সুনামগঞ্জে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ধান উৎপাদনের আশা

নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ এপ্রিল ২০২৩, ৫:১৫ অপরাহ্ণ
কোনো ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা না দিলে এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে সুনামগঞ্জ সদরসহ জেলার ১২ উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ধান উৎপাদনের আশা করছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর।
জানা যায়, জেলায় চলতি বছর দুই লাখ ২২ হাজার ৭৪৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড ৬০ হাজার ৮৬০ হেক্টর, উচ্চ ফলনশীল এক লাখ ৬০ হাজার ৫৬৫ হেক্টর ও স্থানীয় জাতের ১ হাজার ৩৭০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। কয়েকটি উপজেলায় এরইমধ্যে ২০০ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে। জেলায় এ বছর সাড়ে ১৩ লাখ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের আশা করছে কৃষি বিভাগ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ধর্মপাশা উপজেলার চন্দ্রসোনারথাল, নলুয়া, চাপাতি, রুইবিল ও মাটিয়াসহ বিভিন্ন হাওরে আগাম জাতের ধান কাটা-মাড়াই চলছে। এসব হাওরে শ্রমিকরা ধানকাটার কাজ করছেন। এছাড়াও কৃষি বিভাগ কর্তৃক ভর্তুকির মাধ্যমে দেয়া কম্বাইন্ড হারভেস্টারে স্বল্প সময়ে ধান প্রক্রিয়াজাত হয়ে কৃষকের বাড়ি পৌঁছে যাচ্ছে। চন্দ্রসোনারথাল হাওরের কৃষকরা ধান কাটার পর নৌকায় করে খলায় নিয়ে যান। সেখানে ধান মাড়াই ও শুকানোর কাজ করছেন। পরিবারের নারী-পুরুষ সবাই এখন ধান প্রক্রিয়াজাতকরণে ব্যস্ত। আর কম্বাইন্ড হারভেস্টার দিয়ে কাটা ধান জমি থেকেই ৮৫০ টাকা মণ দরে বিক্রি করছেন কৃষকরা। এদিকে, ধর্মপাশা উপজেলার ধারাম, গনিয়াকান্দা রাজাপুর, শয়তানখালি, দয়ালপুর দৌলতপুর গ্রামের কৃষকদের দম ফেলার সময় নেই এখন।
উপজেলার সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোকারম হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগে এখন হাওরের ধান কাটা এবং মাড়াই সবই হয় মেশিনে। এজন্য কৃষকরা জমি থেকে ধান বিক্রি করতে পারেন। দৌলতপুর গ্রামের কৃষকরা আগে একদিনে শ্রমিক দিয়ে ৩-৪ বিঘা জমির ধান কাটাতে পারতেন। এখন কম্বাইন্ড হারভেস্টার দিয়ে দ্রুত ধান কাটা, মাড়াই ও ঝাড়া দেয়া যায়। ধান সেদ্ধ আর শুকানোর কাজ বাদে সব কাজই এখন মেশিনে করা যায়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড পূর্বাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী খুশিমোহন সরকার বলেন, ফসল রক্ষা বাঁধ সুরক্ষিত আছে। আগামী দশদিন পর্যন্ত তেমন কোনো বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাসও নেই হাওর এলাকায়।
সুনামগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বিমল চন্দ্র সোম জানান, বেশকিছু হাওরে আগাম জাতের ধান কাটা হচ্ছে। তাতে ফলনও হয়েছে ভালো।
জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, দ্রুত হাওরের ধান কাটার জন্য সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বাইরে থেকে শ্রমিক ও কম্বাইন্ড হারভেস্টার নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বড় ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় না হলে কোনো রকম বাধা ছাড়া হাওরের ফসল কেটে ঘরে তোলা যাবে।