কমলগঞ্জে ইউপি চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৩ আগস্ট ২০২০, ৪:০৬ অপরাহ্ণ
: মৌলভবাজারের কমলগঞ্জের দলই চা বাগান কোম্পানীর এ জি এম খালেদ মঞ্জুর খানের গতিরোধ করে মারপিট, গাড়ি ভাঙ্গচুর ও টাকা ছিনাইয়ের নেয়ার অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যান, চা শ্রমিক নেতা সহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা হয়েছে।
টানা ২৭ দিন ধরে কর্তৃপক্ষ দলই চা বাগান বন্ধ রাখার মাঝে কমলগঞ্জের ১৩টি চা বাগানের শ্রমিকরা চাঁদা তুলে দলই চা বাগানের শ্রমিক পরিবারে সহায়তা দেবার একদিন পর শনিবার (২২ আগস্ট) রাতে দলই চা বাগান কোম্পানীর এ জি এম খালেদ মঞ্জুর খান বাদি হয়ে কমলগঞ্জ থানায় এ মামলা করেন।
মামলার সূত্রে জানা যায়, গত দি সিলেট টি কোম্পানী (দলই চা বাগান কোম্পানী)-র সহকারি -মহাব্যবস্থাপক খালেদ মঞ্জুর খান উল্লেখ করেন মামলার ১ নং আসামী মাধবপুর ইউনিয়নের চেয়রম্যান পুষ্প কুমার কানুম ২নং আসামী চা যুব নেতা মোহন রবিদাস ও ১১ নং আসামী চা শ্রমিক নেতা সীতারাম বীনের উস্কানীতে দলই চা বাগানের বাকী আসামীগন চা বাগান ব্যবস্থাপকের কাছ থেকে নির্ধারিত মজুরীর চেয়ে অধিক মজুরি বে-আইনীভােিব আদায়ের স্বার্থে বেশ কিছুধীন যাবৎ পরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছে। এরই পরিপেক্ষিতে গত ২৯ জুন সকল আসামীগণ সহ উশৃঙ্খল শ্রমিকগণ বাগানে অবৈধ বে-আইনী ধর্মঘট করে ব্যবস্থাপককে অবাঞ্চিত ঘোষণা করে জোর পূর্বক বের করে দেয়। এ প্রক্ষিতে দলই চা বাগানের উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে প্রশাসনও স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মধ্যস্থতায় দলই চা বাগানে স্বাভাবিক কার্যক্রম ১৯ আগস্ট থেকে চালুর সিদ্ধান্ত হয়।
দীর্ঘদিন পর দলই চা বাগানের উৎপাদন কার্যক্রম পূণরায় সচল হওয়ায় তিনি (এজিএম খালেদ মঞ্জুর খান) কোম্পানীর সহকারী- মহাব্যবস্থাপক হিসেবে ১৯ আগস্ট সকাল ১১টায় তদারকি কাজে দলই চা বাগানে গিয়েছিলেন। এসময় চা বাগানের ব্য্স্থাপক, সহকারী ব্যবস্থাপকসহ বাগানের সকল কর্মচারীর জুলাই মাসের বেতন ও মজুরি পরিশোধের জন্য নগদ ১০ লাখ টাকা নিয়ে যান। এসময় সকল আসামীরা লাঠি, লোহার রড নিয়ে দলবদ্ধ হয়ে কোম্পানীর জীপ গাড়ির (ঢাকা মেট্রো- ড-০৫-০০১৫) গতিরোধ করে। এসময় ১ নং আসামীর হুকুমে বাকি আসামীরা গাড়ির কাঁচ ভাঙ্গচুর করে। আসামীরা তাকে জোর পূর্বক টেনে গাড়ি থেকে নামিয়ে মারপিট করে জখম করে। আসামীরা গাড়িতে বেগের ভিতর রাখা ১০ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরবর্তীতে আসামীরা একটি নোহা মাইক্রোবাসে করে পালিয়ে যায়। পরে তিনিসহ আহতরা মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহন করেন। ফলে ঘটনার ২ দিন পর শনিবার রাতে কমলগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন, শিব নারায়ণ শীল (৫৫), তুলশী দাস মাদ্রাজী (৫০), পিংকা কালোয়ার (৫৫), অমৃত কুমার পাশী (৪৬), মো. ফরিদ আলী (৪৫), মো. ইরাজ আলী (২৭), লছমী ভর (৬০), সুদীপ্ত ভর (২৬),ভর (৬০),অজিৎ পাশী (২৫), দিপেন ভর (২৫)। মামলায় ১৪ নম্বও আসামী অজ্ঞাতসহ আর ৫/৬ জনকে আসামী করা হয়।
এ বিষয়ে মামলার প্রধান আসামী মাধবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পুষ্প কুমার কানু বলেন, ১৯ আগস্ট দলই চা বাগানে ব্যবস্থাপক ও সহকারি মহা ব্যবস্থাপক অবরুদ্ধ বলে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুর হক ও কমলগঞ্জ থানার ওসি মো. আরিফুর রহমানের নির্দেশে তিনি দলই চা বাগানে গিয়ে বিক্ষোব্দ চা শ্রমিকদের বুঝিয়ে কমলগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুধীন চন্দ্র দাশসহ সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে তাদের উদ্ধার করেছিলেন। এখন তাকে চা বাগান কোম্পানী মিথ্যে অভিযোগ দিয়ে আসামী করেছে।
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে মামলার বাদি ও দলই চা বাগামন কোম্পানী সহকারি মহা-ব্যবস্থাপক খালেদ মঞ্জুর খানের মুঠোফোনে কয়েক দফা ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
কমলগঞ্জ থানার ওসি মো. আরিফুর রহমান মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ মামলার তদন্তভার দেওয়া হয়েছে এসআই সিরাজুল ইসলামকে।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, ১৯ আগষ্ট অবরুদ্ধ ধলই চা বাগান কোম্পানীর সহকারি মহা-ব্যবস্থাপক ও ব্যবস্থাপককে উদ্ধার করতে মাধবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পুস্প কুমার কানুকে নির্দেশ দিয়ে পাঠানো হয়েছিল।