দেশে এলপিজি অটোগ্যাসের চাহিদা বছরে ৬০ হাজার টন

নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০, ৯:১০ পূর্বাহ্ণ
যানবাহনে সিএনজির বিকল্প হয়ে দাড়াচ্ছে আমদানি করা এলপিজি অটোগ্যাস। দেশে গ্যাসের ঘাটতি থাকায় সিএনজি স্টেশনগুলোতে প্রেসার থাকে না। এজন সিএনজি চালিত যানবাহনকে বারবার গ্যাস নিতে হয়। কিন্তু এলপিজি অটোগ্যাসে একবার সিলিন্ডার ভর্তি করলে ৩/৪ দিন নির্ধিধায় চালানো যায়। এটাই অটো গ্যাসের জনপ্রিয়তার কারণ। বর্তমানে দেশে ১২০ টি এলপিজি অটোগ্যাস রয়েছে যার বার্ষিক চাহিদা ৬০ হাজার মেট্রিক টন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, দেশের তিনটি বড় শিল্প প্রতিষ্ঠান আরও এক হাজার অটোগ্যাস স্টেশন স্থাপন করতে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে আগামী দুই বছরে এই চাহিদ তিনগুন হবে। আর এই জ্বালনিই হবে রাস্তায় পেট্রোল, ডিজেল বা অকটেনের বিকল্প জ্বালানি। যে তিনটি কোম্পানি নতুন এক হাজার অটোগ্যাস স্টেশন স্থাপন করতে যাচ্ছে তারা হলো- এনর্জি প্যাক, বসুন্ধরা এবং বেক্সিমকো গ্রুপ। রাষ্ট্রায়ত্ব তেল বিতরণ পাম্পগুলোতে এসব ফিলিং স্টেশন চালু হবে।
এদিকে ডিজেল ও পেট্রোলের বায়ুদূষণ থেকে পরিবেশকে বাচানোর জন্য বিকল্প জালানি হিসাবে সরকারও এই নতুন বিনিয়োগকে উৎসাহ দিচ্ছে। এলপিজি অটোগ্যাস ইতিমধ্যেই সারা বিশ্বে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। পেট্রোল, ডিজেল এবং অকটেনের তুলনায় এর দাম কম এবং পরিবেশ বান্ধব। জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মধ্যে সরকার দেশে অকটেন, পেট্রোল বা ডিজেল ব্যবহার কমাতে চায়। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির অংশ হিসাবে বিপজ্জনক তেল থেকে সবুজ জ্বালানীতে স্থানান্তরকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। ২০০৫ সালে অটোগ্যাস হিসাবে এলপিজির ব্যবসা শুরু হয় যখন অস্ট্রেলিয়া ভিত্তিক পেট্রেডেক এলপিজি দেশের প্রথম ফিলিং স্টেশন স্থাপন করে।
দেশের অন্যতম ব্যসায়ী গ্রুপ বেক্সিমকো সারা দেশে ৫০০ অটো এলপিজি স্টেশন স্থাপনের পরিকল্পনা করেছে। প্রতিষ্ঠানটি রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি পদ্মা এবং মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের সাথে পৃথক দুটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের সহযোগী সংস্থা- এলপিজি পাম্প স্থাপন এবং মেঘনা পেট্রোলিয়ামের নিবন্ধিত ফিলিং স্টেশনগুলির মাধ্যমে অটোগ্যাস বিক্রয় শুরু করা হবে। বেক্সিমকো কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকে জানান, এই প্রকল্পের আনুমানিক ব্যয় হবে এক হাজার কোটি টাকা।
বসুন্ধরা এলপি মহাব্যবস্থাপক জাকারিয়া জালাল বলেন, আমরা সারাদেশে ৪০০ অটোগাস ফিলিং স্টেশন স্থাপনের পরিকল্পনা নিয়েছি। গত ২ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন পেট্রোলিয়াম ডিস্ট্রিবিউটর পদ্মর সঙ্গে এলপিজি বিক্রির জন্য এনারজিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন লিমিটেড একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে।
এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশনের পরিচালক হুমায়ুন রশিদ বলেন, প্রাথমিকভাবে, আমরা জি গ্যাসের ব্র্যান্ড নামে আমাদের এলপিজি বিক্রির জন্য দেশজুড়ে পদ্মা অয়েলের ১০০ টি ফিলিং স্টেশন নির্বাচন করেছি। আমরা নিজস্ব রিফুয়েলিং স্টেশন স্থাপনেরও পরিকল্পনা করছি তবে এর জন্য আরও সময় প্রয়োজন। চুক্তি অনুসারে, সরকারী মালিকানাধীন তেল বিতরণ সংস্থাগুলো পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা প্রতিটি বেসরকারী কোম্পানিরর কাছ থেকে প্রতি লিটার এলপিজি বিক্রির জন্য ৫০ পয়সা করে রয়্যালটি পাবে।
প্রসঙ্গত, দেশে পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় ইতিমধ্যেই বাসাবাড়িতে জ্বালনি হিসেবে এলপি গ্যাস জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। রান্নার জ্বালানী হিসাবে বর্তমানে এর বার্ষিক চাহিদা প্রায় ৭ লাখ টন। সরকার ইতিমধ্যেই ৫৬টি কোম্পানিকে এলপিজি আমাদানির লাইসেন্স প্রদান করেছে। এদের মধ্যে ২৬টির মত কোম্পানি এলপিজি আমদানি করে বাজারজাত করছে।