হেমন্তের ডাক পেলেই তাহিরপুরে জেগে উঠে বীজতলা

শামছুল আলম আখঞ্জী,তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি :
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ নভেম্বর ২০২৩, ১:৪৭ অপরাহ্ণ
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার অধিকাংশ এলাকা নিন্মাঞ্চল হওয়ায় বছরের ছয় মাস পানির নিচে নিমজ্জিত তাকে বীজতলাসহ সব জমি। আর হেমন্তের ডাক পেলেই ধীরে ধীরে পানি সরে গিয়ে জেগে ওঠে বীজতলার ভূমি। এ যেন (প্রকৃতির রূপ লীলা খেলা)। তখুনি কৃষক- কৃষাণীরা, চাষবাদের জন্য বীজ রোপণের স্থান গুলো উপযোগী করতে পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পাড় করেন তাঁরা।
এবারও ব্যতিক্রম ঘটেনি হেমন্তের মাঝামাঝি সময়েই হাওর, বাওর, বিল, ঝিলে, পানি ধীরে ধীরে উধাও হয়ে জেগেছে ডুবন্ত আবাদি- অনাবাদি জমিসহ রাস্তা- ঘাট। এর বুকে উঁকি দিতে শুরু করেছে তরু লতা।পুরো এলাকা ধীরে ধীরে হলুদের আবরণে বিস্তার হচ্ছে ক্রমেই।
উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের উল্লেখযোগ্য হাওর শনি, মাটিয়ান, হালি, পালইসহ,বর্ধিত গুরমায় বোরোধানের ফসল উৎপাদনে শীর্ষে রয়েছে। আর এসব হাওরের তীর বা কান্দা হেমন্তের মাঝামাঝি সময়েই, ভূমি জেগে ওঠায়, কৃষক কৃষাণীরা বীজ তলার কাজ শেষ করে বীজ রোপণে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। মাস, দুই- তিনের পর চারা লাগাবেন হাওরের (ক্ষেতে)বা জমিতে। তাই দ্রুত বীজ রোপণ করে যাচ্ছেন কৃষকরা। অন্য থায় চারা গুলো ছোট থাকলে, জমির পানিতে তলিয়ে গেলে পাতা পচনধরার আশংকা। এ কারণে ফসল উৎপাদনে ব্যাঘাত সৃষ্টি হতে পারে। তাই দুর্বার গতি বীজ তলার কাজ শেষ করতে হচ্ছে।
কার্তিক – অগ্রহায়ণ মাস হেমন্ত কাল। ভাটি অঞ্চলের জন্য নতুনত্বের এক সূচনাকাল। এসময় কৃষক- কৃষাণীরা বীজ তলায়,বীজ বপনে উপযোগী করতে, চাষবাদ ও আগাছা মুক্ত করণে নিবিড় পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করে থাকেন। ধান, আলু, মরিচ,বেগুনসহ নানা ধরনের সবজির বীজ তলায় রোপণ করা হয় । এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ পরিত্যক্ত ভূমিতে প্রাকৃতিক ভাবেই তরু লতা উঁকি দিতে শুরু করেছে।
অপর দিকে জল শূন্য হওয়ার কারণে, জলজ উদ্ভিদ ধীরে ধীরে ধ্বংসের পথে চলে যাচ্ছে।
হাওর পাড়ের কৃষক শাহীন বলেন, হেমন্ত চললেই শীতের বার্তা পৌঁছে দেয়,তখন আকাশের কোয়াশার বিন্দু বিন্দু জল,গাছ -বৃক্ষ, তরু লতার শিশির ভিজিয়ে উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি করে । একারণে খুব সর্তকতার সহিত ধানের বীজ ভিজানো, ঝাঁক বেঁধে দেওয়া, অঙ্কুর না আসা পর্যন্ত শ্রম দিতে হয় বীজে। আর তা, নিদিষ্ট সময়ে মধ্যে বীজ তলায় রোপণের কাজ শেষ করতে হয়। অন্যথায় ভালো চারার আশা করা যায় না। আর ভাল চারা না হলে,, বাষ্পার ফসলের কল্পনা করা যাবে না,,তাই সঠিক সময়ের বীজ তলার কাজ শেষ করতে দিন রাত কাজ করে যাচ্ছি। এর সাথে পরিমাণ মাফিক জল-সার কীটনাশক ও দিতে হয়।আর এবার ত দ্রুত গতিতে পানি কমে যাচ্ছে।
হেমন্তের শেষ দিকে বিল ঝিল ডোবা খালে একেবারেই পানি কমে যায় এর ফলে, মুক্ত জলাশয়ের মাছগুলো খানিকটা বন্দী শালায় বিচরণে সীমাবদ্ধতায় পড়ে যায় । কমতে থাকে জলজ উদ্ভিদের সংখ্যা। জেলেরা তখন অল্প সরঞ্জামে অধিক মাছ আহরণ করে ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাতে পারেন মৎস্য জীবী।এসময় হাট বাজার অধিক পরিমাণে মাছ ক্রয় বিক্রয় হয়।
তাহিরপুর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা হাসান উর দৌল্লা’র কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, এ উপজেলায় ৩২ হেক্টর ভমিতে বীজ রোপণ করা হয়। এর মধ্যে উপজেলার কৃষি অধিদপ্তর হতে ২৯শতজন কৃষককে, জনপ্রতি ২ কেজি করে (মোট ৫টন ৮০০কেজি) হাইব্রিড জাতের ধানের বীজ বিনামূল্যে দেওয়ার হয়েছে ।