মাশূক ইবনে আনিস’র একগুচ্ছ কবিতা
নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ জানুয়ারি ২০২২, ১১:২৯ অপরাহ্ণআগুনের মত
১. মিথ্যেটি মুখমন্ডলে ফুটেওঠে প্রতিরোজ—আমি তার খোঁজ করি না ফের— মিথ্যেটি অগ্নিকাণ্ড ঘটিয়েছিলো আমার তল্লাটে, এখনো দগ্ধিভুত শরীর, আত্মায় আগুন জ্বলছে কাটেনি এখনও জের!
২. পাখিটি উড়াল দিলো শূন্যে— পেছনে পড়ে থাকলো কালো কালো অভিশাপ,
মায়ার আহার-জল-দুধ-কলা আর সোনার পিঞ্জিরা যেনো; স্মৃতিজাগানিয়া মহাপাপ!
৩. সুখস্মৃতিময় বেদনার কাঁটা লাগে এখনও আঙ্গুলের ডগায়— শুধু মনেলাগা ভুলে গেছে মনের মানুষ, মনে রাখারাখি মানায় না আর ;
মনে ধরেরাখা মানে; গর্হিত কাজ! মুদ্রাদোষ
৪. কাগজটি হাওয়াভরে উড়েউড়ে কারও আঙিনায় যেয়ে পড়েছিলো— কাগজের ভাঁজে ছিলো আমার নামের আঁকাবুকি, নামের সে অক্ষরে হয়তো-বা কারও চোখ
আজন্ম অবনত র’বে— চিরকাল উন্মুখি…
এসেক্স, ইউকে
প্রকাশ:২৮ ডিসেম্বর ২০২১
আমি
উলুকধ্বনিময় রাত্রির চোখে জল ঝরছে
ঝড়তান্ডবে ভেঙ্গে গেছে ডাল
বাসাটির পাশে এক আহত বাবুই
শিল্পসন্দিহান ক্ষুদে পাখিটি সঙ্গিটির জন্য
ঋতি প্রার্থনা করে
দোসর চোখের আলোর ভেতর
অকাধিপতির নামে!
আমিও মানবজন্মে সাধ করে কন্ঠিকা পড়েছি গলে বড়ো আঁটসাঁট, শুধু ফাঁস লাগে
নিজেকে মনে হয় ক্ষুধিরাম বসু
তবু; রমনীকেশরের মায়াকুন্ডে পড়ে থাকে মন— পার্বতীর নিকুঞ্জবিহার খুঁজে
ঝরেপড়া সূর্যের মত গোধূলি সন্ধ্যায় বহু ঘাঁটনের নিমিত্তে
মৃত্যুকে সুস্বাদু কামরাঙার মতো—লবন লাগিয়ে খেয়ে ফেলে—
একেবারে নিমজ্জিত হই গহিনগহনে!
আহারে মা—আমার আদরের মাই
তোমার চাকনমুখ ভেসে ওঠে—
আমার দুচোখ ভরে
আমি— ছেঁচরের মত দ্রুত পালাই
তোমার সামনে— কী নিয়ে দাঁড়াই-গো মাই?
কোন মুখে বলি, দ্যাখো মা; তীর্যকচোখে
আমি কেমন জীবন ও মরণের অযোগ্য
একখন্ড ভাসমান মেঘের দলা
যেন একখন্ড প্রকীর্ণদ্রবণ।
আনন্দে নাম কিত্তিকা
আনন্দবহনেও বিরক্তি আছে, আছে অবসাদ, আছে গ্লানি, ক্লান্তিও আছে—এইকথা বুঝিয়ে দিতে সুহার্তকে সোহানার আকুল আকুতি টেনে নিয়ে গিয়েছিলো কটালরাত্রির অন্তর্জলির উপলক্ষে। আহারে-
সোহানা! পেট-ভরে-ওঠা জন্মবেদনার আনন্দের ভার যে কী যাতনাবাহী কেহ না জানুক; তুমিতো জানো! এক অত্যাশ্চর্য সুখের লাগি কী-ই-না করেছো হে নারী কৃত্তিকা , রাতকে ভোর, ভোরকে দুপুর, দুপুরকে সন্ধ্যা,
সারারাত ঝিঙ্গুরের শব্দে আগমন প্রতীয়মান হয়েছে সকলেরই, সোহানা ; রক্ত করেছো ঘাম—ঘাম হয়েছে ঝুমরির মতো ধৃষ্ট, আর ; তুমি তুলেছো আনন্দ আওড়,
সুহার্ত শুধু সুখের অবগাহনে নিজের মতোই ছিলো—
চির নির্বিকার। যে-ঠোঁটে ছিলো কুসুম-কান্তি সেই ঠোঁটে
কেবলই চিলকায় এক আধিদৈবিক আদিম আনন্দকথা।
এবিএ/৯ জানুয়ারি