শতাধিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞা চেয়েছে বিএনপি
বাংলানিউজ এনওয়াই ডেস্ক :
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ অক্টোবর ২০২৩, ১০:০৫ অপরাহ্ণমার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গত ২৪ মে বাংলাদেশের ব্যাপারে ভিসা নিষেধাজ্ঞা নীতি ঘোষণা করে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এই ভিসা নীতি ঘোষণা করা হয়। ২২ সেপ্টেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার ঘোষণা করেন যে, এখন থেকে এই ভিসা নীতি কার্যকর করা হয়েছে এবং ইতোমধ্যে কিছু ব্যক্তির ভিসা বাতিল করা হয়েছে বলেও মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
তবে যাদের ভিসা বাতিল করা হয়েছে তাদের নাম মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ করেনি যেহেতু আইন অনুযায়ী ভিসা একটি গোপন বিষয়। কাজেই যাদের ভিসা বাতিল হয়েছে তাদেরকেই শুধু ইমেলের মাধ্যমে এই বার্তা দেওয়া হবে। আর যাদের মার্কিন ভিসা নেই কিন্তু তারা মার্কিন ভিসা নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়েছেন তারা যখন ভিসার আবেদন করবেন তখন তাদেরকে জানানো হবে যে, তিনি ভিসা পাবার যোগ্য নন।
তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের পর বাংলাদেশের অন্যতম বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপি এখন এটিকেই আন্দোলনের প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।
অন্তত এক ডজন বিষয়কে কেন্দ্র করে বিএনপির নেতারা শতাধিক ব্যক্তির নাম, ঠিকানা দিয়ে মার্কিন দূতাবাসে অভিযোগ দাখিল করেছে এবং তাদেরকে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার জন্য তারা আবেদন করেছে এবং এ সংক্রন্ত কিছু তথ্য প্রমাণও উপস্থাপন করা হয়েছে।
যে সমস্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে এই আবেদন করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে; বিএনপি নেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির গ্রেপ্তার এবং অভিযোগ করা হয়েছে যে, এ্যানিকে গ্রেপ্তার করে নির্যাতন করা হয়েছে।
এজন্য ৬ জন ব্যক্তিকে দায়ী করা হয়েছে। বিএনপির শতাধিক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই গ্রেপ্তারের অভিযোগে অন্তত ১৮ জন বিভিন্ন স্তরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
বিএনপির সমাবেশের আশপাশ থেকে কয়েকজন নেতাকে উঠিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করে বিএনপি আরও অন্তত ৪ টি অভিযোগ করেছে। যে অভিযোগগুলোতে তারা বলছে যে, মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে।
এছাড়াও অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান এবং সংগঠনের কর্মকর্তা এলানের দুই বছর দণ্ডের বিষয়টি নিয়েও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। এরকম ভাবে বিভিন্ন ছোট খাটো ঘটনা নিয়েও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নিয়মিত অভিযোগ দেওয়া নিয়ে বিএনপি ইতোমধ্যে একটি সেল তৈরি করেছে।
শামা ওবায়েদ এর নেতৃত্বে এই সেলের প্রধান কাজ হলো কোথাও কেউ গ্রেপ্তার হলে বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোন পদক্ষেপ নিলে সাথে সাথে তা লিখিত আকারে এবং সেই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ নিয়ে মার্কিন দূতাবাসে পাঠিয়ে দেয়া। তবে এ ধরনের অভিযোগের ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কোন পদক্ষেপ নিয়েছে কিনা তা জানা যায়নি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে তারা নিজস্ব উদ্যোগে তথ্য সংগ্রহ করবে এবং বাংলাদেশের ঘটনাবলি পর্যবেক্ষণ করছে। সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আখতার বাংলাদেশ সফর করে গেছেন এবং সফর শেষে যাওয়ার পথে তিনি বলেছেন যে, আগামী তিনমাস তারা বাংলাদেশকে পর্যবেক্ষণ করবে।
সেক্ষেত্রে দেখার বিষয হলো বিএনপির এই সমস্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে তারা কিছু করেন কি না। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি একটি রাজনৈতিক দলের দেউলিয়াত্ব। রাজনৈতিক বিরোধের জন্য কথায় কথায় বিদেশীদের কাছে নালিশ করা একটি গর্হিত রাজনৈতিক সংস্কৃতি এবং দেশের আত্ম মর্যাদার জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। আর বিএনপি সেই গর্হীত পথই বেছে নিয়েছে।