সিলেট সিটির আয়তন বাড়ার সঙ্গে,নগর জুড়ে দুই সিটি করার গুঞ্জন!

নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ আগস্ট ২০২০, ৯:৪৫ পূর্বাহ্ণ
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের আয়তন বাড়ার খবর শুনে নগর জুড়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে। গুঞ্জন উঠছে ঢাকার মতো সিলেট সিটি কর্পোরেশন দুই ভাগ করার। কেউ কেউ বলছেন সিসিকের আয়তন বাড়ছে কিন্তু এক মেয়র ধারা এত বড় সিটি কর্পোরেশন চালাতে হিমশিম খেতে পারে। অন্যদিকে হতে পারে উন্নয়নের ধীরগতি। তাই উত্তর-দক্ষিণ, পূর্ব-পশ্চিম সিটি কর্পোরেশন এখন সময়ের দাবী।
অপরিকল্পিত ও দূষণ আক্রান্ত নগরী সিলেট নগরীকে পুনরুজ্জীবিত করতে দুভাগ করার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন বিশিষ্টজনেরা। একাধিক সুশিল সমাজের নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে জানা যায়, ঐতিহ্যে-সুন্দর-সচল-সুশাসিত-উন্নত সিলেট করতে নতুন পথে যাত্রা শুরু করতে হবে। অনেক অবহেলা আর গাফিলতিতে সিলেট নগরীকে অপরিকল্পিত ও দূষণ আক্রান্ত নগরীতে পরিনত হয়ে গেছে।
ক্রমবর্ধমান মানুষের চাপ, যুগের চাহিদা, মানুষের স্বপ্ন ও আকার প্রেক্ষাপট বিবেচনায় রয়েছে কিছু সমস্যা, তৈরি হয়েছে নতুন নতুন চাহিদা। উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি বিবেচনায় আয়তনে দুই সিটিতে ভাগ করা সম্ভাবনার দিগন্ত উন্মোচন হবে। প্রত্যাশিত সিলেট সিটিকে দুভাগে ভাগ করে নবসূচনায় সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন বিশেষ গুরুত্ব ও তাৎপর্য নিয়ে আমাদের সামনে হাজির বলে মনে করছেন অনেকে। এছাড়া বর্তমান সরকার সব সম্ভাবনাকে বাস্তবায়ন করে এগিয়ে যাওয়ার জন্য চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে অগ্রসর হওয়া নগরীর জন্য কঠিন কিছু নয়।
এ বিষয়ে অনেক তরুণ রাজনীতিবিদরা জানান, মেয়র হওয়ার সুযোগ পেলে সিলেটকে নতুন করে পুনরুজ্জীবিত করতে চান তারা। এদিকে সিলেটকে যদিও ডিজিটাল নগরী আখ্যায়িত করা হয়েছে কিন্তু বাস্তবে কতটুকু তা এখন প্রশ্নবিদ্ধ।
অনেক জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, সিলেটের নিজস্ব ইতিহাসের উজ্জ্বল ছবি সর্বক্ষেত্রে। ঐতিহ্যের গভীর শেঁকড় ও প্রত্মতাত্ত্বিক গুরুত্বও আলাদা। এছাড়া পর্যটনের জন্যও হতে পারে অপার সম্ভাবনার ক্ষেত্রে। সামাজিক ফেইসবুকে শহরতলীর এসব গ্রামের তরুণ নেতারা আনন্দের অনুভূতি প্রকাশ করছেন। কেউ কেউ আগামীতে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতার স্বপ্নও দেখতে শুরু করেছেন। সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সীমানার সাথে এসব এলাকার চূড়ান্ত অন্তর্ভুক্তি হয়ে গেলে জায়গা জমির দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সামগ্রিক জীবন যাত্রার মান মর্যাদাও বেড়ে যাবে। এই গরম আবহাওয়ার সময় সিলেট নগর ও আশপাশ এলাকায় এখন এক ধরনের সামাজিক উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে।
এদিকে, নগরবাসীর বহু প্রত্যাশিত অবশেষে আয়তনে দ্বিগুন হচ্ছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকা। রোববার (৯আগস্ট) সিলেট সদর ও দক্ষিণ সুরমার উপজেলার কয়েকটি এলাকা সিসিকের আওয়াভুক্ত করে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। গণবিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর করেন সিলেটের জেলা প্রশাসক এম কাজী এমদাদুল ইসলাম।
গণবিজ্ঞপ্তিতে প্রকাশিত এলাকাগুলো সিসিকে যুক্ত হলে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের আয়তন বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় ৫৮ বর্গকিলোমিটার। এরআগে ২০০২ সালে সিলেট পৌরসভা থেকে সিলেট সিটি কর্পোরেশনে উন্নীত হয়। প্রাথমিকভাবে ২৬.৫ বর্গকিলোমিটার জায়গা নিয়ে যাত্রা শুরু করে সিলেট সিটি কর্পোরেশন। এতে করে সিলেট সদর ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলার অনেক নিভৃত পল্লী গাঁয়ের এলাকাও সিটি করপোরেশনের অন্তর্ভুক্ত হলো।
গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকা সম্প্রসারণের নিমিত্তে সিলেট সদর ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলার নিন্মোক্ত এলাকা/ভূমি প্রাথমিকভাবে সিলেট সিটি কর্পোরেশনে অন্তর্ভুক্তির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। অন্তর্ভুক্তি এলাকার অধিবাসীগণকে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের আওতাভুক্তের প্রাথমিক সিদ্ধান্তের বিষয়ে কোন ধরণের পরামর্শ বা আপত্তি থাকলে আগামী ৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জেলা প্রশাসক, সিলেট বরাবর লিখিত আবেদনের মাধ্যমে জানানোর অনুরোধ করা হলো।
স্থানীয় সরকার বিভাগ, সিলেটের উপ-পরিচালক মীর মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, আমরা একটি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছি। গণবিজ্ঞপ্তিতে ৮ সেপ্টেম্বর তারিখের মধ্যে আপত্তি জানানোর কথা বলা হয়েছে। যদি কেউ আপত্তি করেন তাহলে এটি সমাধান করা হবে। পরে মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হবে। তবে নতুন করে কতটি ওয়ার্ড সংযুক্ত হচ্ছে এটি এখনই বলা যাচ্ছে না বলেও জানান তিনি।
সূত্র শুভপ্রতিদিন