হবিগঞ্জ শহরে রাস্তায় মানুষকে অচেতন করে টাকা লুট!

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি :
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ অক্টোবর ২০২৩, ৪:১০ অপরাহ্ণ
হবিগঞ্জে রাস্তায় হাঁটতে থাকা মানুষকে অচেতন করে টাকা লুটে নেয়ার নতুন কৌশল অবলম্বন করছে ছিনতাইকারীরা। জেলা শহরের ব্যস্ত এলাকায় এভাবে ছিনতাইয়ের চারটি ঘটনার খবর পাওয়া গেছে।
ঘটনাগুলো এমন- একা হাঁটতে থাকা একজন লোকের সঙ্গে অপ্রত্যাশিতভাবে কথা বলতে থাকে কয়েকজন। তারা অল্প সময়েই লোকটিকে অচেতন করে লুটে নেয় টাকাসহ সাথে থাকা সবকিছু।
এদিকে, হবিগঞ্জ শহরে এ ধরনের ঘটনা নতুন বলে দাবি করছে পুলিশ। তারা বলছে এগুলো অজ্ঞানপার্টি অথবা রুমাল পার্টির কাজ হতে পারে।
সবশেষ ঘটনা মঙ্গলবার (২ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় জেলা শহরের টাউন রোডে। এ সময় লায়েছ মিয়া (৪২) নামে এক সংবাদপত্র বিপণন কর্মীকে অচেতন করে ১২ হাজার টাকা লুটে নেয় ছিনতাইকারী দল। লায়েছ হবিগঞ্জ সদর উপজেলার এড়ালিয়া গ্রামের হুরাই মিয়ার ছেলে। তিনি স্থানীয় ও জাতীয় ১৭টি দৈনিক পত্রিকার এজেন্ট। পত্রিকা বিক্রেতা টাউন হল রোডে একা হাঁটছিলেন। হঠাৎ কয়েকজন যুবক তাঁর সঙ্গে অপ্রাসঙ্গিকভাবে কথা বলতে শুরু করে। পরে তিন/চার মিনিটের মধ্যে তার পকেটে থাকা ১২ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।
লায়েছ বলেন, ‘টাকাগুলো আমার পকেট থেকে বের করে নেওয়ার সময় আমি টের পাই, দেখেছিও। কিন্তু প্রতিবাদ করতে পারছিলাম না, কথাও বলতে পারিনি। আধাঘণ্টা পরে আশপাশের মানুষকে বিষয়টি বলতে পারি। তবে ততক্ষণে লোকগুলো সেখান থেকে চলে যায়।’
একইভাবে সোমবার হবিগঞ্জ শহরে আশরাফ জাহান কমপ্লেক্সের সামনে এক নারীর ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয় কয়েক যুবক। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে ওই নারীর পরিচয় পাওয়া যায়নি। এর দুই সপ্তাহ আগে হবিগঞ্জ শহরের বেবীস্ট্যান্ড এলাকায় পান দোকানের সামনে থেকে এক স্কুল কর্মচারী এবং আদালত পাড়ায় আরেকজন বিচারপ্রার্থী এমন ঘটনার শিকার হয়েছেন।
এ বিষয়ে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. খলিলুর রহমান জানান, সম্প্রতি এমন কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। যদি হয়েও থাকে তাহলে এগুলো অজ্ঞানপার্টি অথবা রুমাল পার্টির কাজ। চক্রটিকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করবে পুলিশ।
কীসের ব্যবহারে লোকদের অচেতন করা যেতে পারে জানতে চাইলে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালের ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. দেবাশীষ দাশ বলেন, ‘অপরাধীরা এমন কোনো কেমিক্যাল ব্যবহার করে থাকতে পারে যা উদ্বায়ী পদার্থ। যা শ্বাসের মাধ্যমে ভিকটিমের শরীরে প্রবেশ করানো যায়। এ প্রক্রিয়ায় ভুক্তভোগী স্টোপার বা বোকা হয়ে যান, তাঁর জ্ঞান লোপ পায়। সবার পরিচিত ধুতরা পাতার গোটায়ও এমন উপাদান রয়েছে।
তবে নির্দিষ্ট কোনো ঘটনার রহস্য উদঘাটনের ক্ষেত্রে নমুনা পরীক্ষা ছাড়া বলা সম্ভব নয় এবং এক্ষেত্রে বাইরে চলাচলে সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক।