সিলেট চেম্বারের সাথে আমদানিকারকদের মতবিনিময়

বাংলানিউজ এনওয়াই ডেস্ক :
প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ আগস্ট ২০২৩, ৯:০০ অপরাহ্ণ
সিলেটের বিভিন্ন বর্ডারের আমদানিকারকগণ দি সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র নেতৃবৃন্দের সাথে চেম্বার কনফারেন্স হলে বৃহস্পতিবার এক সাক্ষাতে মিলিত হন। এসময় তারা আমদানি বাণিজ্যে বিরাজমান সমস্যাবলী সম্পর্কে চেম্বার নেতৃবৃন্দকে অবহিত করেন।
সভায় আমদানিকারকগণ বলেন, কিছুদিন যাবৎ কাস্টম্স এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট সিলেট এর পক্ষ থেকে ব্যবসায়ীগণকে অতিরিক্ত হারে রাজস্ব প্রদানের জন্য চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। ব্যবসায়ীগণ এ ব্যাপারে কাস্টম্স কর্তৃপক্ষের সাথে একাধিকবার আলোচনায় বসেও কোন লাভ হয়নি। নিয়ম বহির্ভূতভাবে কাস্টম্স কর্তৃপক্ষ আমদানিকৃত পণ্যের উপর ৫০% হারে মূল্য বৃদ্ধি করে তার উপর ভ্যাট প্রদানের জন্য আমদানিকারকগণকে চাপ দিচ্ছেন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে কখনই ক্রয়কৃত মূল্য থেকে ৫০% হারে মূল্য বৃদ্ধি করে পণ্য বিক্রি করা সম্ভব নয়। আমদানিকারকগণ আরো জানান, চুনাপাথর টনপ্রতি ১০ ডলার করে এবং বোল্ডার পাথর ৮ ডলার করে এলসি খোলা হলেও কাস্টম্স কর্তৃপক্ষ এতদিন চুনাপাথরের এসেসমেন্ট রেইট ১১.৫ ডলার এবং বোল্ডার পাথরের এসেসমেন্ট রেইট ১১ ডলার করে নির্ধারণ করে রাজস্ব আদায় করেছেন। কিন্তু এখন হঠাৎ করে চুনাপাথরের এসেসমেন্ট রেইট টনপ্রতি ১৩.৫ ডলার এবং বোল্ডার পাথরের এসেসমেন্ট রেইট টনপ্রতি ১৩ ডলার নির্ধারণের জন্য আমদানিকারকগণকে চাপ দিচ্ছেন। অন্যথায় কাস্টম্স কর্তৃপক্ষ আমদানিকারকগণকে মামলা-মোকদ্দমার ভয় দেখাচ্ছেন।
ইতোমধ্যে অনেক আমদানিকারকগণের উপর মামলাও দায়ের করা হয়েছে বলে আমাদনিকারকগণ জানিয়েছেন। কাস্টম্স কর্তৃপক্ষের এরকম অনিয়মের ফলে ব্যবসায়ীরা ভীত-সন্ত্রস্ত। অনেক ব্যবসায়ী দেউলিয়া হয়ে গেছেন। আমদানিকারকগণ আরো জানান, তাদের অনেকেই দেশের অন্যান্য জেলার বর্ডার দিয়ে পণ্য আমদানি করে থাকেন, কিন্তু সিলেটের মত ব্যবসায়ীদেরকে এত হয়রানি আর কোথাও করা হয় না। এ বিষয়টি সুরাহার জন্য আমদানিকারকগণ সিলেট চেম্বারের সহযোগিতা কামনা করেন এবং বিষয়টি সুরাহা হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত বৃহত্তর সিলেটের সকল বর্ডার দিয়ে সকল ধরণের পণ্য আমদানি বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন।
এ ব্যাপারে সিলেট চেম্বারের সভাপতি তাহমিন আহমদ বলেন, ব্যবসায়ীদের প্রদানকৃত ভ্যাট-ট্যাক্স ও রাজস্বের মাধ্যমে সরকারের ব্যয় নির্বাহ হয়। তাই ব্যবসায়ীদের সুবিধা-অসুবিধা দেখা সরকারের একান্ত দায়িত্ব। তিনি বলেন, আমদানিকারকদের এসব সমস্যাবলী আলোচনাক্রমে নিরসনের জন্য আমরা গত ১০ আগস্ট সিলেট চেম্বারের পক্ষ থেকে কাস্টম্স এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারকে আলোচনা সভার আহবান জানিয়ে পত্র প্রেরণ করেছি। কিন্তু কাস্টম্স কমিশনার এখনও পর্যন্ত পত্রের কোন উত্তর দেননি। উপরন্তু কাস্টম্স এর কর্মকর্তাগণ আমদানিকারকগণকে হয়রানি করে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ব্যবসায়ীদের প্রতি যথেষ্ট আন্তরিক। আশা করি সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সাথে আলোচনার মাধ্যমে আমরা এ বিষয়টি সুরাহা করতে পারবো। তিনি এ ব্যাপারে তার পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিলেট চেম্বারের সহ সভাপতি মোঃ আতিক হোসেন, পরিচালক মুজিবুর রহমান মিন্টু, সারোয়ার হোসেন ছেদু, সুনামগঞ্জ চেম্বারের পরিচালক মোঃ খসরুল আলম, সিলেট কয়লা আমদানিকারক গ্রুপ, তামাবিল পাথর চুনাপাথর ও কয়লা আমদানিকারক গ্রুপ, তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক গ্রুপ (বড়ছড়া, চারাগাঁও, বাগলি), ভোলাগঞ্জ চুনাপাথর আমদানিকারক গ্রুপ ও ছাতক আমদানিকারক গ্রুপ এর পক্ষ থেকে বশির আহমদ, মোঃ আলকাছ উদ্দিন খন্দকার, জয়দেব চক্রবর্তী, মোঃ ইউনুছ আলী, মোঃ নাজিম উদ্দিন, মোঃ নাসির উদ্দিন, জাকারিয়া ইমতিয়াজ জাকির, মোঃ নজরুল ইসলাম, চৌধুরী আর এইচ শাহিন, সেলিম চৌধুরী, মজিবুর রহমান প্রমুখ।