এই দেশ বহু ধর্ম,বর্ণ ও গোত্রের আদর্শিক চিন্তার ফসল : সালেহ আহমদ

স্টাফ রিপোর্ট :
প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ নভেম্বর ২০২৩, ১১:৪৬ অপরাহ্ণ
সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সাবেক ছাত্রনেতা সালেহ আহমদ বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ হবে অসাম্প্রদায়িক। এই দেশ হবে বহুত্ববাদী বহু ধর্ম,বর্ণ,গোত্রের আদর্শিক চিন্তার সমাহারে। তিনি বলেন একটি জটিল সময়ে আবর্তে এখন মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ। সবাইকে স্মরণ রাখতে হবে ত্রিশ লক্ষ বীরের উত্তরাধিকার বহন করা বাঙ্গালী জাতির ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে লড়াই সংগ্রাম আর রক্তের সিঁড়ি পথ। সেই পথেই পতন ঘটেছে সাম্রাজ্যবাদের। বায়ান্নের মাতৃভাষা আন্দোলন থেকে পাকিস্তানি স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে গড়ে উঠা তীব্র গণতান্ত্রিক আন্দোলন স্বাক্ষী। এরই ধারাবাহিকতায় বাষট্টির শিক্ষা, ছেষট্টির ছয় দফাও, উনষত্তর এর গণ অভ্যুত্থান ও একাত্তর মহান মুক্তিযুদ্ধ।
তিনি শুক্রবার (১৭ নভেম্বর) সিলেটের একটি অভিজাত হলে সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন সিলেট জেলা আয়োজিত ‘সংঘাত-সহিংসতা নয়, চাই সম্প্রীতির বাংলাদেশ’ শীর্ষক মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন।
সালেহ আহমদ বলেন, দেশের চলমান রাজনৈতিক অবস্থায় সংলাপ অনিবার্য। সংলাপ, আলোচনা, সমঝোতার পথ কখনো রুদ্ধ হয় না, বাংলাদেশের মানুষ সব সময় শান্তি প্রিয় মানুষ সন্ত্রাস, নৈরাজ্য পছন্দ করেনা। বঙ্গবন্ধু ছয় দফা কর্মসূচি ঘোষণা করার পরও আলোচনার আহবান জানিয়েছেন। আজকে জাতীয় জীবনের জটিল পরিস্থিতিতে দেশের স্থিতিশীলতার স্বার্থে সবাইকে সন্ত্রাস সহিংসতা ও নৈরাজ্যের পথ থেকে বের হয়ে এক মঞ্চে বসতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা মানুষকে জিম্মি করার রাজনীতির সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে সবাইকে নিয়ে কথা বলে জাতীয় সংকট নিরসনের তাগিদ দিচ্ছি। সংবিধানের শাসনের ধারা অব্যাহত রাখতে সবাইকে ত্যাগ স্বীকার করার আহবান রাখছি। রাজনীতি ও নির্বাচনে পেশীতন্ত্র, মাফিয়া, লুটেরা, ধর্মান্ধতার স্থান থাকতে পারবেনা। দেশের সকল মানুষের সমান অধিকার রাষ্ট্রকে নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক মতাদর্শের উদ্র্ধে উঠে সকলকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করবেন। নির্বাচন আসলে সমাজের দূর্বল মানুষগুলো বিশেষ করে সংখ্যালঘুদের উপর নানান হুমকি, নিপীড়ন অতীতে নেমে এসেছে, সম্প্রীতি বিনষ্ট করে অনেকে ফায়দা লুটেছেন। দেশে সম্প্রীতি বিনষ্টকারী দুষ্ট চক্রকে কঠোরভাবে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের অধ্যাপক জাকির হোসেন বলেন, সাম্প্রদায়িক অপশক্তি এখন সমাজের সর্বস্তরে দৃঢ়মূল অবস্থান নিয়েছে। এদের বিরুদ্ধে সজাগ থাকতে হবে, জনগণের ঐক্য গড়তে হবে। একদিকে মানুষ অসহায় ও কর্মহীন। দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত বৃদ্ধির সাথে ক্ষমতায় যাওয়া আসার প্রশ্নে উন্মাদনায় জর্জরিত। অন্যদিকে হিংস্রতা আর বর্বরতার কষাঘাত। এগুলো হলো গণতন্ত্রের নামে নৈরাজ্য।
জেলা আহবায়ক হিমাংশু মিত্রের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহবায়ক ফাতেমা সুলতানা, সদস্য ডা.নাফিসা শবনমের যৌথ সঞ্চালনায় মত বিনিময় সভায় শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন এমএসএ মাসুম খান। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ওয়াকার্স পার্টি সিলেট জেলা সাধারণ সম্পাদক দীনবন্ধু পাল,সম্মিলিত নাট্য পরিষদ সিলেটের সভাপতি রজত কান্তি গুপ্ত, সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক দেবব্রত রায় দিপন,সদস্য জান্নাত আরা খান পান্না প্রমুখ।
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ওয়াকার্স পার্টি সিলেট জেলা শাখার সভাপতি কমরেড সিকান্দর আলী,বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের আহ্বায়ক আবু জাফর, বিপ্লবী কমিউনিস্ট নেতা সিরাজ আহমদ, ডা. হরিধান দাশ, তৃণমূল নারী উদ্যোক্তা সোসাইটির অনিতা দাশ গুপ্ত, আদিবাসী নেতা নিপুন রিচিল, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির ইউসুফ আহমেদ,রোটারিয়ান বিমলেন্দু পাল, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট সিলেট মহানগর সাধারণ সম্পাদক তাহির আহমদ,নারী উদ্যোক্তা হাসনা বেগম, আবদুল্লাহ খোকন, ফতেকুল করিম, রনিক সিংহ,পারভীন আক্তার লিজা, ফাহিমা বেগম, এনামুল হক, দেবদ্যূতি প্রণমী, শামীমা আক্তার, হেলাল আহমদ, এস এম মিজান প্রমুখ।