গাজার হাসপাতালে বোমাবর্ষণ হচ্ছে : ডব্লিউএইচও

বাংলানিউজ এনওয়াই ডেস্ক :
প্রকাশিত হয়েছে : ১০ নভেম্বর ২০২৩, ৯:৫২ অপরাহ্ণ
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল এবং লাইফ সাপোর্টে শিশু থাকা অপর একটি হাসপাতালে বোমাবর্ষণ করা হচ্ছে। শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এ কথা বলেছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। ডব্লিউএইচও বলেছে, এত দিন পর্যন্ত গাজার বিশটি হাসপাতাল বোমাবর্ষণের বাইরে ছিল।
গাজা শহরের আল শিফা হাসপাতালের প্রাঙ্গণে ইসরায়েলি হামলার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে ডব্লিএইচও-এর মুখপাত্র মার্গারেট হ্যারিস বলেছেন, আমি আল শিফা সম্পর্কে বিশদ পাইনি। তবে আমরা জানি তারা বোমা হামলার শিকার হচ্ছে।
তিনি বলেন, উত্তর গাজার একমাত্র শিশু চিকিৎসা সেবা প্রদানকারী হাসপাতাল রান্টিসি হাসপাতালেও ‘উল্লেখযোগ্য বোমা হামলা’ হয়েছে।
বিস্তারিত জানতে চাওয়া হলে সরেজমিনে কর্মরত সহকর্মীদের উদ্ধৃত করে তিনি বলেছেন, শিফা হাসপাতাল এলাকায় তীব্র সহিংসতা হয়েছে। তবে এই সহিংসতার জন্য তিনি কোনও পক্ষকে দায়ী করেননি।
গাজা পরিবারগুলো উপত্যকার বৃহত্তম আল-শিফা হাসপাতালে আশ্রয় নিয়েছে। ইসরায়েলি সেনাদের ঘেরাওয়ে থাকা গাজা শহরের ভেতরে এটি অবস্থিত। ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি বলেছে, এই হাসপাতালে নিচে ভূগর্ভে হামাস গোষ্ঠীর প্রধান ঘাঁটি রয়েছে। এলাকাটির বাসিন্দাদের গাজার দক্ষিণাঞ্চলে চলে যেতে নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
মুখপাত্র মার্গারেট হ্যারিস বলেছেন, রান্টিসি হাসপাতালে শিশুরা লাইফ সাপোর্টে রয়েছে এবং ডায়ালাইসিস গ্রহণ করছে। তাদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া অসম্ভব হবে।
একই ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘের মানবিক দফতরের মুখপাত্র জেনস লারকে বলেছেন, মিসর থেকে রাফাহ ক্রসিং দিয়ে গাজায় ত্রাণ প্রবেশে কিছু সমস্যা রয়েছে। এটি পথচারীদের কথা বিবেচনা করে তৈরি হয়েছিল, ট্রাক চলাচলের জন্য নয়।
সংস্থাটি জানিয়েছে, বুধবার মাত্র ৬৫টি ট্রাক খাদ্য, ওষুধ, স্বাস্থ্য সরঞ্জাম, পানি এবং সাতটি অ্যাম্বুলেন্স মিসর থেকে গাজায় পাড়ি দিয়েছে। যা একেবারে নগণ্য। এসব সহযোগিতা উত্তর গাজায় পৌঁছাতে পারছে না।
জেনস লারকে বলেন, বর্তমান অবস্থায় আমরা উত্তরে গাড়ি চালাতে পারি না। যা অবশ্যই গভীর হতাশাজনক। কারণ আমরা জানি যে কয়েক লাখ মানুষ এখনও উত্তরে রয়ে গেছে।
তিনি বলেন, আজ যদি পৃথিবীতে নরক থাকে, সেটির নাম উত্তর গাজা। এখানে দিনে ভয়ের জীবন, রাতে অন্ধকার এবং এমন পরিস্থিতিতে আপনি আপনার বাচ্চাদের কী বলবেন। এটি প্রায় অকল্পনীয় যে, তারা আকাশে যে আগুন দেখছে তা তাদের হত্যা করবে।
আরও ত্রাণ সরবরাহের জন্য কেরাম শালোম ক্রসিং পুনরায় চালু করার জন্য ইসরায়েলকে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকে গাজা উপত্যকায় অবিরাম বোমাবর্ষণ ও স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল। বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, হামলায় প্রতি দিন চার ঘণ্টার বিরতি দিতে রাজি হয়েছে ইসরায়েল।
এই বিরতির সমালোচনা করে জেনস লারকে বলেছেন, এই বিষয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে সমন্বয় করা হয়নি। মানবিকতার খাতিরে এটিকে নিরাপদে করার জন্য বিষয়টি নিয়ে অবশ্যই সব পক্ষের একমত হওয়া উচিত।
কয়েক হাজার মানুষ দক্ষিণদিকে ধাবিত হওয়ার কারণে গাজার আশ্রয়কেন্দ্রে ভিড়ের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন তিনি। বলেছেন, এর ফলে ইউএনআরডব্লিউএ পরিচালিত কেন্দ্রগুলোতে অতিরিক্ত মানুষের উপস্থিতি বাড়াবে। এটি পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটাবে।