পরীক্ষায় বসার দাবিতে শাবিতে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি

শাবিপ্রবি প্রতিনিধি :
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৪:৫৫ অপরাহ্ণ
সহপাঠী অসুস্থ থাকায় সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষায় একটি কোর্সে বাংলা বিভাগের স্নাতকোত্তরের কোনো শিক্ষার্থী পরীক্ষায় না বসায় ঐ কোর্সে সকল শিক্ষার্থীকে অনুপস্থিত দেখিয়ে পরবর্তী ব্যাচের সঙ্গে কোর্স তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ সিদ্ধান্তকে বাতিল করে খুব দ্রুত ঐ কোর্সের পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ঐ শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১৮ আগস্ট) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন ‘বি’ এর সম্মুখে বাংলা বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীরা অবস্থান কর্মসূচি ও মানববন্ধন পালন করে। দুপুর দেড়টা পর্যন্ত এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।
‘অমানবিক সিদ্ধান্ত মানি না, মানব না’, ‘আমাদের জীবন থেকে ছয় মাস কেড়ে নেবেন না’, ‘দাবি মোদের একটাই, পরীক্ষায় বসতে চাই’, ‘ছয় মাসের বিলম্ব, পরিবারকে কি বলবো?’, ‘আমাদের দাবি আমাদের দাবি, মানতে হবে মানতে হবে’ ইত্যাদি লেখা সম্বলিত প্লাকার্ড হাতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা।
অবস্থান কর্মসূচিতে চলমান অবস্থান শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি দল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রাশেদ তালুকদারের সাথে সাক্ষাৎ করেন। এসময় এ পরিচালক বলেন, এটা একাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত। আমি তোমাদের আশ্বাস দিতে পারবো না যে তোমরা উঠে পড়ো, তোমাদের দাবি মেনে নেওয়া হবে। তবে তিনি শিক্ষার্থীদের হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সাথে কথা বলবেন বলে জানান শিক্ষার্থীদের কাছে।
ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালকের সাথে দেখা করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রেস ব্রিফিং করেন জান্নাতুল ফেরদৌস মুন্নি। প্রেস ব্রিফিংয়ে মুন্নি বলেন, গত ১৬ জুলাই বাংলা বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকোত্তর প্রথম সেমিস্টারের ‘গণমাধ্যম ও চলচ্চিত্র’ শিরোনামের ৩ ক্রেডিটের একটি কোর্সের ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। তবে সেসময় আমাদের এক সহপাঠী দীর্ঘদিন ধরে জ্বর আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকায় এবং তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে সিলেটের জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিল। ‘গণমাধ্যম ও চলচ্চিত্র’ কোর্সের ফাইনাল পরীক্ষার দুই-একদিন আগে পর্যšত্ম আমরা অপেক্ষা করেছি। তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় আমরা বিভাগীয় প্রধানকে মৌখিকভাবে পরীক্ষাটি পেছানোর অনুরোধ করি। তখন বিভাগের শিক্ষকরা মিটিং করে আমাদের জানান পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন করা যাবে না।
এসময় তিনি আরও বলেন, শিক্ষকরা চাইলেই বিভাগের শিক্ষার্থীর শারীরিক অসুস্থতার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে ওই কোর্সের পরীক্ষাটি পেছাতে পারতেন। কারণ, আমাদের পরবর্তী সেমিস্টার শুরু হওয়ার আগে পর্যাপ্ত সময় বাকি ছিল। আমাদের ওই অসুস্থ সহপাঠীর এই কোর্সের পরীক্ষা আলাদাভাবে নেওয়া হবে বা বিকল্প কোনো পদ্ধতির কথা আমাদের সেসময় জানানো হলে আমরা বাকিরা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতাম। আমাদেরকে বলা হয়েছিল, একজন শিক্ষার্থীও যদি ১৬ জুলাইয়ের পরীক্ষায় অংশ নেয়, তাহলে বাকিরা কোর্স থেকে ড্রপ আউট হবে। আমরা আমাদের সহপাঠীর শারীরিক ও মানসিক অবস্থা বিবেচনা করে কেউই ওই কোর্সের ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নেই নি।
এরইমধ্যে গত ১৪ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় উলেস্নখিত কোর্সে আমাদেরকে অনুপস্থিত দেখিয়ে পরবর্তী ব্যাচের সাথে পরীক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ সিদ্ধান্ত আমরা মেনে নিচ্ছি না। ইতোমধ্যে ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে আমরা সমস্ত ক্লাস করা বর্জন করেছি। আগামী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে প্রশাসন থেকে কোনো ইতিবাচক সিদ্ধান্ত না আসলে আমরা পরবর্তী কর্মসূচির পদক্ষেপ নিব।