জয় দিয়ে সাফের প্রস্তুতি সারল বাংলাদেশ

নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৬ জুন ২০২৩, ৫:২৫ পূর্বাহ্ণ
সাফের প্রস্তুতি হিসেবে বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) কম্বোডিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষের মাটিতে খেলতে নেমে ১-০ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
প্রথমার্ধে মজিবুর রহমান জনির গোলে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। এরপর দ্বিতীয়ার্ধে কোন দল গোলের দেখা না পেলে জয় দিয়েই সাফের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে জামাল-জিকোরা। এটি কম্বোডিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের টানা তৃতীয় জয়।
কম্বোডিয়ার বিপক্ষে এ নিয়ে ছয়বার মাঠে নামে বাংলাদেশ। যেখানে একটিতেও জিততে পারেনি স্বাগতিকরা। বাংলাদেশের চারটি জয়ের বিপরীকে ড্র ছিল একটি।
এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল। যেখানে রাকিব হোসেনের একমাত্র গোলে জয়ের হাসি নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল জামাল ভূঁইয়ারা। বাংলাদেশ জিতলেও বল পজেশন ও আক্রমণে দাপট দেখিয়েছে স্বাগতিক কম্বোডিয়া।
প্রথম মিনিটেই তারা দুটি কর্নার পেয়েছে। ম্যাচ যত গড়িয়েছে, পরিকল্পিত আক্রমণও করেছে কম্বোডিয়া। কিন্তু কখনো নিজেরা এলোমেলো শট নিয়ে সুযোগ নষ্ট করেছে, কখনো বাংলাদেশ গোলকিপার আনিসুর রহমান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছেন।
বৃহস্পতিবার নমপেনে জাতীয় অলিম্পিক স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণ করে খেলতে থাকে স্বাগতিক কম্বোডিয়া। প্রতিপক্ষের দর্শক-সমর্থকদের সামনে খেলতে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি জামাল ভূঁইয়ার দল। কিক অফের পরপরেই ভুল পাসে কম্বোডিয়ার খেলোয়াড়ের পায়ে বল তুলে দেন গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো।
তবে তপু বর্মনের ট্যাকলে যে যাত্রায় ফ্রি কিকের বদলে রক্ষা পায় বাংলাদেশ। সিন কাকাডার নেয়া ফ্রি কিক রক্ষণ দেয়ালে লেগে কর্নার হয়। কর্নারের পর কৌচ সকুমফেকের জোরাল শট অল্পের জন্য যায় পোস্টের বাইরে। একের পর এক আক্রমণ করতেই থাকে কম্বোডিয়া। তবে গোলের দেখা পায়নি তারা। ম্যাচের ২২ মিনিটে প্রথম আক্রমনের সুযোগ পায় হাভিয়ে ক্যাবরেরার শিষ্যরা। পাল্টা আক্রমণ প্রতিহত করে বল পান বাংলাদেশের স্ট্রাইকার সুমন। কিন্তু চৌন চানকাভ বাধা দিলে পড়ে যান তিনি। ফ্রি কিক পায় বাংলাদেশ। জামাল ভূঁইয়ার নেয়া দুর্বল ফ্রি কিক জমা পড়ে কম্বোডিয়ার গোলরক্ষকের বক্সে।
তবে গোলের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি বাংলাদেশকে। স্বাগতিক সমর্থকদের হতাশ করে ম্যাচে ২৫ মিনিটে এগিয়ে যায় জামাল-জিকোরা। ডান দিক থেকে ফাহিমের আড়াআড়ি ক্রসে মজিবুর রহমান জনির ভলিতে জালে জড়ায় বল। লাল-সবুজ জার্সিতে এটিই ছিল জনির প্রথম গোল।
গোল হজম করে ঘুরে দাঁড়াতে মরিয়া হয় স্বাগতিকরা। গোলের পর রক্ষণ থেকে বেরিয়ে এসে আগ্রসী ফুটবল খেলতে থাকে বাংলাদেশ। ম্যাচের ৪১তম মিনিটে গোলের সম্ভবনা তৈরি করেন কম্বোডিয়ার ওরন চানপোলিন। তবে তার শট আটকে দেন জিকো। ১-০ গোলে এগিয়ে থেকেই প্রথমার্ধ শেষ করে হাভিয়ে ক্যাবরেরা দল। দ্বিতীয়ার্ধে রক্ষণ সামলে খেলতে থাকে বাংলাদেশ। ম্যাচের ৫১ মিনিটে গোলের সুযোগ পান কম্বোডিয়ার সোস সুহানা। তবে অনায়াসে বল গ্লাভসে জমান জিকো।
এর একটু পরেই জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক হয় শেখ মোরসালিনের। এবারই প্রথম ঘোষিত দলে ডাক পেয়েছিলেন তিনি। ম্যাচের ৫৭ মিনিটে জামাল ও জনিকে তুলে মোরসালিন ও মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে নামান কোচ। এরপর ম্যাচের ৭০ মিনিটে অভিষেক হয় প্রথমবারের মতো জাতীয় দলে ডাক পাওয়া আরেক তারকা রফিকুল ইসলাম।
শেষ দিকে কিছুটা উপরে উঠে খেলার চেষ্টা করতে থাকে বাংলাদেশ। তবে ব্যবধান বাড়াতে পারেনি তারা। শেষ দিকে এসে বাংলাদেশ ১০ জনের দলে পরিণত হয়। কাজী তারিক লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। তবে তাতে ম্যাচের ফলে কোন বদল আসেনি। ১-০ গোলের জয় নিয়েই সাফের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ সামনে রেখে নিজেদের গুছিয়ে নিতে কম্বোডিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচটি খেলেছে বাংলাদেশ। আগামী ২১ জুন ভারতের বেঙ্গালুরুতে শুরু হবে দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের সর্বোচ্চ এই প্রতিযোগিতা। এবারের আসরে ‘বি’ গ্রুপে বাংলাদেশের সঙ্গে আছে লেবানন, মালদ্বীপ ও ভূটান। আগামীকাল ভারতের উদ্দেশ্যে রওনা দিবে বাংলাদেশ দল।