সিলেটের বিজ্ঞানীর আবিস্কার পঞ্চব্রীহি ধান
বাংলানিউজ এনওয়াই ডেস্ক :
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ অক্টোবর ২০২৩, ১০:০০ অপরাহ্ণমৌলভীবাজারের কুলাউড়ার হাজীপুর ইউনিয়নে জিন বিজ্ঞানী ড. আবেদ চৌধুরী নতুন এক ধানের জাত আবিষ্কার করেছেন। যে ধান একবার রোপণ করে ৫ বার ফলন ঘরে তোলা যায়। আবিষ্কৃত এই ধানের না দিয়েছেন পঞ্চব্রীহি ধান।
জানা গেছে, ড. আবেদ চৌধুরী কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের কৃতী সন্তান। তিনি যুক্তরাষ্ট্রে কৃষি বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা শেষে অস্ট্রেলিয়ায় জাতীয় গবেষণা সংস্থার প্রধান ধান বিজ্ঞানী হিসেবে কাজ করেন। তিনি ডায়াবেটিস প্রতিরোধক রঙিন ভুট্টা ও লাল রঙের চাল উদ্ভাবন করেছেন। এদিকে সম্প্রতি কুলাউড়া উপজেলার হাজীপুর গ্রামে নতুন জাতের ধানের চাষাবাদ পরিদর্শনে আসেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকবৃন্দ। এ সময় বিজ্ঞানী ড. আবেদ চৌধুরী তার উদ্ভাবিত ধান সম্পর্কে তাদের নিকট বিস্তারিত তুলে ধরেন।
পরিদর্শনের সময় উপস্থিত ছিলেন সাবেক শিক্ষা সচিব মো. নজরুল ইসলাম খান, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ত্ব ও হাওর কৃষি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোজাম্মেল হক, কৌলিতত্ত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগের অধ্যাপক ড. সাঈদা সুলতানা, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারি রেজিস্ট্রার মো. ইয়াছিন আলী ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন।
আবেদ চৌধুরী জানান, তিনি দীর্ঘদিন থেকে ধানের নতুন এ জাত নিয়ে গবেষণা চালিয়ে আসছেন। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অস্িেট্লয়ার হাই কমিশনের অর্থায়নে বিডিওএসএনের তত্ত্বাবধানে এক বছর মেয়াদি ‘ওঠঊগজঠগ’ প্রকল্পের মাধ্যমে উচ্চফলনশীল জাতের ধান চাষ করা হয়েছে। পরবর্তীতে ধানের এ বীজ কৃষকদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। তিনি জানান, ২০১০ সালে প্রথম উপজেলার হাজীপুর ইউনিয়নের কানিহটি গ্রামে ২৫ বর্গমিটার জমিতে ২০টি ধানের জাত নিয়ে গবেষনা শুরু করেন ড. আবেদ চৌধুরী। পরে ৩ বছরে ২০টি ধানের জাত নিয়ে গবেষণায় দেখা গেছে নির্দিষ্ট ধরণের এ জাত একই গাছে ৫ বার ফলন দিতে সক্ষম হয়। স্থানীয় জাতের ধানের সঙ্গে উন্নতমানের ধানের বীজ সংকরায়ন করে এই উচ্চ ফলনশীল ধানের জাত পাওয়া যায়। পঞ্চব্রীহি ধানের জাত দেশের অন্যান্য অঞ্চলে এখন ছড়িয়ে দেওয়ার উপযোগী হয়েছে বলেও জানান তিনি। এজন্য তিনি সরকারের সহযোগিতা চান। এ ধান ৩ গুন কম খরচে উৎপাদন করা যাবে।
বিজ্ঞানী আবেদ চৌধুরী আরো জানান, পঞ্চব্রীহি ধান চাষে প্রথম বার ১১০দিন পর ফলন আসে। পরের ফলন আসে ৪৫ দিন অন্তর। ১ বার বোরো, ২ বার আউশ ও ২ বার আমন ধানের ফলন পাওয়া যাবে। পঞ্চব্রীহি ধানে প্রথমবার হেক্টর প্রতি উৎপাদন হয় ৪ টন। ধানের চারা প্রতি ৪ সেন্টিমিটার দূরত্বে রোপণ করতে হয়।
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষিতত্ত্ব ও হাওর কৃষি বিভাগের অধ্যাপক ড. মোজাম্মেল হক বলেন, পঞ্চব্রীহি ধান আমাদের জন্য একটি আশার বিষয়। আমরা সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ড. আবেদ চৌধুরীর সঙ্গে কাজ করতে চাই। সিলেটের কৃষিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য এ প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সানজিদা জামান বলেন, পঞ্চব্রীহি ধান থেকে নতুন কিছু শিখতে পেরেছি। এই গবেষণাটি একদম অতুলনীয়।
প্রকল্প সুপারভাইজার তাহমিদ আনাম চৌধুরী বলেন, পঞ্চব্রীহি ধান চাষ প্রকল্পের মাধ্যমে ধানের বীজ চাষিদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।