মাদবকুন্ড জলপ্রপাতে চলছে নতুন লীলা খেলা!

নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ১:৫৪ অপরাহ্ণ
করোনা ভাইরাসের থাবায় সমগ্র বিশ্ব এখন কোনঠাসা। তখন সিলেটের মাদবকুন্ড জলপ্রপাতে চলছে নতুন লীলা খেলা! বিশেষ করে সরকারি কোনো নির্দেশনা মানা হচ্ছে না। ফলে বাড়ছে করোনার ঝুকি।
এদিকে মহামারি এ ভাইরাস থেকে জনসাধারণ কে রক্ষার জন্য সরকার গত ১৭ই মার্চ থেকে সারা বাংলাদেশের সকল পর্যটন কেন্দ্র গুলো বন্ধ ঘোষনা করে দেয়।এরই ধারাবাহিকতায় মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলার মাধবকুন্ড জলপ্রপাত টিও বিগত ছয় মাস যাবদ বন্ধ রয়েছে। করোনা ভাইরাসের কারণে বন্ধ থাকা অনেক সেক্টর ধীরে ধীরে খোলে দেওয়ায় দেশে এখন অনেকটাই স্বাভাবিক।দেশ অনেকটা স্বাভাবিক হওয়ায় অনেক পর্যটক দেশের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে ভীড় করছে। সরকার অনেক পর্যটন কেন্দ্র খোলে দিলেও মাধবকুন্ড জলপ্রপাত এখনও খোলার সিদ্ধান্ত নেয়নি। কিন্তু মাধবকুন্ড জলপ্রপাতে প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা প্রচার না করায় দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিদিন অনেক পর্যটক এসে ফিরে যাচ্ছে।
অনেক ব্যবসায়ী ও স্থানীয় জনতা অভিযোগ করেন,প্রতিদিন আসা অনেক পর্যটক স্থানীয় দালাল সহ জেলা পরিষদের ডাকবাংলোর কেয়ারটেকার এলাইছ মিয়ার ভাই ও তার কথিত সহযোগী শাওনের সহযোগিতায় পাহাড় বেয়ে ঝুঁকি নিয়ে চোরাইপথে মাধবকুন্ড জলপ্রপাতে প্রবেশ করছে। বিনিময়ে একেকজন পর্যটকের কাছ থেকে সংঘবদ্ধ চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে ১০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত।তবে অনেকে এসব ঘটনার সাথে এলাইছ মিয়ার জড়িত থাকার অভিযোগ করেছেন।
১৪ সেপ্টেম্বর সরজমিনে গিয়ে মাধবকুন্ড জলপ্রপাতের প্রধান ফটকে তালা ঝুলানো দেখা যায়।বন বিভাগের দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে ঝর্নার কাছে গিয়ে ১০ থেকে ১৫ জন পর্যটকে পাওয়া যায়। চোরাইপথে মাধবকুন্ড জলপ্রপাতে প্রবেশকারী পর্যটকরা অসাধু ব্যক্তিদের মাধ্যমে জলপ্রপাতে টাকার বিনিময়ে প্রবেশ করেছেন বলে স্বীকার করেছেন।
ঢাকা, টাঙ্গাইল ও গাইবান্ধা থেকে মাধবকুন্ড জলপ্রপাতে বেড়াতে আসা কয়েকজন পর্যটক দৈনিক সকালের সময়কে অভিযোগ করে বলেন, নিষেধাজ্ঞার প্রচার প্রচারণা না থাকায় আমরা এখানে বেড়াতে এসে ভিতরে প্রবেশ করতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছি।তারা আরোও বলেন নিষেধাজ্ঞা থাকার কারণে আমরা কষ্ট করে এখানে এসে তখন ভিতরে প্রবেশ করতে পারছিনা ঠিক তখন সরকারি কর্মকর্তারা বিশেষ অনুমতি নিয়ে এখানে প্রবেশ করছে।যা খুবই দুঃখজনক ব্যাপার। সাধারণ পর্যটকদের ও সরকারি বড় কর্তাদের জন্য আলাদা নিয়ম হওয়ায় আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে মাধবকুন্ড জলপ্রপাত খোলে দেওয়াযর দাবি জানান আগত পর্যটকবৃন্দ।
মাধবকুন্ড জলপ্রপাতের ইজারাদার ছালেহ আহমদ জুয়েল বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে এ পর্যটন কেন্দ্রটি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার ফলে আমরা অনেক অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি। বর্তমানে অনেক পর্যটক এসে ভিতরে প্রবেশ করতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন।তবে কতিপয় অসাধু ব্যক্তিদের মাধ্যমে অনেক পর্যটক টাকার বিনিময়ে ঝুঁকি নিয়ে মাধবকুন্ড জলপ্রপাতে প্রবেশ করছে। যেহেতু দেশ অনেকটা স্বাভাবিক হওয়ায় পথে তাই সরকারের কাছে অবিলম্বে এ পর্যটন কেন্দ্রটি খুলে দেওয়ার দাবি করছি।
মাধবকুন্ড জলপ্রপাতের দায়িত্বে থাকা টুরিস্ট ওসি ফয়ছাল আহমদ বলেন,যারা অবৈধ ভাবে ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তায় পর্যটকদের ঝর্নার কাছে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বড়লেখা রেঞ্জ কর্মকর্তা শেখর রন্জন দাশ বলেন, সাধারণ পর্যটক ও বড় সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য মাধবকুন্ড জলপ্রপাতে প্রবেশের আলাদা কোন নিয়ম না থাকলেও অনেক সময় চাপের কারণে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের প্রবেশে অনুমতি দেওয়া হয়।