ফলাফল মানবেন না নির্বাচনে হারলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প

নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ জুলাই ২০২০, ৬:২৬ পূর্বাহ্ণ
নির্বাচনের যত দিন এগিয়ে আসছে, ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা ততই কমছে। তাই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ভোট নিয়ে এমনই জরিপ রিপোর্ট প্রকাশিত হচ্ছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে। কিন্তু সেই ফলাফল মানতে নারাজ ট্রাম্প। ভোটে হারলে সেই নির্বাচনকেই তিনি মানবেন না বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, বর্ণবাদী পতাকা কনফেডারেট ফ্ল্যাগের সমর্থনেও কথা বলেছেন ট্রাম্প।
রোববার যুক্তরাষ্ট্রের একটি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ট্রাম্প।সেখানে তাকে সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষা রিপোর্টের বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল।সেই সমীক্ষা অনুযায়ী ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেনের থেকে প্রায় ১৫ পয়েন্ট পিছিয়ে আছেন ট্রাম্প।দেখা গিয়েছে ৫৫ শতাংশ জনগণ বাইডেনকে সমর্থন করছেন। ট্রাম্পের সমর্থন মাত্র ৪০ শতাংশ। কিন্তু ট্রাম্প এই সমীক্ষা মানতে নারাজ। তার বক্তব্য, এত দ্রুত এ সব সমীক্ষা তিনি মানতে রাজি নন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০১৬ সালের নির্বাচনের কয়েক মাস আগেও এমন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন ট্রাম্প।
সাক্ষাৎকারে বিরোধী প্রার্থী জো বাইডেনকে সরাসরি আক্রমণ করেছেন ট্রাম্প। বলেছেন, বাইডেন মানসিক ভাবে সুস্থ নন।যুক্তরাষ্ট্রকে চালানোর মতো ক্ষমতা তার নেই। বাইডেন আগামীর প্রেসিডেন্ট হলে অর্থনৈতিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়বে দেশ। পুলিশের ফান্ড কমিয়ে দেওয়া হবে। মানুষের ধর্মীয় অধিকার কেড়ে নেওয়া হবে। কিছু দিন আগেই জর্জ ফ্লয়েড হত্যার ঘটনা ঘটেছে অ্যামেরিকায়। তার পরে ডেমোক্র্যাটরা পুলিশ বিভাগের সংস্কারের দাবি করেছে। দাবি উঠেছে, প্রয়োজনে পুলিশের বাজেট কমানো হোক। সে বিষয়টিকে উল্লেখ করেই বাইডেনের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প।ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রসঙ্গটিও এসেছে সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা থেকে। করোনাকালে ডেমোক্র্যাট শাসিত রাজ্যগুলিতে চার্চ বন্ধ রাখা হয়েছে। ট্রাম্প সে বিষয়টিকেই রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছেন বলে বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য। ট্রাম্প জানিয়েছেন, হোয়াইট হাউস এখনও পর্যন্ত নভেম্বরের নির্বাচন নিয়ে যত সমীক্ষা চালিয়েছে, তার প্রতিটিতেই তিনি এগিয়ে আছেন। তিনি বলেন, এমন একটি সাক্ষাৎকারে যদি বাইডেন বসতেন, তা হলে তিনি এত কথার উত্তরই দিতে পারতেন না। মাকে ডাকতেন বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য। ট্রাম্পের এ ধরনের মন্তব্য শালীনতা বিরোধী বলেই মনে করছেন মার্কিন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাদের বক্তব্য, ট্রাম্প বাইডেনকে যত এ ভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ করবেন, ততই তাঁর জনপ্রিয়তা কমবে।
অ্যামেরিকার দক্ষিণ অংশে কনফেডারেট ফ্ল্যাগ ব্যবহৃত হয়। গৃহযুদ্ধের সময় থেকে এই পতাকার বিরুদ্ধে ক্ষোভ রয়েছে একাংশের মানুষের। অভিযোগ, এই পতাকা বর্ণবাদী। বস্তুত, শ্বেতাঙ্গ আধিপত্য কায়েম করতে বহু সময়েই এই পতাকা ব্যবহার করা হয়েছে। এখনও বর্ণবাদীরা এই পতাকাটিকে সিম্বল হিসেবে ব্যবহার করেন। দীর্ঘদিন ধরে এই পতাকাটি বাতিলের দাবি উঠছে। তবে ট্রাম্প পতাকাটিকে বাতিল করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছেন। তার বক্তব্য, ওই পতাকা গৌরবের ইতিহাস বহণ করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অ্যামেরিকার জয়ের সঙ্গে জুড়ে আছে ওই পতাকা। ফলে কোনও ভাবেই তা বাতিল করা হবে না। শুধু তাই নয়, প্রেসিডেন্টের বক্তব্য, ওই পতাকার সঙ্গে দক্ষিণের মানুষের আবেগ জড়িত।যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অভিযোগ উঠছে, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ট্রাম্প সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন।
করোনার প্রাদুর্ভাবের পর থেকে ক্রমশ সমর্থন কমতে শুরু করেছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের। এখনও পর্যন্ত সব চেয়ে বেশি করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা যুক্তরাষ্ট্রে। মৃত্যুও হয়েছে সব চেয়ে বেশি। করোনা-কালের একেবারে শুরু থেকে বার বার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এবং উপদেষ্টাদের সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি তাড়িয়ে দিয়েছেন বহু বিশেষজ্ঞকে। ট্রাম্প অবশ্য এ সব কোনও কথা মানতেই নারাজ। তার বক্তব্য, ঠিক ভাবেই করোনা পরিস্থিতি সামলেছেন তিনি। প্রেসিডেন্টকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, কেন মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করছেন না তিনি। ট্রাম্পের উত্তর, মানুষের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে চাননি বলেই মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করেননি তিনি।