ছাতকে চুনাপাথর আমদানীতে রাজস্ব আদায় কমেছে

নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ আগস্ট ২০২০, ১:৫১ অপরাহ্ণ
শিল্প নগরী ছাতক উপজেলার স্থানীয় শুল্ক ষ্টেশনের অধীনে ভারত থেকে চুনাপাথর আমদানীতে রাজস্ব আদায় কমেছে। সরকারের নির্ধারিত বছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরন হয়নি। সংক্রামক ব্যাধী করোনা ভাইরাসের প্রভাবে চুনাপাথর আমাদানী বিঘ্নিত হওয়ায় ২০১৯-২০ইং অর্থবছরে কমেছে সরকারী রাজস্ব আদায়। করোনাকালীন সময়ে বর্তমান পরিস্থিতিতে চলতি ২০২০-২১ইং অর্থবছরের রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরন হবে কি না, এনিয়ে শংকা রয়েছে।
ছাতক, চেলা ও ইছামতি রুটে রাজস্ব আদায়ের মোট লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৯০কোটি ৬২হাজার টাকা। এর মধ্যে গত ৩০ জুন মাস পর্যন্ত মোট রাজস্ব আদায় হয়েছে ৫৬ কোটি ২০লাখ ৬৯হাজার টাকা। মোট লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৩কোটি ৭৯লাখ ৯২হাজার টাকা কম রাজস্ব আদায় হয়েছে। মূলত করোনার প্রভাবেই ভারত থেকে চুনাপাথর আমদানীতে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা কম হয়েছে বলে জানিয়েছে ছাতক শুল্ক ষ্টেশন বিভাগ।
২০১৯-২০ইং অর্থবছরে ছাতক রুটে চুনাপাথর আমাদানীতে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৮কোটি ৪০লাখ ৯২হাজার টাকা। এখানে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৫৩কোটি ৭৪হাজার টাকা। চেলা রুটে লক্ষ্যামাত্রা ধরা হয়েছিল ৩কোটি ১৮লাখ ৬৪হাজার টাকা। আদায় হয়েছে ১ কোটি ৯২ লাখ ৪ হাজার টাকা এবং ইছামতি রুটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩ কোটি ৪১ লাখ ৬ হাজার টাকা। আদায় হয়েছে ১ কোটি ২৭ লাখ ৯১ হাজার টাকা।
সংশি¬ষ্ট সুত্রে জানা যায়, সরকারী হিসেব অনুযায়ী এর আগের ২০১৮-১৯ইং সাল অর্থবছরে ভারত থেকে চুনাপাথর আমদানীতে রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি ছিল। ওই বছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৭৮কোটি ১১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। মোট রাজস্ব আদায় হয়েছিল ৬৭ কোটি ১৮ লাখ টাকা। যা মোট রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০ কোটি ৯৩ লাখ ১২ হাজার টাকা কম ছিল।
চলতি ২০২০-২১ইং অর্থবছরে ছাতক রুটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৯ কোটি ৫৮ লাখ ১১ হাজার টাকা, চেলা রুটে ২ কোটি ৫৫লাখ ৩৮ হাজার টাকা ও ইছামতি রুটে ১ কোটি ৭৪ লাখ ৩৬ হাজার টাকাসহ মোট ৩টি রুটে রাজস্ব আদায়ে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৩ কোটি ৮৭ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ছাতক শুল্ক ষ্টেশনের আওতায় ৩টি রুটে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ছাড়াও এশিয়ার বৃহত্তর সিমেন্ট উৎপাদনকারী প্রতিষ্টান লাফার্জ-হোলসিম সিমেন্ট কোম্পানী ও রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্টান ছাতক সিমেন্ট কোম্পানী কর্তৃপক্ষ মিয়মিত ভাবে কনভেয়ার বেল্ট, রজ্জুপথ ও ব্যবসায়ীরা নৌপথে চুনাপাথর আমাদানী করে থাকে। সম্প্রতি বিশ্ব জুড়ে সংক্রামক ব্যাধী করোনা ভাইরাসের প্রভাবে লাফার্জ-হোলসিম কর্তপক্ষ প্রায় দেড় মাস চুনাপাথর আমাদানী বন্ধ থাকে। ফলে রাজস্ব আদায় প্রায় ৮ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে। এছাড়াও ছাতক সিমেন্ট কোম্পানীতে গত ২৬ মার্চ থেকে চুনাপাথর আমাদানী বন্ধ রয়েছে।
এদিকে, গত ২৯ ফেব্রুয়ারী থেকে চেলা ও ইছামতি রুটে ও চুনাপাথর আমদানী বন্ধ রয়েছে। যার ফলে সরকারী প্রতিষ্টানের পাশাপাশি ব্যবসায়ীরাও রড় ক্ষতির মুখে পড়েছেন। কবে নাগাত আমদানী কার্যক্রম স্বাভাবিক হবে, এনিয়ে সুস্পষ্ট ভাবে কেউ কিছু বলতে পারছে না।
স্থানীয় চুনাপাথর ব্যবসায়ী ও ছাতক লাইম ষ্টোন ইম্পোটার্স এন্ড সাপ্লায়ার্স গ্রুপের সাবেক সেক্রেটারী আব্দুল হাই আজাদ বলেন, চেলা ও ইছামতি রুটে চুনাপাথর আমাদানী বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীরা বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। কমেছে সরকারের রাজস্ব আদায়।
ছাতক শুল্ক ষ্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা মো.ইব্রাহিম খলিল জানান, মূলত করোনার প্রভাবেই রাজস্ব আদায় কমেছে। যার ফলে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরন হয়নি। তবে আমদানী কার্যক্রম চালু হলে রাজস্ব ঘটতি পুষিয়ে নেওয়া যাবে।