অধিনায়ক সংকটে বিসিবি
স্পোর্টস ডেস্ক :
প্রকাশিত হয়েছে : ০৮ নভেম্বর ২০২৩, ৭:২৩ অপরাহ্ণবিশ্বকাপে দাপুটে জয়ে শুরু করলেও টানা ছয় ম্যাচে সাকিব বাহিনীর কপালে জুটেছে হতাশার পরাজয়। তবে বিশ্বমঞ্চে নিজেদের অষ্টম ম্যাচে ৩ উইকেটের জয়ে আইসিসি ২০২৫ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলার সম্ভাবনা জিইয়ে রেখেছে বাংলাদেশ। তবে এরই মধ্যে লাল-সবুজের শিবিরের নতুন ধাক্কা অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের ছিটকে যাওয়া। শ্রীলঙ্কাকে হারানোর দিনে ফিল্ডিংয়ের সময় আঙুলে চোট পান সাকিব। ফিল্ডিংয়ের পর আঙুলের ব্যথা বাড়লে পেইনকিলার খেয়ে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন তিনি। কিন্তু এ চোটের কারণে বিশ্বকাপ থেকেই ছিটকে গেছেন লাল-সবুজের অধিনায়ক।
বাঁ হাতের তর্জনীর হাড় ভেঙে মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকায় ফিরেছেন সাকিব। চোট গুরুতর হওয়ায় সাকিবকে প্রায় মাসখানেক মাঠের বাইরে থাকা লাগবে। আগামী ১১ নভেম্বর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শেষ ম্যাচে সাকিবকে ছাড়াই খেলবে টাইগাররা। দেশেই পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠার লড়াই চালাবেন তিনি। তাই নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে তাকে পাওয়া নিয়েও শঙ্কা জেগেছে। তবে শঙ্কা এখানেই শেষ নয়। আগামী ডিসেম্বরে নিউজিল্যান্ড সফরের শুরুতে সাকিবকে পাওয়া নিয়েও সংশয় রয়েছে। এ সফরে তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলবে লাল-সবুজেরা।
তবে চোট না থাকলেও নাকি কিউইদের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে খেলতেন না সাকিব। জানা গেছে, আগেই পরিকল্পনা ছিল এ সিরিজে থাকবেন না বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডার। আগামী ১৪ বা ১৫ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে পরিবারের কাছে যাচ্ছেন তিনি, তবে বেশ আগে থেকেই এ সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছিলেন সাকিব। আর চোটে পড়ার কারণে সহজেই সেখানে যেতে পারছেন তিনি।
তবে সাকিবের এ ইনজুরি বড় চিন্তার কারণ হচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) জন্যে। কেননা, তার অনুপস্থিতি আবারও অধিনায়ক–সংকটে ফেলে দিয়েছে বিসিবিকে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে টেস্টে কে হবেন অধিনায়ক? অন্যদিকে বিশ্বকাপে পাড়ি জমানোর সময়ে সাকিব নিজেই বলেছেন, বিশ্বকাপের পর আর অধিনায়কত্ব করবেন না। এখন সাকিব নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকলে বিসিবি আবারও নতুন কাপ্তান খুঁজতে হবে।
জানা গেছে, অধিনায়কত্ব ইস্যুতে সাকিবের কাছে পরিষ্কার বক্তব্য জানতে চাইবে বিসিবি। তবে টেস্ট সিরিজ দরজায় কড়া নাড়তে থাকায় আপাতত এই সংস্করণেরই সমাধান করবে বিসিবি।
এক্ষেত্রে এগিয়ে থাকছেন সহ-অধিনায়ক লিটন দাস। তবে উইকেটকিপার এ ব্যাটারের নাকি ‘সহ’ শব্দে কিছুটা ‘অ্যালার্জি’ আছে। সহজ করে বললে ঠেকার কাজ চালাতে অনীহা রয়েছে তার। তাই দীর্ঘ মেয়াদে পূর্ণ দায়িত্বে থাকতে চান তিনি। তবে বিসিবির নাকি এতেই আপত্তি! কেননা, বেশ কিছু সিরিজে অধিনায়কত্বের পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে তার। সেখান থেকে বিসিবির উপলব্ধি, ভালো ব্যাটার হলেও তার মধ্যে নাকি ‘ক্যাপ্টেন্সি ম্যাটেরিয়াল’র ছোঁয়া নেই।
এবার প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে, তাহলে কার কাঁধে অধিনায়কত্বের গুরুদায়িত্ব চাপাবে বিসিবি। উইকেটকিপার ব্যাটার মুশফিকুর রহিম অধিনায়কত্বে আগ্রহী নন। বিশ্বকাপে নানান নাটকীয়তায় তামিম ইকবালের অধিনায়কত্ব নেওয়ার ক্ষীণ সম্ভাবনাও নেই। এমনকি টেস্ট সিরিজে তার খেলা নিয়েও আশার বাণী নেই। ধারণা করা হচ্ছে, চোট সারিয়ে একদম আগামী মার্চে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হোম সিরিজে মাঠে ফিরবেন তিনি। এর বাইরে যারা রয়েছেন, তাদের মধ্যে কাকে এ দায়িত্ব দেওয়া হবে; তা নিয়েও রহস্য রয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে ‘মন্দের ভালো’ হিসেবে নাজমুল হোসেন শান্ত কিংবা মেহেদী হাসান মিরাজে আস্থা রাখার বিষয়ে পরিকল্পনা সাজাচ্ছে বিসিবি। তাদের মধ্যেই কাউকে হয়তো আপৎকালীন টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে বেছে নেওয়া হতে পারে। এ প্রসঙ্গে বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা প্রধান জালাল ইউনুসের মন্তব্য, নিউজিল্যান্ড পূর্ণ শক্তি নিয়ে আসছে। কাজেই আমাদেরও যতটা সম্ভব শক্তিশালী দল গঠন করতে হবে, যোগ্য অধিনায়ক ঠিক করতে হবে। বিশ্বকাপের পর বোর্ডে আলোচনা করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।