সুনামগঞ্জে ভোটের পাল্লায় ভারি মুকুট :ঘুম হারাম রুমেনের
নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ০৩ অক্টোবর ২০২২, ১২:০৪ পূর্বাহ্ণনির্বাচনের দিন যতোই ঘনিয়ে আসছে ততোই ভোট বাড়ছে মুকুটের। অপরদিকে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী অ্যাডভোকেট খায়রুল কবির রুমেনের পক্ষে জেলা সাধারণ সম্পাদক,সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্যরাও কাজ করে হতাশায় ভোগছেন জয় নিয়ে। দলের বিদ্রোহী প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি ও জেলা পরিষদের বর্তমান প্রশাসক নুরুল হুদা মুকুটের কাছে ধরাশায়ী হচ্ছেন সকলেই। ফলে সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনকে নিয়ে ক্রমেই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে সুনামগঞ্জের রাজনীতি। একইসাথে নির্বাচনী মাঠেও দেখা দিচ্ছে নানা নাটকীয়তা।
তবে, নুরুল হুদা মুকুটের অনুসারীদের আশঙ্কা বাড়ছে। তাদের দাবি-নুরুল হুদা মুকুটের জনপ্রিয়তায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পক্ষ থেকে ভোটারদের ভয়-ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে। তাছাড়া প্রতিটি উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের মুকুটের ভোট বেশি থাকায় শেষ পর্যন্ত সরকারি প্রভাব খাটিয়ে জয় ছিনতাই করারও আশঙ্খা মুকুট অনুসারীদের।
১৭ অক্টোবর সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচন। চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের দুই সহ সভাপতি।
জানাগেছে, চেয়ারম্যান পদে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন তৃণমূল আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নেতা জেলা পরিষদের সদ্য সাবেক চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি নুরুল হুদা মুকুট। তাঁর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড ও তৃণমূল জনপ্রতিনিধিদের সাথে নিবিড় যোগাযোগকে নির্বাচনী লড়াইয়ে ঢাল হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
বিগত ৫ বছরের দৃশ্যমান উন্নয়ন ও রাজনৈতিক আন্দোলন কর্মসূচিতে সক্রিয় অবস্থানের ফলে বিজয়ের পথে সুনামগঞ্জ আওয়ামী রাজনীতির এই মুকুট বিহীন সম্রাটকে এগিয়ে রাখছেন তার অনুসারী ও সমর্থকরা।
এদিকে জনপ্রিয়তার শীর্ষে থাকা মুকুটকে পরাজয় করতে প্রাণপণ চেষ্টা করছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী জেলা অওয়ামী লীগের সহ সভাপতি খায়রুল কবির রুমেন। জেলা আওয়ামী লীগের ক্ষমতাসীন নেতাদের আনুকল্য ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ছোট ভাই ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমনের প্রভাব কাজে লাগিয়ে মুকুটকে জেলা আওয়ামী লীগ থেকে অব্যাহতির চেষ্টা, দলের প্রার্থী হিসেবে প্রচার প্রচারণার মাধ্যমে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করাসহ নানা কর্মকাণ্ডে আলোচনায় আসতে যেন বেগ পেতে হচ্ছে রুমেনকে।
দলের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে একমাত্র সনদের উপর ভরসা করে বিবেদমান জেলার আওয়ামী লীগের গ্রুপিং কোন্দলে কতখানি নিজেকে মেলে তুলতে পারছেন এমন প্রশ্ন সাধারণ নেতাকর্মীদের।
নেতাকর্মীরা বলছেন, গেল ইউপি নির্বাচনে জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীর ভরাডুবি ঘটেছে। সবখানেই বিদ্রোহী প্রার্থীরা বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন। সুতরাং মনোনয়ন বাণিজ্যে অভিযুক্ত জেলা সভাপতি ও সম্পাদক সুনামগঞ্জের তৃণমূলে প্রত্যাখ্যাত। তাদের দাবি-দলের ত্যাগী এবং মুজিব আদর্শে অনুপ্রাণীত সকল ভোটাররা জেলা পরিষদ নির্বাচনে পছন্দের যোগ্য প্রার্থী হিসেবে নুরুল হুদা মুকুটকেই বেছে নিবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাহিরপুরের একজন ভোটার বলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর ছোটো ভাই জেলা সাধারণ সম্পাদক হয়েও গেল জেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী নুরুল হুদা মুকুটের কাছে বিপুল ভোটে হেরে যান। সেবার ব্যারিস্টার এম এনামুল কবির ইমন ভোট পান মাত্র ৪২০ টি। কিন্তু এবার তৃণমুলের কাছে অপরিচিত জেলা সাধারণ সম্পাদকের বড় ভাই অ্যাডভোকেট খায়রুল কবির রুমেন পরাজিত হবেন লজ্জাজনকভাবে।
নিজের বিজয় নিয়ে নুরুল হুদা মুকুট বলেন, দলীয় প্রতীকে নির্বাচন না হওয়ায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ সব দলের জনপ্রতিনিধি আমার সাথে রয়েছেন। আশা করছি এবারও বিপুল ভোটে বিজয়ের ধারা অব্যাহত থাকবে ইনশাল্লাহ।
এদিকে নির্বাচনে মুকুটকে হারাতে নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী খায়রুল কবির রুমেন। তাঁর নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতারা।
বিজয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশা ব্যক্ত করে খায়রুল কবির রুমেন বলেন, দলের সকল পর্যায়ের নেতার কর্মী আমার সাথে রয়েছে। নির্বাচনী প্রচারণায় বিগত ৫ বছরের অনিয়ম দুর্নীতি তোলে ধরছি। ভোটারদের উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। ভোটারও সাড়া দিচ্ছেন । আমার বিজয় নিশ্চিত।