সিলেট-১ আসন : দলীয় মনোনয়ন চাইলেন আওয়ামী লীগের ৩ জন
স্টাফ রিপোর্ট :
প্রকাশিত হয়েছে : ২১ নভেম্বর ২০২৩, ১০:২১ অপরাহ্ণদ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-১ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করলেন ৩ জন। এর মধ্যে একজন বর্তমান সংসদ সদস্য। বাকী দুজন হলেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা অধ্যাপক জাকির হোসেন ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। এর আগে এই আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন নিজের মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ করেন। তবে এই আসনে ড. একে আবদুল মোমেনকে দলের একক প্রার্থী হিসেবে ধারণা করা হয়েছিল। হঠাৎ করেই আরও দুজনের মনোনয়ন সংগ্রহের খবরে দলীয়ভাবে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
সোমবার (২০ নভেম্বর) সিলেট-১ আসনের জন্য দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করলেন মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ। একই দিনে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ছাত্রনেতা অধ্যাপক জাকির হোসেন। রোববার (১৯ নভেম্বর) তাঁর পক্ষে দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেন আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট গোলাম সোবহান চৌধুরী দিপন।
এদিকে অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ ও অধ্যাপক জাকির হোসেনের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের খবরে সরব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। নিজ নিজ অনুরাগীদের পক্ষ থেকে অভিনন্দনসহ শুভ কামনা জানিয়ে মন্তব্য করা হচ্ছে। একই সাথে মন্তব্যগুলোতে বিষয়টি দলীয় প্রধানের বিশেষ দৃষ্টিতে আনার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
অধ্যাপক জাকির হোসেন এর আগে গেল সিলেট সিটি করপোরেশেন নির্বাচনে দলের হয়ে মেয়র পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দেন। সে সময় দলীয় সিদ্বান্তে নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়ান তিনি। নগরবাসীর ধারণা, দলীয় কোনো ইঙ্গিত পেয়েই তিনি সিলেট-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য পদে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। নগরীর চিরচেনা মুখ ও একজন আপাদমস্তক মুজিব সৈনিক হিসেবে অধ্যাপক জাকিরের ব্যাপক পরিচিত রয়েছে। সে হিসেবে দলীয় প্রধান বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিয়ে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হলে বিজয় সুনিশ্চিত হবে বলে মনে করছেন ভোটাররা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক জাকির হোসেন বলেন, আজকের প্রেক্ষাপটে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদীয় আসন নং ২২৯ (সিলেট -০১) এ আমি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন সংসদ সদস্য পদ প্রত্যাশী প্রার্থী হিসাবে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছি, বাকি মহান আল্লাহতায়ালার পরম ইচ্ছা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের বিচক্ষণ সীদ্ধান্তে যিনি নৌকা মার্কার প্রার্থী হবেন, নিকট অতীতের মত আমি তাঁরই একজন কর্মী হিসাবে নৌকাকে বিজয়ী করতে সবাইকে নিয়ে একযোগে কাজ করবো ইনশাআল্লাহ।
মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ এর আগে গেল একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও দলীয় মনোনয়ন চেয়ে ব্যর্থ হন। এছাড়া তিনি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে ও সিটি করপোরেশনের মেয়র পদেও নির্বাচন করার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু কোনটিতেই মনোনয়ন পাননি। একসময়ের তুখোড় ছাত্রনেতা মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক থেকে এক লাফে কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। এরপর দাপটের সাথে তিনবার কেন্দ্রীয় এই দায়িত্ব পালন করেন।
কিন্তু কেন্দ্র থেকে ছিটকে পড়ার পর রাজনীতিতে আর সুবিধে করতে পারেননি তিনি। কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান কিংবা জাতীয়/স্থানীয় সরকারের কোন নির্বাচনে তিনি দলের হাইকমান্ডের গুডবুকে নাম লেখাতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত সংসদ সদস্য হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হবে কি-না তা দেখার অপেক্ষায় রয়েছেন সিলেটের সাধারণ মানুষ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
নাম না প্রকাশের শর্তে দলের জেলা শাখার গুরুত্বপূর্ণ এক নেতা বলেন, দলীয় লোকজন বরাবরই দলবান্ধব হিসেবে বিবেচিত হবেন। সুতরাং দলীয় স্বার্থ ও সাংগঠনিক কার্যক্রম বিবেচনায় দলীয় মানুষকেই সর্বাগ্রে অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন বলে অভিমত প্রকাশ করছি।
একই শর্ত দিয়ে দলের জেলা মহিলা সংগঠনের একজন নেত্রী বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কালে সিলেটের সকল মহিলাদের যাদুমন্ত্রের মতো কাছে টেনে নিয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর স্ত্রী সেলিনা মোমেন। কিন্তু নির্বাচন পরবর্তী তিনি কোনো মহিলাদের সাথে আর যোগাযোগ রাখেন নি। সকল প্রোগ্রামে উনার সঙ্গী হিসেবে শুধু একজন মহিলাকেই দেখা যায়। এই বিমাতাসুলভ আচরণের প্রভাব পড়বে এবারের নির্বাচনে।