করোনাকালীন বন্ধ থাকায় হাকালুকি হাওরের প্রকৃতিতে দেখা দিয়েছে স্বপ্নের হাতছানি!

নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ আগস্ট ২০২০, ৫:৩৩ অপরাহ্ণ
ষড়ঋতুর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দেশ বাংলাদেশ। একেকটি ঋতুতে এ দেশের প্রকৃতি সাজে ভিন্ন ভিন্ন রূপে যা ভ্রমণ পিপাসুদের অতৃপ্ত মনকে তৃপ্তি দিয়ে থাকে। সব ঋতুতে যদিও প্রকৃতির বহুরূপী সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। তবুও, নির্দিষ্ট ঋতুতে কিছু কিছু স্থান যেন তার যৌবন ফিরে পায়।
এমন মনোমুগ্ধকর দৃশ্য মন কেড়ে নেয় ভ্রমণপিপাসু পর্যটকদের। তাই তো সেখানে ছুটে আসছেন পর্যটকরা। চলতি বর্ষায় হাকালুকি উত্তাল যৌবনের জয়গানে মুখরিত হয়ে উঠে। নীল আকাশের সাথে জলরাশির মিতালি বিমোহিত করে পর্যটকদের। বর্ষায় হাকালুকি হাওর দেখলে মনে হবে, এ যেন মহাসাগর। যেদিকে চোখ যায় শুধু জলের হাতছানি। বিশাল এ হাওর ঘিরে স্থানীয় লাখো মানুষের স্বপ্ন ও জীবিকা।
বর্ষা মৌসুমে পর্যটকদের ভিড়ে মুখর হয়ে উঠে এ হাওরের ফেঞ্চুগঞ্জে অবস্থিত জিরো পয়েন্ট পর্যটন এলাকা। করোনাকালেও ভ্রমণ পিপাসুদের ভিড়ে তিলধারনের জায়গা নেই মনোরম এই পর্যটক এলাকায়। বন্ধু বান্ধব কিংবা পরিবার নিয়ে নানা জায়গা থেকে ভ্রমন পিপাসুরা আসছেন ‘মিনি কক্সবাজার’ নামে খ্যাত এই হাকালুকি হাওরে। সকাল-থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাজারো মানুষের কোলাহলে উৎসবমুখর করে তুলেছে এ এলাকা।
তেমনি পরিবারকে নিয়ে হাওরে ঘুরতে আসা কমলগঞ্জের শিউলি আক্তার নামের এক গৃহীনি বলেন, ‘করোনাদুর্যোগে কোথাও যাওয়ার সুযোগ নেই। প্রকৃতি খুব টানে। হাকালুকি হাওর এলাকাটি উন্মুক্ত। তাই বাচ্চাদের নিয়ে ঘুরতে এসেছি। অথৈ জলের হাকালুকি হাওর মনোমুগ্ধকর একটা পরিবেশ। খুব ভালো লাগছে।
ঘুরতে আসা সালেহ ইব্রাহীম নামের একজন চাকরিজীবি বলেন, বর্ষায় হাওরের সৌন্দর্য দেখতে অন্যরকম ভালো লাগে। এখানকার পরিবেশ আমাকে বারবার টানে। তাই প্রাণের টানে এখানে ছুটে এসেছি। অসম্ভব ভালো লাগছে।
জানতে চাইলে ট্রলার ইঞ্জিন চালক সুধাংশু পাল বলেন,২/৩মাস থাকি আমরার হাকালুকির হাওর ও এতো মানুষ আইরা হাওর দেখাত তাইনতাইন ওর আওয়াতে আমার লাকান অনেক গরীব কেউ নৌকা লইয়া,কেউ বাদাম চনা লইয়া,আবার কেউ পানির বোতল বেঁচিয়া দিনওর খাবার যোগার করি চলরা।যেলাকান করুনা মহামারি দেশও আইছে আমরা না খাইয়া মরলামওনে।এখানো মানুষ আওয়ায় আল্লায় আমরারে বাচাইয়া রাখছইন বা সম্মাদিক সাব। (গত দুই /তিন মাস যাবত হাকালুকি হাওরে প্রচুর পর্যটকদের লোকসমাগম বেড়েছে।পর্যটকদের আসা যাওয়ার কারনে আমার মতো অনেকে বিভিন্ন ভাবে জীবিকা নির্বাহ করে চলছেন।মহামারি করোনা কালিন সময়ে হাওরে পর্যটক না আসলে আমরা না খেয়ে জীবন যাপন করতে হতো আল্লাহ তায়ালার কাছে শুকরিয়া আমাদেরকে বাঁচিয়ে রেখেছেন সাংবাদিক সাহেব।
স্থানীয়রা জানান, এশিয়ার বৃহত্তম হাওর হাকালুকি বর্ষায় সাগরে পরিণত হয়, হেমন্তে হয় চারণ ভূমি। বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে হাওরের প্রাকৃতিক পরিবেশ, জীব বৈচিত্র দেখে মুগ্ধ হন পর্যটকরা।