ঐতিহ্যের স্বাক্ষর বহন করে আসছে সুনামগঞ্জের মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র। এ চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র থেকে চিকিৎসা নিয়ে সাধারণ মানুষ স্বস্তি পেতো। বিশেষ করে মহিলা রোগীরা এ কেন্দ্রে সেবা নিতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করতেন। চিকিৎসা সেবায় এ কেন্দ্রটি সুনামগঞ্জবাসীর ভরসার কেন্দ্রস্থল হিসেবে পরিণত হয়েছিল। কিন্তু গেল এক বছর ধরে এ কেন্দ্রে এসে সেবা পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ। যে কেন্দ্র থেকে মহিলা রোগীদের নানা রোগের চিকিৎসা সেবা দেয়া হতো আজ সেসব সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ রোগীরা।
২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে মেডিকেল অফিসার (ক্লিনিক) ডা. জসীম উদ্দিন খান অবসরে যাওয়ার পর থেকে স্বাভাবিক ডেলিভারী থেকে শুরু করে সিজারিয়ান অপারেশন মোটেও হচ্ছে না। দরিদ্র মহিলা রোগীরা এসে সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন। টুকটাক সেবা ব্যতীত জরুরি কোন সেবা পাচ্ছেন না তারা। এক বছর যাবত একজন এনেস্থিসিয়ার ডাক্তার দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে এই সেবা কেন্দ্রটি। ডাক্তার নিয়োগের বিষয়টি নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন না কেউ। এক বছর যাবত সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুনজর পড়ছে না এ কেন্দ্রের প্রতি। ফলে সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন জেলার হাজার হাজার খেটে খাওয়া মানুষ।
এ কেন্দ্রে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে সেবা নিতে আসা আয়মনা বেগম বলেন, আমি দুর্গম এলাকা থেকে গর্ভের বাচ্চা নিয়ে এসেছি সেবা নিতে কিন্তু এখানে এসে দেখি ডাক্তার নেই। আমি গরীব। আমার স্বামী দিন মজুর। ডেলিভারী নিয়ে ভীষণ সমস্যায় আছি। অপর মহিলা রোগী সূর্যবান বললেন, পেটে বাচ্চা নিয়ে আমি এসেছিলাম মাতৃমঙ্গলের ডাক্তার দেখাবো। কিন্তু এসে শুনি একবছর ধরে এখানে ডাক্তার নেই। টাকা পয়সা নেই। কোথায় গিয়ে ডাক্তার দেখাবো এ চিন্তা করছি।
এভাবে প্রতিদিন অগণিত রোগী এ কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে এসে নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। হতাশায় কাটছে জেলার শত শত দরিদ্র পরিবারের বিশেষ করে মহিলা ও শিশু রোগীদের জীবন। এলাকাবাসীর দাবী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসক নিয়োগ দিয়ে সুনামগঞ্জের মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে এসে সাধারণ লোকজন যাতে সেবা পায় সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে।