চট্টগ্রামে ৩৫ হাজার ৪শ ৪৩ জন, খুলনায় ১৯ হাজার ৪শ ৩২ জন, রাজশাহীতে ১৫ হাজার ৫শ ১১ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ১৪ হাজার ৭শ ৩৮ জন, রংপুরে ১০ হাজার ৪শ ৭৩ জন, বরিশালে ১১ হাজার ৫শ ১৪ জন। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বিভাগে ৩ জন মারা গেছেন।