আবারও যুক্তরাষ্ট্রে করোনা ভাইরাসে মৃত্যু রেকর্ড

নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ জুলাই ২০২০, ৩:১৩ অপরাহ্ণ
আবারও করোনা ভাইরাসে বিপর্যস্ত যুক্তরাষ্ট্রে মঙ্গলবার একদিনে নতুন করে রেকর্ড ১ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।গত ১০ জুনের পর এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড-১৯ এ মৃতের সংখ্যা হাজার পেরোল। সব মিলে করোনাভাইরাসে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ১৪২,০০০ জনে।যুক্তরাষ্ট্রে দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণের যে ঢেউ লেগেছে তাতে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
যুক্তরাষ্ট্রে দৈনিক মৃত্যু এক হাজারের নিচে নেমে এসেছিল জুনের শেষের দিকে। কিন্তু সম্প্রতি ক্যালিফোর্নিয়াসহ আরো কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে সংক্রমণ ও মৃত্যু উভয়ই উদ্বেগজনক হারে বাড়তে শুরু করেছে।ক্যালিফোর্নিয়াতেই মঙ্গলবার চার লাখের বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের সংখ্যায় এখন একমাত্র নিউ ইয়র্ক এ রাজ্যের উপরে আছে। গত জানুয়ারিতে এ অঙ্গরাজ্যেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম রোগী শনাক্ত হয়েছিল।
প্রথমে মহামারীর উপকেন্দ্র হয়ে উঠেছিল নিউ ইয়র্ক। সেখানে ৩২ হাজার ২১৮ জন মারা গেছে। আর ক্যালিফোর্নিয়ায় এখন পর্যন্ত সাত হাজার ৭০০ জনের মৃত্যু হয়েছে।যুক্তরাষ্ট্রে মহামারী বিস্তারের শুরুর দিকে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ছিল নিউ ইয়র্কে। সেখানে পরিস্থিতি এখন অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এলেও ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে।
বেশিরভাগ অঙ্গরাজ্যেই হাসপাতালগুলোতে রোগী উপচে পড়ছে। এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ৩৯ লাখের বেশি মানুষ করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়েছে।অথচ কিভাবে এ মহামারী নিয়ন্ত্রণ করা যায় তা নিয়ে ফেডারেল সরকার, অঙ্গরাজ্য, গভর্নর এবং স্থানীয় প্রশাসনের মধ্যে চরম মতবিরোধ চলছে।টেক্সাসে মেক্সিকো সীমান্তবর্তী একটি কাউন্টিতে মহামারী এতটাই ছড়িয়ে পড়েছে যে, সেটিকে ‘সুনামির’ সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে।তারপরও টেক্সাসের গভর্নর গ্রেগ অ্যাবট ওই কাউন্টির প্রশাসন জনগণকে ঘরে থাকতে বাধ্য করতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন। দৈনন্দিন কার্যক্রম চালিয়ে নিতে মাস্ক পরা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাই যথেষ্ট বলে মত তার।
অন্যদিকে, জর্জিয়ার গভর্নর আটলান্টার মেয়রকে আটকাতে রীতিমত মামলা করে বসেছেন। আটলান্টার মেয়র স্থানীয় বাসিন্দাদের জনসম্মুখে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করেছেন এবং এ আদেশ বাস্তবায়নের ব্যবস্থাও নিয়েছেন।ফ্লোরিডার গভর্নর ও তার প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ‘দ্য স্টেট টিচারস ইউনিয়ন’। গভর্নর রাজ্যের স্কুল খুলে দিতে চাইছেন। অথচ সেখানে এখনও প্রতিদিনই ১০ হাজারের বেশি নতুন রোগী শনাক্ত হচ্ছে। গত সপ্তাহে ফ্লোরিডায় ভাইরাস পরীক্ষায় গড়ে ১৯ শতাংশের ফল ‘পজেটিভ’ এসেছে।মাস্ক পরে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে করোনাভাইরাস নির্মূল সম্ভব নয়। এতে শুধু ভাইরাস বিস্তারের গতি কমিয়ে দেওয়া যায়। যা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনীতি শুরু হয়েছে।
অনেক আমেরিকান মনে করেন, মাস্ক পরা এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বাধ্য করার মাধ্যমে তাদের সাংবিধানিক অধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে।খোদ প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পও এমনটাই মনে করতেন। যদিও শেষ পর্যন্ত তিনিও জনসম্মুখে মাস্ক পরতে বাধ্য হয়েছেন। তবে মঙ্গলবার তিনি এও বলেছেন, যখন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা সম্ভব হয় না শুধু তখনই মাস্ক পরুন।