কয়েকদফা বন্যায় লক্ষ লক্ষ মানুষ পানিবন্দি

নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ জুলাই ২০২০, ৪:৫৮ পূর্বাহ্ণ
কয়েকদফা বন্যায় লক্ষ লক্ষ মানুষ পানিবন্দি বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট। উঠানেও কোমরসমান পানি। তাই এক ঘর থেকে অন্য ঘরে যেতে পরিবারের সদস্যরা মিলে তৈরি করছেন সাঁকো।দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না, বরং কিছু কিছু এলাকায় পরিস্থিতির আরো অবনতি ঘটেছে। শরীয়তপুর, সিরাজগঞ্জ, কুড়িগ্রাম, পাবনাসহ বিভিন্ন জেলায় ২০ লাখেরও বেশি মানুষ এখনো পানিবন্দি হয়ে রয়েছে। বাড়িঘর থেকে পানি নামছে না, এখনো পানিতে ডুবে আছে খেতের ফসল। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ।
ঢাকা-শরীয়তপুর সড়কের বিভিন্ন অংশ বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় এই দুই জেলার মধ্যে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। জামালপুরের মাদারগঞ্জে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। শরীয়তপুর প্রতিনিধি জানান, পদ্মা নদীর পানি এখনো শরীয়তপুরে বিপত্সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যার পানিতে জেলার ৩৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি রয়েছে অন্তত সাড়ে ৩ লাখ মানুষ।
ঢাকা-শরীয়তপুর সড়কের ১৫টি স্থান বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকার সঙ্গে শরীয়তপুরের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পদ্মা ও মেঘনা নদীতে তীব্র স্রোতের কারণে চারটি ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যে কারণে নরসিংহপুর ও হরিনা ঘাটে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আটকা পড়েছে আট শতাধিক যানবাহন।
নড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে পানি উঠে যাওয়ায় রোগী ও তাদের স্বজনদের এবং ডাক্তার-নার্সসহ হাসপাতালের লোকজনদের সমস্যা হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, নড়িয়ার ১৪টি, জাজিরার ১২টি, সদরের আটটি ও ভেদরগঞ্জ উপজেলার ৯টি ইউনিয়নের ৩৫০টি গ্রামে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। বৃহস্পতিবার পদ্মার পানি নড়িয়ার সুরেশ্বর পয়েন্টে কমলেও বিপত্সীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
শুক্রবার শরীয়তপুরের জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বন্যায় পানিবন্দি ১৫০টি পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হয়। পুলিশ সুপার এস এম আশ্রাফুজ্জামান বানভাসি মানুষের হাতে ত্রাণসামগ্রী তুলে দেন। শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক কাজী আবু তাহের জানান, পানিবন্দি ৪৭ হাজার পরিবারের জন্য চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ২ হাজার পরিবারকে শুকনা খাবার দেওয়া হয়েছে।
সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যার পানি কিছুটা কমতে শুরু করলে ও কানাইঘাটে সুরমা এবং ফেঞ্চুগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপত্সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।ফেঞ্চুগঞ্জের যে কয়টি এলাকা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত সুড়িকান্দি ভেলকোনা ওই সব এলাকার মানুষ পানি বন্দি, শুক্রবার সকালে কানাইঘাটে সুরমার পানি বিপত্সীমার ২৪ সেন্টিমিটার এবং ফেঞ্চুগঞ্জে কুশিয়ারা নদীর পানি বিপত্সীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।জেলা সদরের সঙ্গে অনেক উপজেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।