পহেলা বৈশাখ আজ

নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৪ এপ্রিল ২০২৩, ৮:২৪ পূর্বাহ্ণ
আজ শুক্রবার পহেলা বৈশাখ। চৈত্রসংক্রান্তির মাধ্যমে ১৪২৯ সালকে বিদায় জানিয়ে বাংলা বর্ষপঞ্জিতে আজ যুক্ত হবে নতুন বছর ১৪৩০। আজ সকালে ভোরের প্রথম আলো রাঙিয়ে দেবে নতুন স্বপ্ন, প্রত্যাশা আর সম্ভাবনাকে। স্বাভাবিক ভাবেই সে স্বপ্ন নতুন বিশ্ব-নতুন বাংলাদেশ। পয়লা বৈশাখ সকল সঙ্কীর্ণতা, কূপমণ্ডূকতা পরিহার করে উদারনৈতিক জীবন-ব্যবস্থা গড়তে উদ্বুদ্ধ করে। বাঙালির মনের ভেতরের সকল ক্লেদ, জীর্ণতা দূর করে আমাদের নতুন উদ্যমে বাঁচার অনুপ্রেরণা দেয়। বাঙালি, বিশ্বের বুকে এক গর্বিত জাতি, পয়লা বৈশাখের বর্ষবরণে মধ্যে এই স্বজাত্যবোধ ও বাঙালিয়ানা নতুন করে প্রাণ পায়, উজ্জীবিত হয়।
বাংলা ১৪৩০ সাল। পুরাতন বছরের জরা দূর করে নতুনের কেতন উড়িয়ে বৈশাখ এসেছে বাংলাকে নবরূপ দিতে। বৈশাখের বাতাবরণে ধরণী অস্থির হলেও বাঙালির মন হয়ে ওঠে আরও যৌবনা। অতীতের সব গ্লানি মুছে বাঙালি ফিরে পায় নবপ্রাণ। কেননা পহেলা বৈশাখ বাঙালির একটি সার্বজনীন লোকজ উৎসব।
এদিন আনন্দঘন পরিবেশে বরণ করে নেয়া হয় নতুন বছরকে। কল্যাণ ও নতুন জীবনের প্রতীক হলো নববর্ষ। অতীতের ভুলত্রুটি ও ব্যর্থতার গ্লানি ভুলে নতুন করে সুখ-শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় উদযাপিত হয় নববর্ষ। পহেলা বৈশাখে বর্ণিল উৎসবে মাতবে দেশ।
বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে দেশবাসীসহ বাঙালিদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। নববর্ষ উপলক্ষে আজ সরকারি ছুটি।
বাঙালির সর্বজনীন উৎসব বর্ষবরণের মহা আয়োজনে মেতে উঠবে গোটা দেশ। বর্ষবরণে মেতে উঠবে দেশের বাইরে থাকা বাঙালিরাও। হাজার বছরের ইতিহাসে বর্ষবরণের আবেগ গেঁথে আছে বাঙালিয়ানার মর্মে মর্মে। বাঙালির উৎসব বর্ষবরণে গ্রাম বাংলার সংস্কৃতির খাঁটি রূপ রূপায়িত হয়।
এই দিনে পরস্পরকে মিষ্টান্ন দিয়ে আপ্যায়ন, ব্যবসায়ীর অর্থ পরিশোধ করা, হালখাতা খোলার সেই চিরায়ত দৃশ্যগুলো ঘুরপাক খায়। বৈশাখ মানে গ্রামে ও শহরে মেলায় মানুষের ভিড়। বৈশাখী মেলার অন্যতম অনুষঙ্গ পুতুল নাচ, হাতি-ঘোড়ার সার্কাস, বায়স্কোপ। কোথাও আবার দেখা মেলে লাঠিখেলা, পালাগান, কীর্তনের আসর, নৌকা-বাইচ বা মাঠে কুস্তিখেলার দৃশ্য।
রাজধানীসহ সারাদেশজুড়ে থাকবে বর্ষবরণের নানা আয়োজন। ‘বাংলা নববর্ষ ১৪৩০’ জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সরকার। সরকারি ছুটির দিন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। রমনা বটমূলে এ দিন ভোরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ছায়ানট।
কালক্রমে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান এখন শুধু আনন্দ-উল্লাসের উৎসব নয়, এটি বাঙালি সংস্কৃতির একটি শক্তিশালী ধারক-বাহক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শুধু তাই নয়, উৎসবের পাশাপাশি স্বৈরাচার-অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিবাদও এসেছে পহেলা বৈশাখের আয়োজনে। ১৯৮৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের উদ্যোগে বের হয় প্রথম মঙ্গল শোভাযাত্রা। যা ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর ইউনেস্কো এ শোভাযাত্রাকে বিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের মর্যাদা দেয়।