ঈদের বাজারে গরুবোঝাই ট্রাক টার্গেট

নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ জুলাই ২০২০, ১:৩১ পূর্বাহ্ণ
চার বন্ধু তাহাদের বাড়ি দেশের ভিন্ন চার জেলায়। রাজধানীতে ভাড়া বাসাও ভিন্ন এলাকায়। সবার কাছে ওদের পরিচিতি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে মালামাল সরবরাহকারী ঠিকাদার।নাম মাসুদ, মামুন হোসেন ওরফে সাত্তার, সুমন ওরফে মুসা এবং সুমন। চলাফেরা দামি প্রাইভেটকারে।এর মধ্যে মাসুদের বাড়ি নেত্রকোনায়,মামুনের শরীয়তপুরে, মুসার মাদারীপুরে এবং সুমনের বাড়ি কেরানীগঞ্জে। চালচলন কথা-বার্তায় কারোরই বোঝার উপায় নেই ওরা ভয়ংকর অপরাধী। অজ্ঞানপার্টি ও মলম পার্টির সদস্য। এরা মানুষের চোখে মলম লাগিয়ে শুধু টাকা পয়সাই ছিনিয়ে নেয় না।কোরবানির ঈদের আগে আসা ট্রাকভর্তি গরুও ছিনিয়ে নেয়।সিআইডির (পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ) পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এ তথ্যই জানিয়েছে তারা। সিআইডি গত রবিবার রাজধানীর মেরুল বাড্ডার বীর উত্তম রফিকুল ইসলাম সরনিতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয় একটি প্রাইভেটকার (ঢাকা মেট্রো খ-১৩-১২৬৮), চাপাতি, ছুরি, রশি, গামছা, নেশা জাতীয় ঘুমের ওষুধ এবং বিষাক্ত মলম। সিআইডি সোমবার থেকে তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে।এ ব্যাপারে সিআইডির ঢাকা মেট্রো দক্ষিণের অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ মো. রেজাউল হায়দার বলেন, প্রতি বছর দেখা যায়, ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে পশুর হাটকে টার্গেট করেই সক্রিয় হয় অজ্ঞান পার্টি ও মলম পার্টির সদস্যরা। আর এদের খপ্পরে পড়ে বহু মানুষ বিশেষ করে গরু ব্যবসায়ী বা গরুর ক্রেতারা টাকা খোয়ান। এমনকি মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। সেটিকে মাথায় রেখেই সিআইডি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে। তারই ধারাবাহিকতায় চার জনকে গ্রেফতার করা হয়।
অভিযান পরিচালনাকারী সিআইডির ঢাকা মেট্রো দক্ষিণের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জীবন কান্তি সরকার জানান, গ্রেফতারকৃতরা স্বীকার করেছে, তারা প্রতিদিন খুব ভোরে নির্ধারিত স্থানে মিলিত হতো। পরে তারা তাদের টার্গেট এলাকায় প্রাইভেটকার নিয়ে ঘুরে বেড়াত। সুযোগ বুঝে গরুবাহী ট্রাকের সামনে প্রাইভেটকার দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করত। এরপর চালকের মুখে মলম লাগিয়ে ট্রাক নিয়ে পালিয়ে যেত। গরু ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে লুট করা টাকা দিয়েই তারা প্রাইভেটকার কিনেছে। তাদের বিরুদ্ধে হত্যাসহ একাধিক মামলা পাওয়া গেছে। তিনি বলেন, আরো মামলার সন্ধান পাওয়া যাবে বলে তিনি আশাবাদী। সিআইডি ঢাকা মেট্রো দক্ষিণের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান জানিয়েছেন, গ্রেফতারকৃতরা নেশাজাতীয় দ্রব্য ব্যবহার করে দস্যুতা সংঘটনকারী একটি সংঘবদ্ধ দলের সক্রিয় সদস্য। তারা দীর্ঘদিন ধরে ঢাকার আশপাশের এলাকায় অটোরিকশার যাত্রী, চালক এবং পথচারীদের গতিরোধ করত। পরে এসব যানে থাকা মানুষদের মলম লাগিয়ে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে নির্জনস্থানে ফেলে গাড়িসহ টাকা পয়সা ছিনিয়ে নিত। অপরাধ সংঘটনের সময় তারা চার থেকে পাঁচ জন সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়।