সারাদেশে হত্যা, নির্যাতন ও সাম্প্রদায়িক হামলার বিচার দাবিতে সুনামগঞ্জে মানববন্ধন করেছে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠি ও বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। শনিবার (৩০ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টায় যৌথ উদ্যোগে শহরের আলফাত স্কয়ার ট্রাফিক পয়েন্টে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি গৌরী ভট্টচার্য্যর সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠি জেলা সংসদের সাধারন সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় মানববন্ধন সভায় ‘শিক্ষা,সংস্কৃতি-মনুষ্যত্ব রক্ষায় রুখো সাম্প্রদাযিক সন্ত্রাস’ সারাদেশব্যাপী অব্যাহত শিক্ষক নির্যাতন-নিপীড়ন, হত্যা ও নড়াইলসহ বিভিন্ন স্থানে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর,মন্দিরে হামলা প্রতিমা ভাংচুর,অগ্নিসংযোগসহ সাম্প্রদায়িক এসব ধারাবাহিক ঘটনাকে সুপরিকল্পিত দাবি করে সকল হামলার হামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও দ্রুত বিচারের দাবি জানানো হয়।
সভায় বক্তব্য রাখেন,উদীচীর সহ-সভাপতি রমেন্দ্র কুমার দে মিন্টু,মহিলা পরিষসহ সভাপতি সঞ্চিতা চৌধুরী,বাংলাদেশ কমিউনিষ্টপার্টি সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি এড. এনাম আহমেদ,জেলা যুব ইউনিয়নের সভাপতি আবু তাহের মিয়া,জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি আসাদ মণি প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা বলেন,বাঙ্গালীর বিবেকের জায়গা থেকে আমরা কথা বলতে চাই সেই তিস্তা নদী,এস এম সুলতানের মাটি নড়াইলকে বিশ্ববাসী জানতো অন্য একরকম ভাবে। কিন্তু আজ এস এম সুলতানের জন্মস্থান ও সংস্কৃতি এবং সম্প্রীতির উর্বরভূমি নড়াইলে সাম্প্রতিক সময়ে শিক্ষকদের উপর হামলা,জুতার মালা পড়িয়ে হত্যা করা,হিন্দু সম্প্রদায়ের একাধিক বাড়িঘর,মন্দিরে হামলা,ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং যৌন নিপীড়নের মতো বিভৎসতার কথা আজ বিশ্ববাসী জানছে আরেক রকমভাবে।
তারা বলেন সাম্প্রতিক স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় সিলেট বিভাগ সিলেট সুনামগঞ্জের মানুষজন যখন বন্যা কবলিত,মানুষ যখন জীবন জীবিকার পাশাপাশি নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য যুদ্ধ করছেন ঠিক তখন সমাজের একটা শ্রেণীর কিছু মানুষ নামের নরপশু ঝাপিঁয়ে পড়ল দেশের নড়াইলসহ বিভিন্নস্থানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশে সংখ্যালঘু শিক্ষকদের উপর হামলা, হত্যা, মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করে জেলে প্রেরণ, সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলাসহ অগ্নিসংযোগের মতো জঘন্য ঘটনার জন্ম দেয়া হলো। ১৯৭১ সালে পাকিস্থান সরকারের শোষন নিপীড়নের বিরুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর আহবানে স্বাধীন ভূখন্ডের একটি লাল সবুজের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য তৎকালীন সাড়ে সাতকোটি মানুষ যাদের পরিচয় ছিল সবাই বাঙ্গালী তারা মুক্তিযুদ্ধে জীবন বাজি রেখে অংশগ্রহন করেছিলেন। ঐ সময়টাতে ত্রিশ লক্ষ শহীদ জীবন আত্মহুতি দিয়ে দু’লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশটিতে আজ একের পর সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ঘটেই চলেছে।
বক্তারা সাম্প্রতিক সময়ে মানুষগড়ার কারিগর হিসেবে দেশের বিভিন্নস্থানে শিক্ষকদের উপর হামলা মামলা,জুতার মালা পড়ানো হত্যা সহ নড়াইলসহ দেশের বিভিন্নস্থানে সাম্প্রদায়িক হামলার ঘটনার ইন্দনদাতাসহ যারাই ঘটনার সাথে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত আছেন তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি প্রদানের জন্য সরকােেরর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট দাবী জানান। অন্যতায় আগামী কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার ও হুশিয়ারী উচ্চারন করেন মানববন্ধনকারীরা।