জগন্নাথপুরে দুই ধর্ষণ মামলার আসামি গ্রেফতার

জগন্নাথপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি :
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১০:১৪ অপরাহ্ণ
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলা চতুর্থ শ্রেণি মাদ্রাসার ছাত্রীকে শ্রীরামসি গ্রামের জয়নুল ইসলাম ও কবিরপুর গ্রামের ভন্ড কবিরাজ শহিদ মিয়া কে গ্রেফতার করা হয়েছে।
জানা যায়, চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়নে কবিরপুর গ্রামে ভন্ড কবিরাজ চিকিৎসা নামে এক ১৫ বছরের মেয়েকে ১২ সেপ্টেম্বর দুপুরে ধর্ষণের অভিযোগে ভন্ড কবিরাজ শহিদ মিয়া (৩৫)কে পুলিশ গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। ভন্ড কবিরাজ জগন্নাথপুর উপজেলা ৫নং চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়নের কবিরপুর এলাকার শানুর মিয়ার পুত্র শহিদ। এ ঘটনায় এলাকায় আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মাহমদ মিয়ার মেয়ের একটি মোবাইল চুরি হয়। মোবাইল বের করার জন্য ১২ সেপ্টেম্বর দুপুরে ভন্ড কবিরাজ শহিদের বাড়ি যায়, তখন শহিদ মেয়ের মা ও ছোট বোন কে বলে পাঁচটি জবা ফুল ও গোলাপ জল নিয়ে আসার জন্য, কবিরাজের কথা মতে মেয়েকে রেখে জবা ফুল ও গোলাপ জল আনতে জান মা। ভন্ড কবিরাজ তাদেরকে আশ্বস্ত করে তার মোবাইল বের করে দিবে ভন্ড কবিরাজ শহিদ মিয়া এক পর্যায়ে মেয়েটির উপর কু-দৃষ্টি পড়ে কবিরাজের। মেয়েটিও এরই মাঝে কবিরাজ বিভিন্ন কৌশলে মেয়েটির গোপন অন্তরঙ্গ হাত দিতে তাকে পরে দোস্ত দোস্তি শুরু করে জিম্মি করে ফেলে মেয়েকে। জোরপূর্বক দর্শন করে মেয়ের মা আসার পর বাড়িতে গিয়ে মেয়ে সব কথা খুলে বলে মা জায়েদা বেগম কে। পরে মেয়ে বাবা মাহমদ মিয়াকে মেয়েটি কথা শুনে মা বাবা থানায় আসে। সাথে সাথে ওসি তদন্ত সুশংকর পাল ঘটনা স্থলে গিয়ে ভন্ড কবিরাজকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসেন। এ অবস্থায় মেয়ের বাবা মাহমদ মিয়া বাদী হয়ে ভন্ড পীরের বিরুদ্ধে জগন্নাথপুর থানায় ধর্ষণ মামলার অভিযোগ করেন
এ ব্যাপারে মেয়ের মা জায়েদা বেগম জানান, আমার মেয়ে ভয়ে মুখ খুলিনি। বাড়িতে গিয়ে আমাকে মেয়েটি বলে তাকে জোরপূর্ব ধর্ষণ করে। এই ভন্ড কবিরাজ। আমার মেয়ের যে সর্বনাশ করেছে আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই। মেয়ের বাবা মাহমদ আলী বলেন, ভন্ড পীর আমার মেয়ের সর্বনাশ করেছে। আমি বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করি।
উপর দিকে সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার শ্রীরামসি গ্রামের ১০ বছর বয়সী ৪র্থ শ্রেণীর মাদ্রসা ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযুক্ত আসামী একই গ্রামের মৃত সুন্দর আলী পুত্র এক কন্যা সন্তানের জনক জয়নুল ইসলাম (৪০) কে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ১২ সেপ্টেম্বর রাতে নিজ বাড়ি থেকে এস আই মিজানুর রহমান গ্রেফতার করেন।
এ ব্যাপারে অফিসার ইনচার্জ মিজানুর রহমান সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি আসামী গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করেন। ধর্ষণ মামলা দুই জন আসামীকে শ্রীরামসি গ্রামে জয়নুল ও কবিরপুর গ্রামের ভন্ড কবিরাজ শহিদ অভিযুক্ত দুই আসামীকে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে বুধবার প্রেরণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, মাদ্রাসাছাত্রীর বাড়ি ও মামার বাড়ি উপজেলার একই গ্রামের পাশাপাশি এলাকায়। সকালে মায়ের কথায় মাদ্রাসা ছাত্রী সে মামার বাড়ি থেকে শুঁটকি আনতে যায়। বাড়ি ফেরার পথে জয়নুল নামের ওই ব্যক্তি তাকে তুলে নিয়ে এলাকার একটি পুকুরপাড়ে ধর্ষন করে। সেখানে তাকে ধর্ষণ করে বিষয়টি কাউকে না বলার জন্য হুমকি দেন। বাড়ি যাওয়ার পর শিশুটি কান্নায় ভেঙে পড়ে তার মাকে বিষয়টি জানায়। পরে শিশুটিকে জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠান। ৩১ মে ভিকটিমের মা রিনা বেগম বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইবুনালে একটি মামলা দায়ের করেন।