মৌলভীবাজারে হাইল হাওর তীরে নীরব সবজি বিপ্লব
নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ জানুয়ারি ২০২৩, ৯:৫৫ পূর্বাহ্ণমৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার হাওর তীরবর্তী গ্রাম উত্তরসূর। এই গ্রামেই কৃষি বিপ্লবের নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এখানে বিস্তীর্ণ হাইল হাওরের দক্ষিণ তীর। শীতের মৌসুমে সবজি চাষাবাদ করে সফলতার মুখ দেখেছে একটি খামার।
সরেজমিনে শ্রীমঙ্গল উপজেলার উত্তরসূর গ্রামে দেখা যায়, হাইল হাওরের তীরের গ্রাম উত্তরসূরে গড়ে উঠেছে কাজী অ্যান্ড আজাদ অ্যাগ্রো ফার্ম। প্রায় আট একর জমির মধ্যে এই খামার গড়ে তুলেছেন উদ্যোক্তা কাজী আয়েশা। সেখানে এবার চাষ করা হয়েছে বিভিন্ন রকম শীতকালীন সবজি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সাফল্য এসেছে লাউ চাষ করে। খামারটির চারপাশ এখন লাউয়ের ছাউনিতে ঘেরা। পাশাপাশি চাষ করা হয়েছে লাল শাক, কলমি শাক, বেগুনসহ বিভিন্ন শাক সবজি, যা বাণিজ্যিকভাবে যাচ্ছে পার্শ্ববর্তী বাজারগুলোতে।
শুধু সবজিই নয় এখানে পরিকল্পিতভাবে রোপণ করা হয়েছে বিভিন্ন জাতের আম, লিচু, আনার, পেয়ারার গাছ। আধুনিক পদ্ধতিতে রোপণ করা হয়েছে বরই গাছ ও মরিচের গাছ। সেখান থেকে এরই মধ্যে ফল তুলে বাজারে পাঠানো হয়েছে।
খামারের মধ্যখানে আছে একটি পুকুর। এতে চাষ করা হচ্ছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। এছাড়া ডেইরি ও ক্যাটেল ফার্ম তৈরির জন্য একটি শেড নির্মাণ করা হয়েছে। কয়েক মাসের মধ্যে এখানে তুলা হবে প্রায় ৪০টি গরু। সবমিলিয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলে নতুন এই খামার আশার আলো দেখিয়েছে।
কাজী অ্যান্ড আজাদ অ্যাগ্রো ফার্ম সূত্রে জানা যায়, লাউয়ের চারা রোপণের ৬০ থেকে ৭০ দিনের মধ্যে প্রথম সবজি তোলা যায়। লাউ প্রধানত শীত মৌসুমের সবজি। শীতকালীন চাষের জন্য ভাদ্রের প্রথমে আগাম ফসল হিসেবে চাষ করা যায়। তিন একর জমিতে লাউ চাষের জন্য মাচা থেকে শুরু করে সব মিলিয়ে খরচ পড়েছে পঞ্চাশ হাজার টাকা। কয়েক মাসের মধ্যে এক লাখ ৮০ হাজার টাকার লাউ বিক্রি হয়েছে। সব ফসল অর্গানিক পদ্ধতিতে চাষ করা হয়েছে। এখন বাণিজ্যিকভাবে গরু পালন ও দুধ বিক্রির পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। সাথী ফসলের লভ্যাংশ থেকেই নতুন নতুন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
খামারের পরিচালক কাজী মামুন বলেন, আমাদের খামারটা চালু হয়েছিল এক বছর আগে। এরপর শীতকালীন সবজি চাষাবাদ শুরু করি। খামারের সাথী ফসল হিসেবে আমরা এগুলো চাষা শুরু করি। এখানে বাণিজ্যিকভাবে কৃষি পণ্য উৎপাদনের কোনো উদ্যোক্তা আগে ছিলেন না। ছোট করে শুরু করেছিলাম এখন অনেক বড় হয়েছে খামারটি। এ খামার নিয়ে আমাদের অনেক বড় পরিকল্পনা আছে।
তিনি আরো বলেন, কম সময়েই খামার লাভের মুখ দেখছে। ছোট ছোট গাছেও আম এসেছে। ছোট ছোট বরই গাছে বরই ধরেছে। হাওর তীরের মাটি উর্বর হওয়ায় ফসল ভালো হচ্ছে। লাউ চাষাবাদ করে দিগুণের বেশি লাভ হয়েছে। মাছ থেকেও লাভ হচ্ছে।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন মোনালিসা সুইটি বলেন, আমরা নতুন নতুন এলাকায় সবজি চাষের উদ্যোগ নিয়েছি। নতুন নতুন জমিতে আবাদ হচ্ছে। বিভিন্ন প্রদর্শনীর মাধ্যমে কৃষক ও উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করছি।